অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ঘোষণার পরই লালমনিরহাটে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত জেলা কমিটির তালিকা শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে প্রকাশিত হলে রাতেই সেই পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন অনেকেই।
যারা পদত্যাগ করেছেন তারা হলেন: যুগ্ম সদস্য সচিব কামরুজ্জামান সুমন, তানভীরুল ইসলাম, সায়েম আদনান অরকু, জোনায়েদ হোসেন আবির, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মাহমুদুল হাসান আবীর, হাসান আল মোহসিন, রবিউল ইসলাম রানা, রুবায়েদ খন্দকার প্রান্ত। এ কয়েকজনের স্ট্যাটাস থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে পদত্যাগের সংখ্যা প্রায় ১৮/২০ জন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটে। ছাত্রদের সেই আন্দোলনের দেশব্যাপী কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত ১১০ সদস্য বিশিষ্ট লালমনিরহাট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে শামস্ বিন শাহারিয়ার নাঈমকে আহবায়ক, হামিদুর রহমানকে সদস্য সচিব ও সবুজ মিয়াকে মুখ্য সংগঠক করা হয়।
শনিবার বিকেলে জেলা কমিটির তালিকা প্রকাশিত হলে রাতেই অনেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও লাইভে বক্তব্য রাখেন। যা ফেসবুকে নানান সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
পদত্যাগকারীদের অনেকেই দাবি করেছেন, যারা আন্দোলনে কোন ভূমিকা রাখেনি তাদেরকে তদবিরের মাধ্যমে নেতা বানানো হয়েছে। অপর দিকে অনেকেই আন্দোলনের শুরু থেকে কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেও কোন সম্মানজনক পদ দেয়া হয়নি। বৈষম্যবিরোধী কমিটিও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন অনেকেই। তাই তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন। এ ক্ষেত্রে স্ট্যাটাসের শেষে প্রায় নেতা লিখেছেন, ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
সদ্য ঘোষিত লালমনিরহাট জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করা কামরুজ্জামান সুমন বলেছেন, যে কমিটিতে ত্যাগীদের নাম নেই। সেই কমিটিতে নিজের নাম দেখতে চাই না। তাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।
আর এক যুগ্ম সদস্য সচিব তানভীরুল ইসলাম বলেন, অগণিত সহযোদ্ধাদের কমিটিতে জায়গা দেয়া হয়নি, অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। সে কমিটিতে থাকতে চাই না। তাই পদত্যাগ করেছি। স্বদেশ প্রেমে পদ পদবির প্রয়োজন হয় না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমনিরহাট জেলা কমিটির সদস্য সচিব হামিদুর রহমান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদ সংখ্যা কম এবং তা সবাইকে দেয়া সম্ভব না। কেন্দ্রীয় কমিটি সমাবেশ করে গেছেন। তারা যাকে যেখানে উপযুক্ত মনে করেছেন। তাকে সেই পদ দিয়েছেন। আমরা কোন তালিকা কেন্দ্রে পাঠাইনি। লিখিত কোন পদত্যাগ পত্র না দিলেও নিজ নিজ ফেসবুকে প্রায় ১৭/১৮ জন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জেনেছি। বিষয়টি কেন্দ্রকে অবগত করা হয়েছে। ১১০ জনের কমিটিতে ১৭/১৮ জনের অনুপস্থিতিতে তেমন কোন সমস্যাও হবে না। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ বছর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। পরে সারা দেশ কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
Leave a Reply