অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সোমালিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আত্মঘোষিত অঞ্চল সোমালিল্যান্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) অধিকাংশ সদস্য দেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে। ব্যতিক্রম ছিল শুধু যুক্তরাষ্ট্র, তারা ইসরায়েলকে নিন্দা না করলেও জানায়, সোমালিল্যান্ড প্রশ্নে তাদের নিজস্ব অবস্থান অপরিবর্তিত।
গত সপ্তাহে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেয় ইসরায়েল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদ এই জরুরি বৈঠক ডাকে।
বৈঠকে সোমালিয়ার রাষ্ট্রদূত আবু বকর দাহির ওসমান ইসরায়েলের পদক্ষেপকে আগ্রাসন আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সোমালিল্যান্ডে পাঠানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আইন ও নৈতিকতার প্রতি এই অবজ্ঞা এখনই বন্ধ করতে হবে।
আরব লিগের প্রতিনিধি মাজেদ আবদেলফাত্তাহ আবদেল আজিজ বলেন, এই স্বীকৃতি অবৈধ এবং ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার বা সোমালিয়ার উত্তরে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের যে কোনো উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেন তারা।
পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাও ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে। পাকিস্তানের উপরাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ উসমান ইকবাল জাদুন বলেন, এ স্বীকৃতি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে সোমালিল্যান্ডে পাঠানোর আশঙ্কা আরও বাড়ালো।
চীন ও যুক্তরাজ্যসহ পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোও সোমালিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতার পক্ষে অবস্থান নেয়। চীনা প্রতিনিধি সান লেই বলেন, অন্য দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদকে কোনো রাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা উচিত নয়।
অন্যদিকে মার্কিন প্রতিনিধি ট্যামি ব্রুস বলেন, ইসরায়েলের যেকোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অধিকার আছে এবং ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির উদাহরণ টেনে নিরাপত্তা পরিষদের ‘দ্বিমুখী আচরণ’ হওয়ার অভিযোগ করেন। তবে স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল জবো গার এ তুলনা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ফিলিস্তিন দখলকৃত ভূখণ্ড, কিন্তু সোমালিল্যান্ড জাতিসংঘের এক সদস্যরাষ্ট্রের অংশ।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে গৃহযুদ্ধের পর সোমালিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে সোমালিল্যান্ড। দীর্ঘ তিন দশক কোনো দেশের স্বীকৃতি না পেলেও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বিশ্বমহলে।