অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইউক্রেনের ওপর হামলার কারণে রাশিয়া আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। গতকাল সোমবারের দিনটি সেটা আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে সর্বসম্মতিক্রমে ইউক্রেনের বিষয়টি স্থান পাচ্ছে বলে জানা গেছে। এমনকি রাশিয়াও নাকি সেই ঘোষণাপত্রে সম্মতি দিতে রাজি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় চীনের প্রেসিডেন্টশি জিনপিং ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। খবর ডয়চে ভেলের।
রাশিয়ার আচরণের পক্ষে এতকাল সওয়াল করার পর চীনের নেতৃত্ব আর মস্কোর ‘বৈধ নিরাপত্তা স্বার্থ’-এর উল্লেখ না করায় বেইজিং-এর অবস্থান নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, শি সেই আচরণেরও সমালোচনা করেছেন।
এ দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এক প্রস্তাব অনুমোদন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জন্য রাশিয়াকে ক্ষতিপূরণ দেবার ডাক দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের মধ্যে ও সে দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের যে কোনো ঘটনার জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৯৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ও ১৪টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ৭৩টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল৷ এর আগেও বিভিন্ন স্তরে যুদ্ধের কারণে জব্দ করা রাশিয়ার অর্থ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের কাজে লাগানোর প্রস্তাব আলোচিত হয়েছে৷
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব কার্যকর করার কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও প্রতীকী এই প্রস্তাব রাশিয়ার ওপর কিছুটা হলেও চাপ সৃষ্টি করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সেই সঙ্গে অন্যান্য দেশের জন্যও এক বার্তা পাঠানো হচ্ছে, যে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করলে তার আইনি পরিণামও ভোগ করতে হতে পারে৷ প্রস্তাবে এক আন্তর্জাতিক রেজিস্টার সৃষ্টি করে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে ইউক্রেনে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি নথিভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ এমন তালিকায় গোটা শহরে ধ্বংসলীলা, জ্বালানি অবকাঠামোর ক্ষতির পাশাপাশি হাসপাতাল, স্কুল, দোকানবাজার ও কারখানার মতো স্থাপনা ধ্বংসের ঘটনাও স্থান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের খতিয়ান তুলে ধরেছিল৷ সোমবার জাতিসংঘ সদ্য মুক্ত খেরসন শহরে জরুরি ত্রাণ সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে৷ সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইউক্রেনের জন্য একাধিক সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে৷ ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ব্রাসেলসে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ মিশন চালু করেছেন৷
এর আওতায় পোল্যান্ডে ইউক্রেনের ১৫ হাজার সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ একাধিক দেশ সেই মিশনে অংশ নিচ্ছে৷ জার্মান সেনাবাহিনীও কম্বাট ট্রেনিং ও ট্যাকটিক্স এক্সারসাইজ প্রশিক্ষণের আওতায় প্রায় পাঁচ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আরও প্রস্তুত করে তোলার পরিকল্পনা করছে৷ ইইউ সদস্য দেশ লাটভিয়া সে দেশে বেশ কয়েকটি ট্যাংক সরবরাহ করেছে৷ লিথুয়েনিয়াও আরও ১২টি সাঁজোয়া গাড়ি ইউক্রেনের হাতে তুলে দিয়েছে৷
Leave a Reply