অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার মালকি তার দুই বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে আজ সকালে এক ঘণ্টা আগে উঠেছে। কারণ আজ তার স্কুলের প্রথম দিন। তবে তার ভাইবোনদের অবশ্যই বাড়িতে থাকতে হবে। কারণ, তার পরিবার কেবল তাকে স্কুলে পাঠানোর সামর্থ্য রাখে। এরকম দেশটির অনেক পরিবারই তাদের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন না। খবর বিবিসির।
স্বাধীনতার পর, এই প্রথম ছয় মাস আগে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে। যদিও দেশটির অনেকাংশে বর্তমানে শান্তি ফিরে এসেছে। তবে, গণ বেকারত্ব এবং নাটকীয় মূল্যবৃদ্ধির সম্পূর্ণ প্রভাব এখন অনেক পরিবারের মধ্যে দৃশ্যমান।
মালকির মা প্রিয়ন্তিকা তার অন্যান্য বাচ্চাদের স্কুলে পড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। যাতে তারা আতশবাজি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। শ্রীলঙ্কায় খাদ্যের দাম রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সর্বকালের সর্বোচ্চ ৯৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এতে করে মালকির পরিবারের সদস্যরা কিছু দিন না খেয়ে কাটাতে হয়।
শ্রীলঙ্কায় স্কুলে এখন আর বিনামূল্যেখাবার দেওয়া হয় না। ইউনিফর্ম এবং পরিবহনের খরচ যোগ করলে, শিক্ষা এখন দেশটির অনেক পরিবারের কাছেই বিলাসবহুল। ঠিক তেমনি প্রিয়ন্তিকার ক্ষেত্রেও। তিনিও তার সব সন্তানের পড়াশুনার ভার বহর করাতে পারছেন না।
তিনি বলেন, যদি তারা স্কুলে ফিরে যেতে চায় তার জন্য প্রতিদিন প্রায় ৪০০ টাকা (দেশটির মুদ্রায়) প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই সব বাচ্চা প্রতিদিন স্কুলে যেত। এখন তাদের পাঠানোর টাকা আমার কাছে নেই।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালকি স্কুলে যেতে পারে কারণ তার জুতা এবং ইউনিফর্ম এখনও উপযুক্ত। কিন্তু তার ছোট বোন দুলাঞ্জলি বিছানায় শুয়ে কাঁদছে, কারণ সে স্কুলে যেতে পারছে না ।
এদিকে ইউনিসেফ বলেছে, সামনের মাসগুলিতে দেশটির মানুষের জন্য খাবার কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে উঠবে, চালের মতো মৌলিক পণ্যের মূল্যস্ফীতি পরিবারগুলিকে পঙ্গু করে ফেলছে। এটা প্রত্যাশিত যে, দেশটিতে আরও বেশি শিশুর ক্লাসে যাওয়া বন্ধ হতে পারে।
Leave a Reply