অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু করার গ্যারান্টি দিয়েছেন। বলেছেন, আমরা গ্যারান্টি দিচ্ছি নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কোনও কম্প্রোমাইজ করবো না, প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরে যাবো। আমরা যতক্ষণ আছি এই চেয়ারে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাবো।’
বিএনপিসহ সংলাপে সাড়া না দেওয়া দলগুলোকে আরেক দফা ডাকার ইঙ্গিতও দেন তিনি। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে বলেও তিনি জানান।
মো. আলমগীর বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ বিষয়টাতে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানও সে দায়িত্ব আমাদের দেয়নি।’
এই কমিশনার জানান, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা। নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তারা স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে এসে ইচ্ছেমতো তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, ভোট গণনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, নির্বাচনের ফল যাতে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়, সেটা ইসির দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনের প্রতি আমাদের শতভাগ অঙ্গীকার রয়েছে। আমরা সেটা করবো। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, যে ধরনের সরকারই থাকুক না কেন, বর্তমান ইসি শতভাগ সৎ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিরোধী পক্ষ কেন আস্থায় নিচ্ছে না তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে ইসির এক বছরের কার্যক্রম দেখে তারা কি বলতে পারবে কমিশন নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করেছে, অথবা কারও প্রতি আচরণ দুই রকম হয়েছে।’
দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ভোট করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন এই কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘কমিশন চাইলে সেটা সম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশন কতটা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমরা যদি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি এবং সেটা আমাদের ইচ্ছা আছে, অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’
সংকট দূর করার জন্য কমিশনের উদ্যোগ না থাকলেও ভোটের আগে দলগুলোর সঙ্গে আরেক দফা বসার কথা জানান মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন অংশীজন, সুশীল সমাজের মতামত নেওয়ার ক্ষমতা তো দেওয়া আছে। এখন আর হচ্ছে না। হয়তো পরবর্তীকালে হতে পারে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। আবার কোনও কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। অর্থাৎ যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি অথবা প্রয়োজন সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনের জন্য, তাদের সঙ্গে নির্বাচনের আগে হয়তো আবারও সংলাপ হতে পারে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তিনি জানান, এটা সবসময় আছে যে নির্বাচন কমিশন যেকোনও সময় যেকোনও দলের সঙ্গে বসে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ রাখার দৃষ্টান্তের বিষয়ে গাইবান্ধা উপনির্বাচনের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়টি আমরা তফসিল ঘোষণার আগে দেখবো। আমাদের কিছু কৌশল থাকবে, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। সেই কৌশলগুলো তো আমরা বলবো না। অবশ্যই কিছু কৌশল থাকবে। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে গ্যারান্টি দিচ্ছি আমরা। আমরা যতক্ষণ আছি এই চেয়ারে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাবো।’
নির্বাচন নিয়ে কোনও কম্প্রোমাইজ হবে না বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। কম্প্রোমাইজ করতে হলে আমাদের বর্তমান চেয়ারে দেখা যাবে না বলেও দাবি করেন। বলেন, ‘আমরা যে কাজের জন্য শপথ করেছি, সেটা যদি না-ই করতে পারি, তাহলে এই চেয়ারে থাকবো কেন? আমাদের কমিশনে যারা আছি, সবার মনোভাব এরকমই। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কোনও কম্প্রোমাইজ করবো না।’
ভোট নিয়ে কোনও চাপও নেই বলে জানিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘বিদেশি-দেশি কেউ কোনও চাপ দেয় না, চাপ নেই। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবো।’
Leave a Reply