October 22, 2025, 7:28 am
শিরোনামঃ
আওয়ামী লীগের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে ৬ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের চিঠি প্রেরণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে সুপ্রিমকোর্টে চূড়ান্ত আপিল শুনানি চলছে আসন্ন নির্বাচনে এআই’ এর অপব্যবহার ঠেকাতে প্রস্তুত ইসি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার আন্দোলনরত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া হচ্ছে ১৫ শতাংশ ; দেওয়া হবে দুই ধাপে আরও এক-দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার : ইকবাল করিম ভূঁইয়া আদালতের নির্দেশে সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর স্ত্রীকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের যশোরের অভয়নগরে ট্রাকচাপায় কৃষক নিহত নারায়ণগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা কুমিল্লায় ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে ১০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার কুমিল্লায় পুলিশকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি ; স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতাসহ দু’জন গ্রেপ্তার 
এইমাত্রপাওয়াঃ

যাকাত, দান-খয়রাত ও সদকার গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে হাদীসে কুদসীসমুহ (বাংলা অর্থ)

ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ হলো যাকাত। নামাযের পরেই এর স্থান। যাকাতের তাৎপর্য হলো, আল্লাহ্র হক আদায়ের ব্যাপারে নামাযের যে গুরুত্ব রয়েছে , বান্দার হক আদায়ের ক্ষেত্রে যাকাতেরও সেরকম গুরুত্ব রয়েছে। অন্য কথায় নামায যেরুপ আল্লাহ্ ও বান্দার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের প্রধান মাধ্যম, অনুরুপভাবে যাকাতও আল­াহর সাথে বান্দার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের একটি অন্যতম মাধ্যম। তাই ইসলাম দানশীলতাকে পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছে। সাধ্যানুযায়ী কারো ওপর ফরয এবং কারও নফল করা হয়েছে। কিন্তু নিয়মিতরূপে আদান-প্রদানের মাধ্যমে অভাব-অনটন দুর করে সুষ্ট সমাজ গঠনে যাকাত ,দান-খয়রাত ও সদকার গুরুত্ব অপরিসীম।তাই কুরআন মাজিদ ও হাদীসের শিক্ষা  হলো, যাকাত আদায় ছাড়া আখিরাতে মুক্তি পাওয়া যাবে না ।
দানশীলতা মহান আল্লাহ্র ক্রোধকে নির্বাপিত করে এবং তাঁর করুনার উদ্রেক করে। নিরহংকার , সময়োপযোগী ও যথাস্থানে দানের তুলনা নেই। তবে যাকাত , খয়রাত ও সদকার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। যাকাত ফরয অর্থাৎ এটা আদায় করা আবশ্যক। নতুবা অর্জিত মাল হালাল হবে না । সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। এটা আদায় না করলে রোযার ত্রæটি থেকে যাবে। দান-খয়রাত করা নফল আর ব্যাপক অর্থে যাবতীয় ভাল ও কল্যাণের কাজই খয়রাতের অন্তর্ভুক্ত।
দানশীলতার ভেতর দুটি নিগূঢ় রহস্য বিদ্যমান আছে। প্রথম হলো এটা দাতার আতœার প্রশস্ততা ও পবিত্রতা সাধন করে তাকে আল্লাহ্ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনের যোগ্য করে তোলে। আর দ্বিতীয়টি হলো সমাজ বৃত্তে কল্যাণকর কার্যকরী ভূমিকা পালন করে দাতাকে খাঁটি ইসলামী জীবনের উপযোগী করে তোলে ।

১. মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! তুমি আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ব্যয় কর , তোমার জন্য ব্যয় করা হবে। কারণ আল্লাহ্র দক্ষিণ হস্ত পরিপূর্ণ ও দানশীল, দিবারাত্রির দান এর কিছু পরিমান কমাতে পারে না।” দারুকুতনী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আবূ হুরায়রা (রা)- এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

২. মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার উদ্দেশ্যে ব্যয়কারী আমাকে ধার দিয়ে থাকে। আর নামায আদায়কারী ব্যক্তি আমার সাথে গোপনে আলাপ করে।” দায়লামী আলোচ্য হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন।

৩. মহান আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, “দানশীল ব্যক্তি আমার (বন্ধু) এবং আমি তার (বন্ধু)।”দায়লামী আলোচ্য হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন।

৪. মহান আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, “হে বনী আদম ! তোমার পক্ষে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাল ব্যয় করে ফেলা ভাল। আর তা ধরে রাখা তোমার জন্য মন্দ। তোমার জীবিকার পরিমাণ (তোমার হাতে) রাখার জন্য তুমি নিন্দনীয় নও। আপন পরিবারের মানুষ থেকে ব্যয় করা শুরু কর। উপরের হাত নিচের হাত থেকে সর্বোত্তম।” বায়হাকী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আবূ উমামা (রা)- এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

