অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কনকনে শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। হেডলাইটসহ সামনের সকল লাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন। হিম বাতাসে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষেরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এদিকে জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে মৃদু বাতাস বইছে। তীব্র শীতে জবুথবু পড়েছে জনজীবন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। সোমবার থেকে বুধবার সূর্যের দেখা মেলেনি। বৃহস্পতিবার সামান্য দেখা মিললেও শুক্রবার বেলা ১১টা র আগে মেলেনি সূর্যের দেখা।
শহরের সনজয় নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, বাতাসের কারণে ইজিবাইক চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যাত্রী খুবই কম। প্রচণ্ড শীতের কারণে লোকজনের দেখা মিলছে না। সূর্যটাও উঠছে না যে রোদ পোহাবো।
শহরের বড় বাজারে কাজের সন্ধানে থাকা দিনমজুররা বলেন, কনকনে শীত পড়ছে, সঙ্গে বাতাসে শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলার ভেদামারি গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, ভোরে কৃষি কাজের জন্য মাঠে এসেছি। শীতে হাত চলছে না। বাতাসের বেগ হওয়ায় আরও কাঁপিয়ে দিচ্ছে। রোদ হলে কাজ করতে কোনো অসুবিধা হতো না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমান বলেন, তীব্র শীতে রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশিরভাগই শিশু রোগী। শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে তিন থেকে চার শতাধিক বয়োবৃদ্ধ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৪শ শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। ঠাণ্ডাজনিত কারণে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৮ শতাংশ। শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত আছে, যা শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে পাওয়া ২০ হাজার ১০০ কম্বল শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে গেছে। আমাদের পক্ষ থেকে আরও ৩০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সেগুলো পাওয়া গেলে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেও সাড়া মিলবে বলে আশা করি।
Leave a Reply