October 2, 2025, 10:58 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সংবাদিকদের সাথে বিএনপির প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার কাজলের মতবিনিময় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে দেশে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না : অর্থ উপদেষ্টা গাজা অভিমুখি জাহাজ ‘কনসায়েন্স’ থেকে বাংলাদেশী আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বার্তা শাপলার পরিবর্তে এনসিপিকে থালা-খাট-বেগুনসহ ৫০ প্রতীকের অপশন দিলো ইসি গাইবান্ধায় এক হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের টিন খুলে নিল পাষন্ড পাওনাদার ১২০ টাকা খরচ করে পুলিশে চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০ তরুণ টেকনাফের গহীন পাহাড়ে পাচারের জন্য আটকে রাখা ২১ জনকে উদ্ধার চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে বাসচাপায় শিশুসহ দুইজন নিহত গাজাগামী ত্রাণবহরে বাধা দেওয়ায় ইসরাইলি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করলো কলম্বিয়া ইসরাইলি অবরোধ উপেক্ষা করে গাজা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে মানবিক ত্রাণ বহনকারী নৌবহর ফ্লোটিলা
এইমাত্রপাওয়াঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সংবাদিকের সাথে বিএনপির প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার কাজলের মতবিনিময়

সর্বনাশা গড়াই কেড়ে নিয়েছে ঝিনাইদহের পাঁচ‘শ পরিবার ভিটেমাটি

এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, চোখে-মুখে উদ্বেগের ছাপ। কখন যেন সর্বনাশা গড়াই কেড়ে নেয় শেষ সম্বল ভিটেমাটি। তাদের অনেকে হারিয়েছেন ফসলি জমি। এখন অন্যের জমিতে কাজ করে চলে সংসার।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড়ুরিয়া গ্রাম। মধ্যপাড়ায় প্রবেশ করতেই গড়াই নদীপারে বসে থাকতে দেখা যায় ষাটোর্ধ্ব কয়েকজন মানুষকে।

তাদের মধ্যে একজন জাহাঙ্গীর মন্ডল। তিনি বলছিলেন, ‘আমার ১০ বিঘা ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। ভাঙনের যে অবস্থা, তাতে মনে হয় ভিটেবাড়িও এ বছর ঠেকাতে পারব না।’ সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জাহাঙ্গীরের মতো ভাঙন আতঙ্ক পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে। তারা জানান, গত জুন মাসের শুরুর দিকে ভাঙন শুরু হয়। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা তীব্র হয়েছে। ধান,পাট,কলা, হলুদসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের জমি বিলীন হচ্ছে নদীতে। বাদ যাচ্ছে না গাছপালা,বাগান,ঘরবাড়িও।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফেলা জিও ব্যাগ স্রোতের তীব্রতার কারণে কাজে আসছে না। অনেক বাসাবাড়িও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাঙনে অনেকে সহায়সম্বল হারিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন। পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় গড়াই নদীর বহমান অংশ ২০ কিলোমিটার। এর মধ্যে বড়ুরিয়া গ্রামে ১ দশমিক ৫০, কৃষ্ণনগরে ১, মাদলা এলাকায় ১ দশমিক ৫০ ও মাঝদিয়াতে ১ কিলোমিটার এবং গোসাইডাঙ্গা ও লাঙ্গলবাঁধ এলাকায় ৫০০ মিটারসহ ছয় কিলোমিটার ভাঙনপ্রবণ।
ভাঙনের তীব্রতা বেশি বড়ুরিয়ার দেড় কিলোমিটার অংশে। প্রতিবছর গড়ে ৫ মিটার বা ১৫ ফুট করে নদীতে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, আরও বেশি পরিমাণ জমি গিলে খাচ্ছে এই নদী। ১৯৬২ সালের পর থেকে ভাঙন হলেও গত ২০ বছরে তীব্রতা বেড়েছে। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী, ১ হাজার ৪৫৭ বিঘা ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং ১৪৩ বিঘা সরকারি খাসজমি বড়ুরিয়া মৌজায়। এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৫০ বিঘায়। গ্রামে অন্তত ৭০০ পরিবার ছিল। তাদের অনেকে অন্যত্র বসতি স্থাপন করেছেন। ৫০০ পরিবার গ্রাম ছাড়ায় এখন ২০০-এর মতো আছে।

গ্রামের মোমেনা খাতুন এক ছেলে নিয়ে থাকেন গড়াইপারে বাবার জমিতে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ছিল নদীর ওপারে। ভাঙার কারণে এখন এপাশে চলে এসেছি। এটিও এ বছর থাকবে কিনা জানি না। অন্য কোথাও বাড়ি করব, সে জমিও নেই। গ্রামের মানুষের কষ্টের কথা ভেবে সরকার যেন ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়।’

নদীর ওপারে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার গণেশপুর আদর্শ গ্রাম। এপারের জমি ভেঙে ওপাশে জেগে ওঠা চরের জমিতে কুষ্টিয়ার মানুষ যেতে দেয় না বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। চর উদ্ধারেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৯ ও ২০২১ সালে প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। চলতি বছর ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে ১৭৫ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ১ জুন শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। ১৩ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে চার ধাপে।

বড়ুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুন্দরী খাতুনের পরিবারের প্রায় ৩০ বিঘা জমি ছিল। এখন তা কমে ১০ বিঘায় দাঁড়িয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা মনি মোল্লা বলেন, প্রায় ১৪০০ বিঘা জমি চলে গেছে। বাবুল মোল্লার কথায়, এপাশে ভেঙে ওপারে চর জেগেছে। সেগুলো খোকসার মানুষের দখলে। প্রশাসনও এ জমি উদ্ধারে উদ্যোগ নেয় না।

বর্ষার শুরুতে ভাঙন রোধে অস্থায়ী সমীক্ষার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস। তিনি বলেন, আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত কয়েকটি ধাপে কাজ চলবে। এরপর স্থায়ী কাজ করা হবে বরাদ্দের ভিত্তিতে। নদীর এ অংশ অবতল হওয়ায় পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় পলি সরে ভাঙন দেখা দেয়।

শৈলকুপার ইউএনও স্নিগ্ধা দাস জানান, গড়াই নদীর সীমানা নির্ধারণে জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়ার দিকে জেগে ওঠা চরের জমি উদ্ধার এবং সেখানে যেন শৈলকুপার মানুষ চাষাবাদ করেতে পারে, সে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের বৈঠকের পর জরিপ করে সীমানা নির্ধারণে জরিপ অধিদপ্তরে পত্র পাঠানো হয়েছে। বিধিসম্মতভাবে উদ্যোগ নিলে নদীপারের সমস্যা থাকবে না।

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page