অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল নতুন করে সহিংসতা শুরু করেছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রীর ওই পাশবিক ও বর্ণবাদি আচরণের কারণে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে: অবিলম্বে এই সহিংসতা বন্ধ করা না হলে নতুন করে যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল গত মাসখানেক ধরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বাড়িয়ে দিয়েছে। অবৈধ এই সরকার চলতি মে মাসেই গাজা উপত্যকায় ৫ দিনের যুদ্ধ চাপিয়েছিল। ১৪ মে নাকবা দিবসে এবং ১৮ মে পতাকা দিবসে তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে প্রচুর সহিংসতা দেখিয়েছে। ওই সহিংসতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। গতকাল (সোমবার) ভোরেও পশ্চিম তীরে অবস্থিত নাবলুসের পূর্বাঞ্চলে একটি শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী সেনারা। ওই হামলায় তিন ফিলিস্তিনি যুবক শহীদ হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৬ জন। গতকাল সকালেও ইসরায়েলি সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী ইতমার বিন গাভিরের নেতৃত্বে কয়েক ডজন ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারী পুলিশের পূর্ণ সহায়তায় আল-মাগরাবাহ গেট থেকে আল-আকসা মসজিদে হামলা চালায়।
এসবের পাশাপাশি ইহুদিবাদী মন্ত্রিসভা গতকাল আল-বোররাক স্কোয়ারের টানেলে একটি বিশেষ বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে ইহুদিবাদী সংবাদপত্র ইসরাইল হিউম জানিয়েছে। পরিকল্পনার মধ্যে তরুণ বসতি স্থাপনকারীদের আকৃষ্ট করাসহ তাদের বসতি নির্মাণের জন্য ২ শ ৬০ লাখ ডলারের মতো বরাদ্দ করার কথাও জানিয়েছে পত্রিকাটি।
অধিকৃত কুদসের মেয়র এবং ইহুদিবাদী সংগঠনের সহায়তায় ওই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। অবৈধ ইহুদিবাদী সরকার ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত বসতি স্থাপনকারী তরুণদের অধিকৃত কুদসে বসবাস করতে উৎসাহিত করা হবে বলেও পরিকল্পনায় রয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর ওই সহিংস ও নির্মম আচরণের মূল কারণ দুটি।
প্রথম কারণটি হলো নেতানিয়াহুর মতো কট্টর ডানপন্থির মন্ত্রিসভায় বিন-গাভিরের মতো উগ্র মন্ত্রীকে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া। যে কিনা কট্টর আরব বিরোধী। সে চায় ফিলিস্তিনীদেরকে পশ্চিমতীর এবং কুদস শহর থেকে পুরোপুরি তাড়িয়ে দিতে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামীদের হুশিয়ারির কথা না হয় বাদই দিলাম স্বয়ং ইসরাইলি কর্মকর্তাদের পরামর্শও বিন-গাভীর কানে তোলে না। দ্বিতীয় কারণটি হলো আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তা। পশ্চিমারা তো ইসরাইলের পৃষ্ঠপোষক। তারা তো কিছুই বলবে না। কিন্তু আরবদের উচিত ছিল ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এগিয়ে আসা। আরবরা বিভিন্ন বৈঠকে লোক দেখানো বিবৃতি দেওয়া ছাড়া বাস্তবে কার্যকর কিছুই করছে না। আরবদের এই নিষ্ক্রিয়তায় ফিলিস্তিন প্রতিরোধ কমিটির মুখপাত্র আবু মুজাহিদ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তিনি যথার্থই বলেছেন: কুদস এবং আল-আকসা মসজিদে সংঘটিত ইসরাইলি অপরাধের ব্যাপারে আরব দেশগুলোর গভীর নীরবতা লক্ষ্য করছি আমরা। তা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ শক্তিগুলো তাদের সাধ্যমতো জবাব দিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং নতুন করে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Leave a Reply