অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন সাত বিশিষ্টজন। আজ (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মনোনীতরা হলেন—বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
এছাড়া একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের জেড-ফোর্সের কমান্ডার, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম জিয়াউর রহমানকে ২০০৩ সালে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) বহাল রাখা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৬ সালে বীর উত্তম জিয়াউর রহমানকে দেওয়া এ পুরস্কার বাতিল করেছিল।
১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে থাকা জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশ-জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা পায়।
১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত সময়ে তার সামরিক শাসনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। ২০০৫ সালে হাই কোর্টের এক রায়ে ওই সংশোধনী অবৈধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালের অগাস্টে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার জিয়ার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে জাতীয় জাদুঘর থেকে তার পদকটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার কথা জানিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ের পটভূমিতে ২০১৬ সালে সরকার জিয়াউর রহমানের পুরস্কার বাতিল করে, ওই রায়ে পুরস্কার বাতিলের কোনো নির্দেশনা না থাকায় মুক্তিযুদ্ধে তার ‘অসাধারণ অবদান বিবেচনায়’ স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকার রহিত করেছে।
সিদ্ধান্তে অটল বদরুদ্দীন উমর : এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম আসার খবরে বদরুদ্দীন উমর গত বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন, এ পুরস্কার নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের পাঠানো এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেছিলেন, “১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলির কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এই প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে আমি এটা জানিয়ে দিচ্ছি।”
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, ৩ লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।