July 1, 2025, 4:03 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর যাদবপুর সড়কের দুই ধারে তালের চারা রোপন ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ বাংলদেশীকে হস্তান্তর করলো ভারতীয় বিএসএফ স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখামাত্রই বিনাশের প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী বাজেট বরাদ্দে কার্পণ্য নয় : অর্থ উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু কুষ্টিয়ায় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ শরীয়তপুরে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা শুরু সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করল পাকিস্তান
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

বিজেপির রাজনৈতিক সমর্থনে ভারতে মুসলিমবিরোধী চলচ্চিত্র 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গত কয়েক বছরে ভারতীয় চলচ্চিত্রে এক নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থনে কিছু সিনেমা তৈরি হচ্ছে। এসব সিনেমার উদ্দেশ্য হলো- মুসলমানদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে সমাজে বিভাজন ও ঘৃণার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

সম্প্রতি “কেরালা স্টোরি”, “দ্য কাশ্মীর ফাইলস” এবং “হরিয়ানা ৭২”-এর মতো চলচ্চিত্রগুলো তাদের মুসলিম-বিরোধী বর্ণনার জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। এখনও মুক্তি না পাওয়া “হাম বারাহ” (আমরা বারো জন) নামের একটি নতুন চলচ্চিত্র আরেকটি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবং ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দার শিকার হয়েছে।

চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু বিতর্ক : “হাম বারাহ” চলচ্চিত্রটি মানসুর আলী খান সঞ্জরি (অনুপম খার অভিনয়ে) নামের একজন মুসলিম ব্যক্তির গল্প বলে, যার দু’জন স্ত্রী থেকে ১১টি সন্তান রয়েছে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী এখন ১২তম সন্তানের জন্য গর্ভবতী। চলচ্চিত্রটি জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ধর্মীয় শিক্ষা এবং নারী অধিকারের উপর ফোকাস করে, যা সমালোচকদের মতে, মুসলিমদেরকে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী হিসেবে চিত্রিত করে। মানসুর আলী খানের চরিত্রটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে, তিনি ভুলভাবে কুরআন, হাদিস ও শরিয়তের উদ্ধৃতি দিয়ে তার সন্তানদের শিক্ষা এবং স্ত্রীদের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করেন।

চলচ্চিত্রের একটি বিতর্কিত দৃশ্যে খান সাহেব গর্বিতভাবে বলেন, “আমরা দু’জন, আমাদের বাচ্চা বারো জন”, যা ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রচলিত একটি ঘৃণাত্মক প্রচারণার প্রতিফলন।

আরেকটি দৃশ্যে, একজন বোরকা পরিহিতা নারী প্রশ্ন করেন, “কেন শুধু নারীরাই জাহান্নামে যাবে?”— যা ইসলাম সম্পর্কে অপমানজনক ধারণা দেয়।

জনপ্রতিক্রিয়া মুসলিম সংগঠনের প্রতিবাদ : চলচ্চিত্রটি মুক্তির আগেই ৩০ মে এর ট্রেলার প্রকাশিত হয়, কিন্তু ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে দ্রুত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। অনেক কর্মী, আলেম ও মুসলিম সংগঠন, যেমন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (AIMPLB), ইন্ডিয়ান মুসলিম মজলিস, রেজা একাডেমি এবং মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী, ড. জাফরুল ইসলাম খান, প্রফেসর আখতারুল ওয়াসি ও প্রফেসর তাহির মাহমুদের মতো ব্যক্তিত্ব এই চলচ্চিত্রটিকে “ইসলাম-বিরোধী”, “প্রোপাগান্ডা” ও “অপমানজনক” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মাওলানা রহমানী জোর দিয়ে বলেন, এই চলচ্চিত্রে কুরআনের আয়াত বিকৃত করা হয়েছে এবং ইসলামে বৈবাহিক সম্পর্কের শিক্ষাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে সূরা বাকারার ২২৩ নং আয়াতটি অপমানজনকভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যা মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

প্রফেসর আখতারুল ওয়াসি সরকারি তথ্য উল্লেখ করে চলচ্চিত্রের মুসলিমদের উচ্চ জন্মহারের দাবিকে খারিজ করেছেন এবং এই চলচ্চিত্রকে “ইসলামোফোবিয়ার” স্পষ্ট উদাহরণ বলে বর্ণনা করেছেন।

চলচ্চিত্রের মূল বার্তা : সিনেমার পটভূমি উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌ শহর। মূল চরিত্র ৬০ বছরের এক কাওয়ালি গায়ক, যার ধর্মীয় ব্যাখ্যা পরিবারে নারীদের দমিয়ে রাখছে। তার মেয়ে ‘আলফিয়া’ তার সৎমায়ের ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থার কারণে গর্ভপাতের জন্য আদালতের অনুমতি চায়। এই প্রক্রিয়ায় পরিবারের পুরুষতান্ত্রিক, ধর্মের অপব্যাখ্যা ও নারীর দুঃখজনক পরিস্থিতি উঠে আসে।

নির্মাতাদের মতে, চলচ্চিত্রটি “ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাখ্যা” দেখানোর কথা, কিন্তু সমালোচকরা মনে করেন এটি স্টিরিওটাইপিক্যালভাবে মুসলিমদেরকে অশিক্ষিত, নারী-বিদ্বেষী এবং শিক্ষা ও উন্নতির বিরোধী হিসেবে চিত্রিত করেছে।

চলচ্চিত্রের শেষে, যখন খান সাহেবের দ্বিতীয় স্ত্রী প্রসবকালে মারা যান, তিনি তার কবরের পাশে স্বীকার করেন যে তিনি কখনই ইসলামের সত্যিকারের শিক্ষা লাভের সুযোগ পাননি।

রাজনীতির সাথে যোগসূত্র অনুরূপ চলচ্চিত্র : সমালোচকরা বলছেন যে, গত কয়েক বছরে ভারতীয় সিনেমায় এই ধারার চলচ্চিত্রগুলো বিজেপির পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ সমর্থনে তৈরি হচ্ছে, যা মুসলিমদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে সমাজে বিভেদ তৈরি করছে। কিছু চলচ্চিত্র কর ছাড়ের সুবিধা পেয়েছে এবং এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রচারিত হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই প্রবণতা “ইতিহাসের পুনর্লিখন” এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপিত ঘৃণা ছড়ানোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

চলচ্চিত্র নিষিদ্ধের দাবি : কয়েকটি আইনি, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (CBFC)-কে চিঠি লিখে চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ একটি বিবৃতিতে বলেছে, এই চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু জনশৃঙ্খলা ও মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতির জন্য হুমকিস্বরূপ। ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার পার্টিও সরকারের কাছে চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়েছে। আইনজীবী প্রফেসর তাহির মাহমুদ ও সাঈদা হামিদ চলচ্চিত্রটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

 

আজকের বাংলা তারিখ

July ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Jun    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page