অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছেই। এই যুদ্ধে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ইরানের কামিকাজে ড্রোন। যুদ্ধের কয়েক মাস আগেই ইরান রাশিয়াকে এই ড্রোন সরবরাহ করে। দেশটির এমন স্বীকারোক্তির প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইরান ‘মিথ্যা’ বলছে। শুধু তাই নয় এটিকে ‘সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা’ করার মতো অভিযোগও করেন তিনি।
শনিবার (৫ নভেম্বর) তেহরানে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগেই রাশিয়ার কাছে ড্রোন সরবরাহ করেছিল ইরান। তবে ক্রেমলিনে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায়নি তেহরান।
ইউক্রেন ও পশ্চিমারা ধারণা করে যে রাশিয়া ইউক্রেনের মূল অবকাঠামোগত আঘাত করার জন্য ইরানের ‘কামিকাজে’ ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে ইরান ও মস্কো বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
এই ড্রোনে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলার পর বেশিরভাগ অঞ্চল ব্ল্যাকআউট হয়ে যায়। এর আগে পশ্চিমা কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন যে ইরান এই ড্রোন রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে এবং ইরানের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য ক্রিমিয়ায় অবস্থান করেন।
এর আগে ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। কিন্তু শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, অল্প সংখ্যক ড্রোন পাঠানো হয়েছে মস্কোতে।
এক টেলিগ্রাম বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অভিযোগ করেন ইরান ‘মিথ্যা’ বলছে। ৪৪ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট দাবি করেন যে ইউক্রেন প্রতিদিন প্রায় ১০টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। যদিও ইরান বলছে যে তারা রাশিয়াকে অল্প সংখ্যক ড্রোন সরবরাহ করেছে। রাশিয়াকে সমর্থন করার ব্যাপারে ইরানকে সতর্কও করেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে, ইরান ড্রোন সরবরাহ করেছে এমন অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত ১০ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের রাজধানীসহ অন্তত ১০টি অঞ্চলে রুশ হামলা শুরু হয়। বলা হচ্ছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ, এসব ঘটনায় ব্যবহার হয়েছে ইরানের তৈরি ড্রোন। ইউক্রেন হামলায় ব্যবহৃত এসব ড্রোন চিহ্নিত করে দেশটি। এগুলো মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি)-কে ইরানি শহীদ-১৩৬ অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মঘাতী অভিযান চালানো জাপানি যোদ্ধা পাইলটদের নামানুসারে এগুলোকে কামিকাজে ড্রোনও বলা হয়।
ইউক্রেন বলছে যে রাশিয়া ইরান থেকে ড্রোনগুলো আমদানি করেছে, যেখানে এগুলো শহীদ-১৩৬ নামে পরিচিত, যেটিকে ‘বিশ্বাসের সাক্ষী’ বা ‘শহীদ’ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক তেহরানকে ‘ইউক্রেনীয়দের হত্যার’ জন্যও দায়ী করেন। সূত্র: বিবিসি
Leave a Reply