অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইমাম ভাতা বৃদ্ধি ও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদ, কবরস্থান ও ঈদগাহের সম্পত্তি বেআইনি জবরদখলের হাত থেকে রক্ষা করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ‘সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডে স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মাওলানা কামরুজ্জামান আজ (বুধবার) সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াকফ বোর্ড ইমাম সাহেবদের কল্যাণে ও রাজ্যে বহু জায়গায় মসজিদ, ঈদগাহ ও কবরস্থানের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ১২ বছর পরে এসেও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে ওয়াকফ বোর্ড কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। অন্যদিকে, ইমাম সাহেবদের ভাতা প্রদানের পদ্ধতিকে সাবলীল ও স্বচ্ছ করতে ওয়াকফ বোর্ড কোনও প্রযুক্তির সাহায্য নিতে না চাওয়ায় কোনও অজ্ঞাত দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে মাওলানা কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন।
কামরুজ্জামান বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তি জবরদখলের সংবাদ ও অভিযোগ বোর্ডে আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোর্ড প্রতিনিধিদলকে সংশ্লিষ্ট স্থান পরিদর্শনে পাঠাতে হবে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সমস্ত ঘটনা গণমাধ্যমকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে রাজ্যের মুসলিম সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে বলে তিনি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আশ্বাস দেন।
কামরুজ্জামান বলেন, ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাতা বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে একাধিকবার আমাদের দাবিগুলো কার্যকরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। কখনো বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই আমরা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু নানাভাবে আমরা জানতে পেরেছি আমাদের দাবিপত্র তিনি কখনোই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর প্রয়োজনটুকুও বোধ করেননি!
সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- ভাতা বৃদ্ধি করে বর্তমান বাজারদরে ইমাম মোয়াজ্জিনদের ভাতা ধার্য করতে হবে। সর্বত্র ওয়াকফ সম্পত্তির জবরদখল মুক্ত করতে হবে এবং ওয়াকফ সম্পত্তির তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। বিনা খরচে ইমাম মুয়াজ্জিনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সন্তানদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মসজিদ, ঈদগাহ ও কবরস্থানের জায়গাগুলো কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে সংরক্ষিত করতে হবে। ইমাম সাহেব না হওয়া সত্ত্বেও যারা ইমাম ভাতা গ্রহণ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বচ্ছতা আনতে ভাতা গ্রহীতা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের তালিকা ওয়াকফ বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। ওয়াকফ সম্পত্তির অবৈধ হস্তান্তর ও জবরদখল বিষয়ে মহামান্য উচ্চ আদালতের কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিশন গঠন করে দ্রুত তদন্তে করতে হবে বলেও সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে।
আজ ওই কর্মসূচিতে মাওলানা কামরুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সহসভাপতি খলিল মল্লিক ও গোলাম রহমান, মাওলানা জরিফুল ইসলাম, হাফেজ আব্দুল হাকিম, মাওলানা ফারুক খান প্রমুখ।
Leave a Reply