ফারুক আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি : গ্রাম আদালত অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে, সঠিক বিচার পেতে চলো যাই গ্রাম আদালতে এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার ১৯ মে সকাল ৯ টার সময় মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে মাগুরা সদর উপজেলা প্রশাসন এর আয়োজনে ও বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর সহযোগিতায় ৬ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।
গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হাসিবুল হাসান এবং সঞ্চালনায় ও উপস্থাপনায় বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) উপজেলা সমন্বকারী শিউলী আক্তার।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মোঃ জেনারুল ইসলাম, মাগুরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এসিল্যান্ড দেওয়ান আসিফ পেলে, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিন।
আজ অংশগ্রহণকারীরা হলো প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদের ৬০ জন সদস্যবৃন্দ।
গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। গ্রাম আদালত অনধিক ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই। গ্রাম আদালতে ফৌজদারী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মুল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও অন্যায় আটক, ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া, কোন নারীর শালীনতাকে অমর্যাদা বা অপমানের উদ্দেশ্য কথা বলা, অঙ্গভঙ্গি করা বা অন্য কোনো কাজ করা এবং দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি হলো পাওনা টাকা আদায় সংক্রান্ত, স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায় সংক্রান্ত, কোন অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় ইত্যাদি। এছাড়াও দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুব সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পায়।
গ্রাম আদালত ধর্ষণ, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, বহুবিবাহ, তালাক, অভিভাবকত্ব, দেনমোহর, দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতন, কোনা ঘটনায় রক্তপাত ঘটে থাকলে, স্থাবর সম্পত্তির স্বত্বাধিকার সংক্রান্ত, ৩ লাখ টাকার অধিক মূল্যমানের যে কোনো বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পারে না।