25 Nov 2024, 09:53 am

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ; ভোলায় আট হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ভোলায় প্রায় আট হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে দুই হাজার ২৮৩টি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৩৯টি।

এছাড়া ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে জেলায় ছয় হাজার ২৮০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলী জমি।

অপরদিকে ঝড়ে গাছ পড়ে বিদ্যুতে খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে দুই দিন ধরে সাত উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে জেলার শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও অন্যান্য উপজেলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ চালু হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলা দুই হাজার ২৮৩টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬০টি, দৌলতখানে ৫১টি, বোরহানউদ্দিনে ৪২০টি, তজুমদ্দিনে ৫০০টি, লালমোহনে ৩৫০টি, চরফ্যাশনে ৫০২টি ও মনপুরায় ৩০০টি। জেলায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৩৯টি ঘরবাড়ি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৫০টি, দৌলতখানে ২৬৯টি, বোরহানউদ্দিনে এক হাজার ৩৫০টি, তজুমদ্দিনে এক হাজারটি, লালমোহনে ৭০০টি, চরফ্যাশনে এক হাজার ২৭০টি ও মনপুরায় ৫০০টি।

ভোলা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় মোট ছয় হাজার ২৮০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ৪০০টি, দৌলতখানে ৬২০টি, বোরহানউদ্দিনে ৪৯০টি, তজুমদ্দিনে ৭৮৮টি, লালমোহনে ৯২২টি, চরফ্যাশনে এক হাজার ৩৪০টি ও মনপুরায় ৭২০টি।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ভোলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা ও চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন ঢালচর ও চর কুকরি-মুকরি। এসব এলাকায় ঝড়ের সময় পানি ৪-৫ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ৭-৮ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসকল এলাকা সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পানিতে প্লাবিত ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

মনপুরা উপজেলার বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষক মো. ছালাহউদ্দিন জানান, সোমবার রাতে মনপুরা উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মঙ্গলবার ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত এর তীব্রতায় উপজেলার সদরের হাজিরহাট বাজার, থানা, পশুহাসপাতালসহ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা মেঘনার পানিতে প্লাবিত হয়।

মনপুরার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ও কলাতলীর চরে ৮-১০ ফুট জোয়ারের প্লাবিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন চরে বসবাসরত ইউপি সদস্য আবদুর রহমান।

তিনি জানান, কলাতলীর চরের বাসিন্দারা স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের পূর্বপাশে নতুন বেড়িবাঁধের ২০ মিটার ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের এক হাজার ৪০ মিটার বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে মনপুরা ইউনিয়নের ৫০০ মিটার, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৪০০ মিটার ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১১০০ মিটার বাঁধের ক্ষতিসহ পুরো উপজেলায় ৩৩৪০ মিটার বাঁধের ক্ষতি হয়।

ভোলা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ভোলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে মতে প্রায় আট হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, দুর্গত মানুষের জন্য ৮৪ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 14657
  • Total Visits: 1303288
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২২শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৯:৫৩

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018