অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অপপ্রচার রোধ করতে চায় সরকার। এ কারণে ফেসবুকের প্রচারণা নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)।
আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ফেসবুক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি জানান, ইসির নির্দেশনা মোতাবেক ফেসবুক কনটেন্ট ব্লক করবে।
ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা’র বাংলাদেশ বিষয়ক হেড অব পাবলিক পলিসি রুজান সারওয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে এসে বৈঠক করেছে। এসময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন এইডান হেই এবং এজিনেন ফো।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, আইডিইএ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম এবং এনআইডি সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচি অশোক কুমার দেবনাথ
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব বলেন, মূলত ফেসবুকে যে অপপ্রচার হয়, তা প্রতিরোধে করণীয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে হেট স্পিচ, ভায়োলেশন টাইপের অপপ্রচারণা ডিলিট, রিমুভ করবে মেটা কর্তৃপক্ষ। ওখান থেকে তারা ব্লক করবে। কোনো ধরনের অপপ্রচার-সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণ্য কিছু– এ ধরনের অপপ্রচার তারা ব্লক করবে।
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কোন ধরনের কনটেন্টে তারা বিধিনিষেধ আরোপ করবে সেজন্য তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে তারা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব।
এই সংবাদ প্রচারের পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে চলছে নানা সমালোচনা। নেটিজেনরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছে কিংবা স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা। কেউ কেউ বলছেন, পৃথিবীর উন্নত অনুন্নত এই মুক্ত বিশ্বে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নাই। তাই এর সমালোচনা করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কথা হয় নির্বাচন বিশ্লেষক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপ-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত মতামত প্রচার প্রকাশ অবশ্যই স্বাধীনতার প্রধান শর্ত। কিন্তু অবাধ স্বাধীনতার নামে অপপ্রচার হলে সেটা রাষ্ট্র সমাজ তথা দেশের জন্য ক্ষতিকর। আর জাতীয় নির্বাচনের মত সময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আজকাল এ ধরনের অপপ্রচারের চেষ্টা চালায় কেউ কেউ। তাই সে সব বিবেচনায় এ নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের জন্যই লাভজনক। আর রাষ্ট্রের যেকোন লাভ দিন শেষে জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে, এমনটাই মনে করেন ড. নাজমূল আহসান কলিমুল্লাহ।
Leave a Reply