৫. আল্লাহ্র রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হযরত জিব্রাইল আমাকে  বলেছেন, মহান  আল্লাহ্  তা‘আলা বলেন, “হে আমার বান্দাগণ! আমি তোমাদেরকে ধন দিয়েছি এবং তোমাদের নিকট ধার চেয়েছি। অতঃপর যে ব্যক্তি নিজের হাতে সন্তুষ্ট চিত্তে আমাকে কিছু দান করে দুনিয়ায় তার ক্ষতিপূরণ তাড়াতাড়ি প্রদান করি এবং আখিরাতের জন্য তার নিমিত্ত একটি ভান্ডার জমা করি। আর যে ব্যক্তির নিকট থেকে আমার দেয়া বস্তুর মধ্য হতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু প্রহণ করি, আতঃপর সে উহাতে ধৈর্যধারণ করে এবং সওয়াবের কামনা করে তার জন্য আমি আমার অনুগ্রহ ও রহমত ওয়াজিব করে দিই। তাকে সৎ পথপ্রাপ্তদের মধ্যে লিপিবদ্ধ করি এবং তার জন্য আমার সাক্ষাত কবুল করি। ”রাফেয়ী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আবু হুরায়রা (রা) Ñএর সূত্রে রেওয়ায়েত করেছেন।

৬. মহান আল্লাহ্ তা‘আলা যখন যমীন সৃষ্টি করলেন ,তখন তা দুলতে লাগল। অতঃপর তিনি পাহাড়সমূহ সৃষ্টি করলেন এবং এগুলোকে যমীনের উপর স্থাপন করলেন, তারপর দুনিয়া স্থির হলো। তখন ফেরেশতাগণ পাহাড় সৃষ্টি দেখে অবাক হলো এবং আবেদন করল, “হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির ভেতরে এ পাহাড়ে চেয়ে বেশি শক্ত কোন কিছু আছে কি? তিনি বলেন,“ হ্যাঁ, লোহা।” তখন তারা বলল, “হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির ভেতরে লোহার চেয়ে অধিকতর শক্ত কোন বস্তু আছে কি? তিনি বলেন,“ হ্যাঁ, আগুন।” আবার তারা বলল,“হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির ভেতরে আগুনের চেয়ে শক্ত কোন বস্তু আছে কি? তিনি বলেন,“ হ্যাঁ, পানি।” তারা আবার জিজ্ঞাসা করল, “হে প্রিয় প্রভু! আপনার সৃষ্টির ভেতরে পানির চেয়ে শক্ত কোন বস্তু আছে কি? তিনি বললেন,“হ্যা, বাতাস।” তারা জিজ্ঞাসা করল,“হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির ভেতরে বাতাসের চেয়ে শক্ত কোন বস্তু আছে কি? তিনি বললেন,“হ্যা, তা বনী আদমের দান-খয়রাত, যা সে ডান হাতে দান করে এবং বাম হাত থেকে তা গোপন রাখে ।” ইমাম আহমদ ও তিরমিযী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আনাস রা) এর সূত্রে রেওয়ায়েত করেছেন।

৭। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হযরত জিবরাঈল (আঃ) আমাকে বলেছেন, মহান ও বরকতময় আল্ল­াহ্ বলেছেন, নিশ্চয়ই এটা এরুপ একটি দ¦ীন ,যা আমি আমার নিজের জন্য পছন্দ করি ,আর দানশীলতা ও চরিত্রের সততা ছাড়া অন্য কিছু কখনও এর শুদ্ধি সাধন করতে পারবে না। অতএব, যতদিন তোমরা এর সাথে সংশ্লিষ্ট থাক ততদিন একে বদান্যতা ও সচ্চরিত্রতা দ্বারা সম্মান কর।” ইবনু আসাকির আলোচ্য হাদীসখানা হযরত জাবির (রা) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

৮। নিশ্চয়ই মহান ও মর্যাদাবান আল্ল­াহ বলেছেন,“ নিশ্চয়ই আমি সুষ্ঠুভাবে নামায প্রতিষ্ঠা করার জন্য ও যাকাত দান করার উদ্দেশ্যে ধন-সম্পদ নাযিল করেছি। যদি কোন বনী আদমের এক পাহাড় পরিমাণ মাল থাকে তখন সে নিশ্চয়ই কামনা করে যেন তার জন্য দ্বিতীয় পাহাড় পরিমাণ সম্পদ এসে জুটে। আর যদি তার দুই পাহাড় পরিমাণ সম্পদ থাকে তবে সে নিশ্চয়ই আশা করে , তার জন্য তৃতীয় পাহাড় পরিমাণ সম্পদ আসুক Ñ আর ইবনে আদমের উদর মাটি ছাড়া অন্য কোন বস্তু দ্বারা পরিপূর্ণ হবে না।” অতঃপর তওবাকারীকে আল্ল­াহ্ মাফ করে   দিবেন ।  ইমাম আহমদ আলোচ্য হাদীসখানা আবূ ওয়াকিদ লায়সী থেকে বর্ণনা করেছেন।

