অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নিউইয়র্কে তুর্কি কনস্যুলেটের বাইরে পবিত্র কুরআন অবমাননার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা একটি ‘ঘৃণ্য পদক্ষেপ’।
‘ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননাকে ঘৃণ্য’ বলে উল্লেখ করলেও মার্কিন এই মুখপাত্র বলেছেন: যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো দেশের গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান হিসেবে বাক স্বাধীনতাকে সমর্থন করে। বাক-স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন দেওয়া মার্কিন সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
কোরআন অবমাননার পুনরাবৃত্তির প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার পক্ষ থেকে এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে নিউইয়র্কে তুরস্কের কনস্যুলেটের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কুরআনন শরীফের অবমাননা করে। ওই লোকটি কুরআন শরিফের একটি ইংরেজি ভার্সন মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে এবং তারপর তাকে পদদলিত করে। কনস্যুলেটের নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ওই লোকটিকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুকিছু ইউরোপীয় দেশ, বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনের পবিত্রতা লঙ্ঘন করে আসেছে। চলতি বছরের গ্রীষ্মের শুরু থেকে সুইডেনের নাগরিকত্ব লাভকারী ইরাকি নাগরিক মোমিকা সিলওয়ানের মতো কিছু ইসলাম বিদ্বেষী উত্তর ইউরোপের দুটি দেশ-সুইডেন এবং ডেনমার্কে-বহুবার কোরআন পোড়ানোর মতো ঘৃণ্য কাজটি ঘটিয়েছে। এই লোকটি চরম ডানপন্থী দলগুলোর সদস্য বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। মজার ব্যাপার হলো সুইডিশ ও ডেনিশ পুলিশের সহায়তায় এই লোকেরা পবিত্র কোরআনে আগুন দেয়। অথচ মুসলমানরা যখন কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে তখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ব্যাপকভাবে দমন করেছে।
পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক নিন্দার ঢেউ উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই ইসলামি বিশ্ব এবং অন্যান্য দেশে কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। এ বিষয়ে গত মাসে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসি তার সদস্য দেশগুলোকে অনুরোধ করেছে তারা যেন সুইডেন এবং ডেনমার্কের মতো দেশ-যারা কুরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে-তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
চলতি বছরের জুলাইয়ের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলও এ বিষয়ে মুসলিম দেশগুলির প্রস্তাব অনুমোদন করে কুরআন অবমাননার নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি এই ঘটনা তদন্ত করে রিপোর্ট করার জন্য মানবাধিকারের হাইকমিশনারকে আহ্বান জানিয়েছে। তারপরও আমেরিকায় কুরআন অবমাননার ঘটনায় প্রমাণ হয় বাক-স্বাধীনতার অজুহাত দেখিয়ে পশ্চিমারা আসলে মুসলমানদের বিরুদ্ধ ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
Leave a Reply