অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইহুদিবাদী ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠীর টিভি চ্যানেল-১২ লেবাননের হিজবুল্লাহর ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, নেতানিয়াহুর দুর্বল এবং ব্যর্থ মন্ত্রিসভা ইসরাইলের উত্তর ভুলে গেছে।
অধিকৃত অঞ্চলের উত্তরে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর মূল অবস্থানে হিজবুল্লাহর হামলা : আল-মানার নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, লেবাননের হিজবুল্লাহ ইহুদিবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় এবং ফিরিস্তিনি জনগণকে সমর্থন করার লক্ষ্যে ৬টি বড় আকারের অভিযানে অধিকৃত অঞ্চলের উত্তরে শেতুলা, করিয়াত শেমোনা, বেইট হিলেল ইবরিম, আল-মারাজ, উল-আলা, মিরন, আল-মানারা, জাল- এর অবৈধ বসতিগুলোতে ইহুদি সৈন্যদের অবস্থান কেন্দ্রগুলো ড্রোন দিয়ে ধ্বংস করেছে। এ সময় কিছু ইহুদিবাদী আহত হয়।
ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার রেকর্ড : ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর রেডিও স্বীকার করেছে, গত আগস্ট মাসে লেবানন থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরে মোট ১০৩৭টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্ট মাসে হিজবুল্লাহ কর্তৃক অধিকৃত অঞ্চলের দিকে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি রকেট ছোড়া হয় যা গাজার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক রকেট নিক্ষেপ করেছিল।
ইহুদিবাদী মিডিয়া লেবাননের হিজবুল্লাহর শক্তির স্বীকৃতি দিয়েছে : ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর চ্যানেল-১২ লেবাননের হিজবুল্লাহর ব্যাপক হামলার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে যে দুর্বল এবং ব্যর্থ ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা অধিকৃত অঞ্চলের উত্তর ভুলে গেছে এবং কেবল ফিলাডেলফিয়া অক্ষের কথা বলছে! উত্তরে ইসরাইলের নীতি একটি নিয়ন্ত্রণ নীতি নয়, এবং এই নীতির মাধ্যমে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা লেবাননের হিজবুল্লাহকে এই অঞ্চলগুলোতে যা ইচ্ছা তা করার অনুমতি দিচ্ছে।
ইহুদিবাদী প্রতিবেদন: বসতি স্থাপনকারীরা ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছেন : ইসরাইলের চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদক হেদার গিটিস বলেছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনী আক্রমণ করছে কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আমরা যা দেখছি লেবানন থেকে হামলা বন্ধ হচ্ছে না। লেবাননের হিজবুল্লাহর হামলার ছত্রছায়ায় কীভাবে তাদের জীবন এ ভাবে চালিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে কয়েক লাখ ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীদের প্রশ্ন রয়েছে।তারা প্রতিদিন সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তারা এ বিষয়ে খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন।
হিজবুল্লাহর কৌশলের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদীদের ব্যর্থতার স্বীকৃতি : ইসরাইলি সেনাবাহিনীর স্থল বাহিনীর সাবেক কমান্ডার গাই জুর, ইহুদিবাদী চ্যানেল কানের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে লেবাননের হিজবুল্লাহ হামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ইসরাইলের একমাত্র কৌশল হল নেতানিয়াহুকে তার ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। উত্তরে (অধিকৃত অঞ্চল) যুদ্ধে যাওয়া ঠিক নয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অপারেশন বিভাগের সাবেক প্রধান আরও বলেছেন, ইসরাইলের একটি পরিষ্কার কৌশল নেই এবং সমস্যাটি হল আমরা একটি জাহাজের মতো যার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেছে এবং আমরা কোনো বিশেষ লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছাড়াই স্রোতের সাথে চলছি।
পশ্চিমা দেশগুলির পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে অরক্ষিত এবং নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে একটি নতুন গণহত্যা শুরু করেছে। হামলার আগে ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেছিলে গত ১১ মাসের যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তা অর্জন করতে পারেনি। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী গাজায় ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর হামলায় ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯৪ হাজার জনের বেশি আহত হয়েছে। অন্যদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ এবং লেবানন, ইরাক, ইয়েমেন এবং সিরিয়ার অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে যে তারা দখলদার সরকার থেকে এই অপরাধযজ্ঞের মাশুল আদায় করবে।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার নীল নকশায় তৈরি হয় ইসরাইল এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদিদের অভিবাসনের মাধ্যমে এই অবৈধ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৯৪৮ সালে এর অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়ে এবং তাদের ভূমি জবর দখলের জন্য ফিলিস্তিনিদের ওপর বিভিন্ন গণহত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
Leave a Reply