৯। নিশ্চয়ই মহান আল্ল­াহ্ তা‘আলা বলেন,“হে বনী আদম! তোমার ধন ভান্ডার আমার নিকট আমানত রেখে দাও, তোমার ধনে না আগুন লাগবে, না তা পানিতে ডুববে, না তা চুরি হবে। যখন তুমি তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন উপলব্ধি করবে, তখন আমি তা তোমাকে পূর্ণ মাত্রায় দিব।”বায়হাকী আলোচ্য হাদীসখানা হাসান বসরী থেকে বর্ণনা করেছেন।

১০। জান্নাত বলল, হে আমার প্রতিপালক ! তুমি আমাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছ এবং আমার ভীতসমূহ সুন্দর করেছ। অতঃপর আল্লহ তার প্রতি ওহী প্রেরণ করলেন, “আমি তোমার বুনিয়াদগুলো হাসান ,হুসাইন ও নেককার আনসারদের দ্বারা অলঙ্কৃত করেছি। আমার ইয্যত ও মহত্তে¡র কসম ! তোমার মধ্যে কোন রিয়াকার ও কৃপন প্রবেশ করবে না।” আবূ মূসা মুদায়নী আলোচ্য হাদীসখানা আব্বাস ইবনে বুযাই আযদী (রা) Ñএর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
[ আলোচ্য হাদীসটি হযরত হাসান (রা) হযরত হুসাইন (রা) এবং নেককার আনসারদের মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করেছে। আর পাশাপাশি কৃপণ ও রিয়াকারীদের স¦রুপ উম্মোচন করেছে।]

১১।  নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “অতঃপর হে লোকগণ! তোমরা নিজের জন্য কিছু অগ্রিম পাঠাও।” অতঃপর তার প্রতিপালক  নিশ্চয়ই তাকে বলবেন, “তার কোন মধ্যস্থ ব্যক্তি থাকবে না , যে তার সম্মুখে মধ্যস্থতা করবে। তোমার নিকট কি কোন রসূল আসে নি, যে আমার সংবাদ তোমাকে জানিয়েছে ! আর তোমাকে আমি কি কোন ধন দেইনি এবং তোমার প্রতি অনুগ্রহ করিনি? অতঃপর তোমার নিজের জন্য কি অগ্রিম প্রেরণ করেছ? তখন সে নিশ্চিতভাবেই নিজের ডানে ও বামে  তাকাতে  থাকবে, কিন্তু কিছুই দেখতে পাবে না। অতঃপর সে তার সামনের  দিকে তাকাবে, কিন্তু তখনই সে দোযখ ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাবে না । অতএব, যে ব্যক্তি পারে সে যেন নিজেকে দোযকে শাস্তি থেকে রক্ষা করে; যদিও তা এক টুকরা খেজুরের বিনিময় হউক , সে যেন নিশ্চয়ই তা করে , আর যার নিকট তাও নেই সে মধুর কথার সাহায্যে তা করুক। কারণ এর দ্বারাও সওয়াবের প্রতিদান দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত দেয়া হবে। আর আল্ল­াহর রসূলের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। হান্নাদ আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আবূ সালমা ইবনে আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন।
আলোচ্য হাদীসে দুটি সত্য আলোচনা করা হয়েছে। প্রথমে দরিদ্র বলে দান থেকে বিরত থাকতে নেই, সাধ্যানুযায়ী কম পরিমাণ দানও জাহান্নাম থেকে নাজাত দিতে পারে। দ্বিতীয় ভাল কথা, সদুপদেশ, বিনয় ইত্যাদিও আল­াহ তা‘আলার কাছে ভাল কাজের অন্তর্ভূক্ত।]

১২। মহান আল্ল­াহ তা‘আলা নিজ (কুদরতী) হাতে চিরস্থায়ী ‘আদন’ বেহেশত সৃষ্টি করলেন। তাতে এমন বস্তু সৃষ্টি করলেন‘ যা কোন চক্ষু দেখে নাই এবং যার কল্পনা কোন মানুয়ের অন্তরে উদয় হয়নি। অতঃপর তিনি তাকে বললেন, “কথা বল,” তারপর তা বলল, “নিশ্চয়ই মু‘মিনগণ সফলকাম হয়েছে। তারপর তিনি বললেন, “তোমার নিকটে কোন কৃপণ ব্যক্তি আমার প্রতিবেশি হতে পারবে না।” তিরবাণী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আব্দুল­াহ ইবনে আব্বাস (রা) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

