অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্ত্রীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষককে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঐ শিক্ষকের নাম সহকারী অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সরকার। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি।
তার পিতার নাম সুশান্ত কুমার সাহা। তিনি পাবনা জেলার চড়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে ড. সঞ্জয় কুমারের স্ত্রী জয়া সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নাটোর জর্জ কোর্টের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ড. সঞ্জয় কুমারের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী আনিসুর রহমান সূত্রে জেল হাজতে পাঠানোর বিষয়টি জানা যায়।
জানা যায়, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা ১১(গ) ও ধারা ৩০ এ ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের স্ত্রী জয়া সাহা এ মামলা করেন। মামলার ফলে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারকে আটক করে পুলিশ। পরে পারিবারিকভাবে বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য আদালতের নিকট অস্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তিনি। পরে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে ড. সঞ্জয় কুমার বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। ফলে আদালত তার স্থায়ী জামিন নামঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলায় সঞ্জয়ের বাবা সুসান্ত সরকার, মা ঊষা রানী সরকার ও ভাই দুর্জয় কুমার সরকারকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। বিয়েতে জয়ার বাবা যৌতুক হিসেবে নগদ ২৫ লক্ষ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্নিচার দেয়। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য শুরু হয়। গত বছরের জুন মাসে স্ত্রীকে জোরপূর্ব শ্বশুরবাড়ি রেখে আসে সঞ্জয়। তারপর থেকে উভয়েই একবছর আলাদা থাকছেন। এই দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষের আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, মামলাটির জুডিশিয়াল তদন্ত হয়। তদন্ত শেষে ম্যাজিস্ট্রেট বাদীর (জয়া সাহা) রিপোর্ট দেয়। পরে আসামীর (সঞ্জয় সরকার) বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হলে আসামী গত একমাস আগে আপোষের কথা বলে জামিন নেয়। কিন্তু আপোষ না করার কারণে আজ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আলেক শেখ বলেন, সঞ্জয় সরকার আজকে জামিন চেয়েছিলেন। উনার নামে ওনার স্ত্রী জয়া সাহা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছিলেন। আজ সেই মামলায় জামিন নিতে আসলে তাকে জজ সাহেব জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
সঞ্জয় কুমারের আইনজীবী শাহজাহান কবীর বলেন, আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আশা করি তিনি জামিন পাবেন। আমরা জামিনের জন্য আগামী রবিবার আবারো চেষ্টা করবো।
এ বিষয়ে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের স্ত্রী জয়া সাহা বলেন, নতুন করে এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই। আমার ও আমার সন্তানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের ফলেই তার জেল হয়েছে।
Leave a Reply