May 2, 2025, 6:38 pm
শিরোনামঃ
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

ঝিনাইদহের মহেশপুরের কাজিরবেড় ইউনিয়ন ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত

স্টাফ রিপোর্টার : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেষা কাজিরবেড় ইউনিয়নটি। এ ইউনিয়নের মানুষগুলো রীতিমতো ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। এ ইউনিয়নের ভুসি অফিসে রীতিমতো দর কষাকষির মাধ্যমে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। এখানে কিছু লালিত দালাল ও বিনা বেতনের কর্মচারী রয়েছে। তাদের মাধ্যমে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করা হয়ে থাকে।
কাজীরবেড় ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তার অফিসের কর্মচারী মিজানুর রহমান ও রনির মাধ্যমে সেবা গ্রহণকারীদেরকে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখিয়ে ও অফিস খরচের নামে জমা-খারিজ, মিসকেস ও প্রকৃত ভূমি করের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করে থাকে। ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাহিদা মতো টাকা দিতে রাজি না হলে সেবা গ্রহণকারীদের বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানিও করা হয়। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম প্রতিদিন অফিসে আসে বেলা ১২টার দিকে। তার সাথে দেখা করতে হলে সেবা গ্রহীতাদের বেলা ১২টার পর আসতে হয়। ফলে সেবাগ্রহীতাদের চরম ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে।
ইউনিয় ভূমি অফিসে ভূমি কর আদায় করা, নামজারির আবেদন তদন্তের দায়িত্ব পালন করা ও মিস কেসের রিপোর্ট দেওয়ার কাজ করে থাকেন অফিসের কর্মচারী মিজানুর রহমান ও রনি।
অনেক নামজারির আবেদনকারী জানান, নামজারির আবেদন ভূমি অফিসে তদন্তের জন্য আসলে অফিস থেকে কল দিয়ে অফিসে ডেকে এনে বিভিন্ন সমস্যা আছে বলে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। সরকারিভাবে নামজারির জন্য ২০ টাকার কোর্ট ফি, ৫০ টাকা নোটিশ জারি ফি, খতিয়ান ফি ১শ’ টাকা ও রেকর্ড সংশোধন ফি ১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১হাজার ১শ’ ৭০ টাকা খরচ হলেও এখানে নামজারি বাবদ স্বাভাবিকভাবে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। আবার ক্ষেত্র বিশেষ সামান্য ভুলক্রুটি থাকলে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকাও নেওয়া হচ্ছে বলে অনেকেই জানান।
সামন্তা দাখিল মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ছয়ঘোরিয়া গ্রামের মৃত মসলেম আলীর ছেলে বিশারত হোসেন বলেন, আমার পৈত্রিক সুত্রের জমি খারিজ করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালামের কাছে গেলে তিনি আমার কাগজপত্র দেখে আমার কাছে ২৪ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তাকে সেখানে ২৩ হাজার টাকা দিয়েছি এবং বাকি এক হাজার টাকা কাগজ তৈরি হওয়ার পর দেয়ার কথা ছিল। কাগজ তৈরি করে নায়েব সাহেব তার অফিসের কর্মচারী মিজানুরের দিয়ে কাগজ পাঠিয়েছিলেন আমার কাছে। বাকি ১ হাজার টাকা না থাকায় তা নিতে পারেনি আমি। পরে আমি জানতে পেরেছি জমি খারিজ করতে মাত্র ১ হাজার ১শ’ ৭০ টাকা খরচ হয়। তারা আমার মতো শত শত মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
সামন্তা ভগবতিতলা গ্রামের বাসিন্দা নজের আলী বলেন, জমি নামজারি করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে নায়েব সাহেব কাগজপত্র দেখে আমারা কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দরকাষাকশি করে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়ে নাম জারির কাজ করেছি।
কাজীরবেড় ইউনিয়নের জীন্নাহনগর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিলন জানান, আমার পিতার নামে ৫০ শতক জমির ভূমি কর পরিশোধের জন্য ভূমি অফিসে গেলে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম আমার কাছে ২৮ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি খাজনা না দিয়ে চলে আসি। ভূমি অফিসে একাধিক বার যেয়েও কোন সুরাহা করা যায়নি।
কাজীরবেড় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী মিজানুর রহমান বলেন, অমি অনেক বছর যাবৎ এই অফিসে আছি। সে কারনে মানুষ আমার কাছে বেশি আসে। আমি তখন নায়েব সাহেবের কাছে গিয়ে কাগজপত্র দেখানোর পর টাকা পয়সার বিষয়টি আসে। আমরা জমা-খারিজ করার জন্য ৪ হাজার, ওটিপি দেওয়া জন্য ৩ থেকে ৫শ’ ও অনলাইন করার জন্য ২ থেকে ৫শ’ টাকা নিয়ে থাকি। মিস কেসের জন্য নায়েব সাহেব ৫শ’ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকা নিয়ে থাকেন।
কাজীরবেড় ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সাথে তার মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অফিসের নিয়মেই টাকা নেওয়া হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ প্রমানিত হলে অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

আজকের বাংলা তারিখ

May ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Apr    
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page