১৩. হে বনী আদম! তোমার কাছে এই পরিমাণ মাল থাকতে পারে , যা তোমার প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট অথচ তুমি এই পরিমাণ চাও যা তোমাকে পথভ্রষ্ট ও বিদ্রোহী করে তুলবে। হে বনী আদম! তুমি কমে তৃপ্ত হও না, আর অধিক্যেও তোমার পেট ভরে না। হে বনী আদম ! যদি তুমি সুস্থ দেহে রাত্রি ভোর কর, তোমার পরিবার ও পশুপালনের ভেতর নিরাপদ থাক এবং তোমার নিকট একদিনের খাবার থাকে ,তবে (প্রয়োজনের) অতিরিক্তটা সমগ্র জগতের জন্য হোক। ইবনে আদী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত উমর (রা) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

১৪। মহান আল্ল­াহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে এমন দুটি বান্দার পুনরুত্থান ঘটাবেন যাদেরকে তিনি ইহকালে অঢেল সম্পদ ও সন্তান দিয়েছিলেন। তিনি তাদের একজনকে জিজ্ঞাসা করবেন ,“হে অমুকের পুত্র অমুক!” সে বলবে, “আমি আপনার খেদমতে হাজির আছি।” তিনি বলবেন, “আমি কি তোমাকে অঢেল সম্পদ ও সন্তান দেয়নি? সে বলবে,“হ্যাঁ প্রভু!” তিনি বলবেন, “তোমাকে যা দিয়েছিলাম, তার সাহায্যে কি করেছিলে? ”সে বলবে, অভাবের ভয়ে আমি তা আমার সন্তানদের জন্য রেখে এসেছি।” তিনি বলবের, “যদি তুমি জ্ঞানের অধিকারী হতে তবে খুব কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। জেনে রেখ, তুমি তাদের জন্য যা ভয় করতে উহা আমি নিশ্চয়ই তাদের উপর নাযিল করেছি।” তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বলবেন, “হে অমুকের পুত্র অমুক!” তখন সে বলবে ,“হে প্রভু! তোমার খেদমতে হাজির আছি।” তিনি বলবেন, “আমি কি তোমাকে অঢেল সম্পদ ও সন্তান দেয়নি? সে বলবে,“হ্যাঁ প্রভু! ”তখন তিনি বলবেন, “তোমাকে আমি যা দিয়েছিলাম তুমি তার কিরূপ ব্যবহার করেছিলে?” সে বলবে, “আমি তা তোমার আদেশ পালনে ব্যয় করেছিলাম এবং আমার পরে আমার সন্তানের জন্য তোমারই উত্তম সম্পদের উপর ভরসা করেছিলাম।” তিনি বলবেন,“ যদি তুমি জানতে তাহলে বেশি হাসতে এবং অল্প কাঁদতে। জেনে রেখ, তুমি তাদের জন্য যার উপর ভরসা করতে তা আমি তাদের জন্য নাযিল করেছি।” তিরবানী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আব্দুল­াহ ইবনে মাসউদ (রা) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
[আলোচ্য হাদীসে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, সন্তান সন্তুূাতির জন্য দারিদ্রের ভয়ে সম্পদ জমা করে রাখার চেয়ে তা আল­াহর রাস্তায় ব্যয় করে তাদের সুখ-শান্তির জন্য আল্লহর ওপর ভরসা করাই আল­াহর নিকট অধিকতর প্রিয়। তবে অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে যে, সন্তান-সন্তুূাতিকে সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব অবস্থায় রেখে যাওয়াও উত্তম নয়।সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমার সন্তানদের এমন অবস্থা রেখে যেও না যে, তারা তোমার মৃত্যুর পর অন্যের নিকট হাত পাততে বাধ্য হয়।”]

১৫। নিশাচয়ই আল্ল­াহ্ তা‘আলা চিরস্থায়ী বাসস্থান জান্নাতে নিজ (কুদরতী) হাতে এক একটি গাছ রোপণ করলেন এবং তা সুসজ্জিত করলেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করলেন। আদেশ মোতাবেক তারা তাদের ঝরণা প্রবাহিত করল এবং গাছ ঝুলন্ত অবস্থায় ফলসমূহ ধরল। অতঃপর তিনি (আল­াহ্) এগুলোর উজ্জ্বল ও সৌন্দর্যের প্রতি তাকিয়ে বললেন,“ আমার মর্যাদা ও আরশের উপরে প্রতিষ্ঠিত আমার উচ্চ অবস্থানের কসম! তোমার সন্নিকটে কোন কৃপণ ব্যক্তি আমার প্রতিবেশি হতে পারবে না।” ইবনু নাজ্জার আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আব্দুল­াহ ইবনে আব্বাস (রা) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

 

 

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page