অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আরব বিশ্বের একজন বিশ্লেষক শহীদ সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ এবং সাইয়্যেদ হাশেম সাফি আল-দীনের জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিকে হিজবুল্লাহকে দুর্বল করার আশা করা ব্যক্তিদের ভ্রান্ত ধারণার অবসানের ইঙ্গিত বলে মনে করেন।
আরব বিশ্বের বিশ্লেষক এবং ট্রান্স-রিজিওনাল সংবাদপত্র রাই আল-ইয়াওমের প্রধান সম্পাদক “আব্দুলবারি আতওয়ান”, তার একটি নতুন সম্পাদকীয়তে শহীদ সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ এবং সাইয়্যেদ হাশেম সাফি আল-দীনের জাঁকজমকপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক জানাজা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে লিখেছেন: “বৈরুতে লক্ষ লক্ষ মানুষের এই মানবিক ঝড় সমস্ত আরব বা ইসরাইলি কণ্ঠস্বরের প্রতি এক বিধ্বংসি প্রতিক্রিয়া যারা বলেছিল যে হিজবুল্লাহর নেতৃত্বে লেবাননে ইসলামী প্রতিরোধ শেষ হয়ে গেছে এবং আর ফিরে আসবে না।”
আতওয়ান আরও বলেন: “শহীদ সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে অনেক অর্জন ও সাফল্য রেখে গেছেন যা গণনা করা যাবে না।” বিশেষ করে ২০০০ সালে দক্ষিণ লেবাননকে ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার যুদ্ধে হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব সংঘটিত প্রতিরোধ যুদ্ধ যা ইসরাইলকে লেবানন থেকে অপমানজনকভাবে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য করেছিল। এ ছাড়া ২০০৬ সালের জুলাইয়ের যুদ্ধে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পরাজয়ের ঘটনায় মেরকাভা ট্যাঙ্ক এবং অপরাজেয় বলে দাবিদার ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দম্ভ ভেঙে দিয়েছিল।
সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর শহীদ মহান ব্যক্তিদের জানাজায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি ছিল আন্দোলনের শক্তির পুনরুজ্জীবন এবং লেবাননসহ সমগ্র আরব অঞ্চলে রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী বার্তা। এছাড়াও, যখন লেবানন, ফিলিস্তিন, ইরাক, ইয়েমেন, আলজেরিয়া ও ইরানের পতাকার পাশাপাশি হিজবুল্লাহর হলুদ পতাকা এবং বৈরুতে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের শহীদদের নেতা এবং তার সঙ্গীদের ছবি উত্তোলন করা হয়, তখন এটি গাজাকে সমর্থনকারী প্রতিরোধ শক্তিগুলোর মধ্যকার ঐক্য প্রমাণ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
আতওয়ান উল্লেখ করেছেন: যে ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ শহীদ হয়েছেন, তিনি সমস্ত প্রলোভন প্রত্যাখ্যান এবং ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছেন এবং প্রতিরোধ ফ্রন্টের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য মার্কিন-ইসরাইলি এবং আরব চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি ফিলিস্তিনি জাতিসহ ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনের সমস্ত সন্তান এবং লেবাননের সম্মানিত জনগণের নেতৃত্ব দিয়ে সংগ্রামের ময়দানে সবসময় উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল বারী আতওয়ান বলেন: “ওয়াশিংটন এবং তেল আবিবে ভয়ে মহান প্রতিরোধ নেতাদের জানাজায় আরব সরকার প্রধানদের অনুপস্থিতি থেকে আরব সরকারগুলোর ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে এবং এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, আরব সরকারগুলোর কাছে মুসিলম উম্মাহর প্রতিরোধ, মর্যাদা এবং মূল্যবোধের কোনো গুরুত্ব নেই।” অবশ্য, যারা গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের গণহত্যায় কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে তাদের কাছ থেকে আমরা প্রতিরোধের শহীদদের সম্মান আশা করতে পারি না।
এই সম্পাদকীয়তে লেখক আরো বলেছেন, লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন আরো শক্তি নিয়ে মাঠে ফিরে আসছে।
Leave a Reply