অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নীলফামারী ডালিয়ায় তিস্তা ব্যরাজ পয়েন্টে নদীর পানি আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩২ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে সকাল ৬টায় ৪০ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় সেখানে পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৩৭ সেণ্টিমিটার ওপরে। উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। ফলে নদী বেষ্টিত জেলার ডিমলা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৫টি চর গ্রামের তিন সহ¯্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর পানি কিছুটা কমতে থাকলে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩২ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যরাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৯ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সন্ধ্যা ৬টায় আরো বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেণ্টিমিটার এবং রাত ৯টায় ৩৭ সেণ্টিমিটার ওপরে উঠে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৫টি চর গ্রামের তিন সহস্্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
ডিমলা উপজেলার খালিশাচাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘রাতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় এক হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এসব পরিবার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।’
ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সারারাত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এতে করে ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই, ঝাড়সিংহেশ^র, বারবিশা ও ফ্লাটপাড়া গ্রামের প্রায় এক হাজার ২০০ পরিবারের বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব পরিবারের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। পানি বন্দী মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।’
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, ‘ভারীবৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর পানি কিছুটা কমতে থাকলে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩২ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ব্যরাজের সবকটি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে’।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন,‘আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। স্থানাীয় ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে পানিবন্দী মানুষের তালিকা তৈরী করতে বলা হয়েছে। তিস্তার ঢলের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর কাজ করছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে’।
Leave a Reply