অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চারদিনের টানা বর্ষণে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। রোববার (৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার মারিশ্যা দিঘীনালা সড়কের দুই টিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাঙ্গামাটি শহরে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদেরসরিয়ে নিতে শনিবার থেকে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। জেলা শহরের ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের এনে রাখা হচ্ছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খাবার বিতরণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
জানা গেছে, রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে চার হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে। এসব নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে পুরো শহরে মাইকিংয়ের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকসহ ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী। অতিভারী বর্ষণের ফলে ইতিমধ্যেই রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন, রাতে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে একটি গাছসহ পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে। খবর পেয়েই সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছে। এই সড়কের ১৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১০টি পয়েন্টে পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাল পতাকা টানিয়ে স্থানীয় ও সড়কে যাতায়াতকারীদের সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাতে টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টি আর বজ্রপাতে রাঙ্গামাটিতে ঘটে যায় স্মরণকালের পাহাড় ধসের ঘটনা। ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় পাঁচজন সেনাসদস্য, নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে শহরের মানিকছড়িতে একটি সেনা ক্যাম্পের নিচে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের উপর ধসে পড়া মাটি অপসারণ করতে গিয়ে পুনরায় পাহাড় ধসের মাটি চাপা পড়ে নিহত হন ওই ক্যাম্পের দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচ সেনাসদস্য। রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মানিকছড়ি শালবাগান অংশে ১০০ মিটার রাস্তা সম্পূর্ণ ধসে গিয়ে দীর্ঘ ৯ দিন সারাদেশের সঙ্গে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে।
Leave a Reply