অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্কুলের বই চুরির অভিযোগে করা মামলায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কুমড়িয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্টু আলীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
এর আগে, রবিবার দিবাগত রাতে নিজ বাড়ি থেকে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মন্টু আলী কুমড়িয়া অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনছুর আলীর ছেলে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। তাদের এক পক্ষে রয়েছে শিক্ষক মন্টু আলী, যিনি ২০২০ সালের ১ নভেম্বরে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। আর অপর পক্ষে রয়েছেন মোকছেদ আলী, যিনি চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত এডহক কমিটির রেজুলেশনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন। উভয়ের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব এবং ম্যানেজিং কমিটির বৈধতা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর আগেও এই বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
এরই মধ্যে ১ জানুয়ারি সারা দেশে মতো শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে পাঠানো নতুন বই বিদ্যালয়ের কার্যালয়ে সংরক্ষিত ছিল। রবিবার সকালে সেখান থেকে কিছু বই বিতরণ করেন মন্টু আলী।
এরপরই রাতে অবৈধভাবে বিদ্যালয় কার্যালয়ের তালা ভাঙা, বই চুরি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মন্টু আলীকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষক মোকছেদ আলী। সেই অভিযোগে মন্টু আলীকে রাতেই গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
গ্রেফতারের পর থানায় স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযুক্ত শিক্ষক দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী জিপির মতামত আমার পক্ষে রয়েছে। তাই আমি বই বিতরণ করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা ভুল ব্যাখ্যা করে মোকছেদ আলীকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি অবৈধ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করবো।
মামলার বাদী মোকসেদ আলী দাবি করেন, বৈধভাবে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। মন্টু আলী তালা ভেঙে বই চুরি করেছে। তাই সরকারি সম্পত্তি চুরি ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করায় থানায় মামলা করেছি। এসব বই শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে বিতরণের সিদ্ধান্ত ছিল।
খানসামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের বৈধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলেন মোকছেদ আলী। তিনি ছাড়া যদি অন্য কেউ অফিস কক্ষের তালা ভেঙে বই নিয়ে যায় সেটি আইনবহির্ভূত কাজ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে খানসামা থানার ওসি চিত্তরঞ্জন রায় জানান, লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই মোতাবেক মন্টু আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply