অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের ভয়াবহ তাপদাহ এখনো অতিষ্ঠের পর্যায়ে। যদিও গেল সোমবার রাতে সিলেটের সুনামগঞ্জে খানিকটা বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু দেশের অন্য এলাকায় এখনো ভয়াবহ দাবদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন।
দুঃসহ গরমে হাঁসফাঁস সবার অবস্থা। ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরে। তাই গরমে ঘরে-বাইরে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। জ্বর ও ডায়রিয়া রোগীর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
এদিকে, হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ছে। বিশেষ করে ব্লাড-প্রেশার, ডায়াবেটিস, লিভার, ক্যানসার ও কিডনি রোগীরা বেশি সমস্যায় পড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই গরম অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। ব্লাড-প্রেশার অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে। গরমে অতিরিক্ত ঘামলে শরীর ডিহাইড্রেড বা পানির ঘাটতির শিকার হয়ে পড়ে। এর ফলে ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, পেটের সমস্যা, সর্দি-জ্বর, হাঁপানি, গ্যাসের সমস্যা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকে সমস্যাসহ নানা ধরনের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাদের এই ঝুঁকি বেশি। এবিষয়ে আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা.সেহরীন এফ সিদ্দিকা মনে করেন,এই গরমে যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে কিডনি, লিভার, হার্টের রোগী, গর্ভবতী মা, ক্যানসারের রোগীদের বেশি ঝুঁকি রয়েছে।
শরিয়তপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার রোমান বলেন,গরমের কারণে অনেকে কিডনির বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যায় ভোগেন বেশিরভাগ মানুষ। প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম অক্সালেট বা ক্রিস্টাল একত্রে মিশে কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বলেছেন এবারের গরমে ভিন্ন মাত্রা রয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তাই দাবদাহের মধ্যে ঠোঁট শুকিয়ে ও ফেটে যাচ্ছে। বাতাসে জলীয়বাষ্প কম থাকায় মূলত এমন হচ্ছে। এছাড়া রোজায় দীর্ঘ সময় পানি না খাওয়া অবস্থায় প্রচুর ঘাম হলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। তাই বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
Leave a Reply