অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের মিজোরামে বসবাস করেন ৭৮ বছর বয়সের লালরিংথারা। শৈশবে তিনি যখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তখন বাবা মারা যান। পারিবারিক সেই কঠিন পরিস্থিতিতে লেখাপড়ার পাঠ চুকাতে হয়েছিল তখনই। একমাত্র সন্তান হওয়ায় ওই বয়সেই মাকে জুম ক্ষেতে সাহায্য করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
চরম দারিদ্র্যের কারণে স্কুল জীবনের অনেক বছর নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি তার টান ছিল সবসময়।
জীবনের শেষ লগ্নে এসেও সেই টানে ভাটা পড়েনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন। বই ভর্তি ব্যাগ নিয়ে স্কুলের ইউনিফর্ম পরে তিন কিলোমিটার হেঁটে ক্লাসে যাচ্ছেন প্রতিদিন।
শেখার প্রতি মিজোরামের চাম্পাই জেলার হরুকাউন গ্রামের লালরিংথার এই আগ্রহ এখন অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি চলতি শিক্ষাবর্ষে হরুকাউন গ্রামের সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান (আরএমএসএ) উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
লালরিংথারা ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে চান। তার মূল লক্ষ্য- তিনি যেন ইংরেজিতে চিঠি লিখতে এবং টেলিভিশনের সংবাদ বুঝতে পারেন।
১৯৪৫ সালে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে খুয়াংলেং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন লালরিংথারা। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা এভাবে ঘুরে অবশেষে ১৯৯৫ সালে নিউ হরুকাউন গ্রামে স্থায়ী হন। তিনি বর্তমানে নিউ হরুকাউন চার্চে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করছেন।
স্থানীয় অনলাইন গণমাধ্যম দ্য নর্থইস্ট টুডে- এর মতে, লালরিংথারা মিজোরাম ভাষায় পড়তে ও লিখতে পারেন।
এ বিষয়ে লালরিংথারা বলেন, মিজোরাম ভাষায় পড়তে বা লিখতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে ইংরেজি ভাষা শেখার প্রতি আমার চরম আগ্রহ। কিছু ইংরেজি শব্দ বুঝতে আমার সমস্যা হয়। তাই জ্ঞান অর্জনে বিশেষ করে ইংরেজি দক্ষতা বাড়াতে আমি আবার স্কুলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
লালরিংথারার পড়াশোনার ব্যাপারে নিউ হরুকাউন মিডল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভ্যানলালকিমা বলেন, লালরিংথারার চ্যালেঞ্জ ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের জন্যই অনুপ্রেরণা। সূত্র : এনডিটিভি
Leave a Reply