অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাপান বুধবার সতর্ক করে বলেছে, ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ টাইফুন ‘সানসান’ কিউশুর প্রধান দক্ষিণ দ্বীপে আঘাত হানতে যাচ্ছে। এর প্রভাবে ওই অঞ্চলে অস্বাভাবিক তীব্র ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে আইচি অঞ্চলে সৃষ্ট ভূমিধসে এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।
ঘন্টায় ২৫২ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া এই টাইফুনের কারণে বৃহৎ অটো কোম্পানি টয়োটা তাদের ১৪ ফ্যাক্টরির সবকটিতেই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
জাপানের চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিমাসা হায়াশি সাংবাদিকদের বলেছেন, টাইফুন ‘সানসান’ কিউশুর দক্ষিণাঞ্চলে বৃহস্পতিবার প্রবল শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এই মুখপাত্র বলেন, আশংকা করা হচ্ছে টাইফুনের কারণে যে প্রবল বাতাস, উচ্চ ঢেউ এবং তীব্র ঝড় বয়ে যাবে তা এর আগে কেউ কখনো দেখেনি।
এদিকে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আইচি অঞ্চলের গামাগোরি শহরে ভূমিধসে একটি বাড়ি ভেসে গেলে পাঁচজন নিখোঁজ হয়। রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়ে দ’ুজনকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।
কিউশুতে এক কোটি ২৫ লাখ লোকের বসবাস। আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কিউশুবাসী ৫শ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রত্যক্ষ করবে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬শ’ মিলিমিটার।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে এ পর্যন্ত শিজুওকার হনশু থেকে আট লাখ ১০ হাজার এবং কিউশুর কাগোশিমা থেকে ৫৬ লোককে অন্যত্র চলে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া সংস্থা কাগোশিমায় ভারি বর্ষণের সতর্কতা জারি করতে যাচ্ছে।
সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তীব্র ঝড় শুরুর আগেই আমাদের সর্বোচ্চ সতকর্তা অবলম্বন করা দরকার।
তিনি লোকজনকে অন্যত্র সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ছেন।
এদিকে জাপান এয়ারলাইন্স বুধবার ও বৃহস্পতিবারের জন্যে ১৭২টি অভ্যন্তরীণ ও ছয়টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। এছাড়া এএনএ নিক্সড বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের জন্যে ২১৯টি অভ্যন্তরীণ ও চারটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এতে বিপাকে পড়তে যাচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার লোক।
এছাড়া টাইফুনের কারণে দেশটির ট্রেন চলাচলও বিঘিœত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জাপানে চলতি মাসে টাইফুন অ্যামপিলের কারণে কয়েকশ’ বিমান ও ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ঝড়টির কারণে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও এটি টোকিওতে সরাসরি আঘাত না করে অঞ্চলটির পাশ দিয়ে অতিক্রম করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়ে গেছে।
এর আগে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় মারিয়ার প্রভাবে জাপানের উত্তরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়।
গত মাসে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলে ঝড়গুলো উপকূল রেখার কাছাকাছি সৃষ্টি হয়ে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করে স্থলভাগে আঘাত হানছে।
Leave a Reply