অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আগামী ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে টানেল উদ্বোধন করবেন। এ লক্ষ্যে টানেলের দুই প্রান্তে নেওয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উদ্বোধনের পরদিন ২৯ অক্টোবর থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সচিব মো. মনজুর হোসেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে।
সেতু সচিব বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম এই টানেল। এটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের অংশ হচ্ছে চট্টগ্রাম। টানেল পার হতে সবাইকে টোল দিতে হবে। শুধু যারা জরুরি কাজে থাকবে তারাই এই টোলের আওতামুক্ত হবে। টানেল পরিচালনার জন্য একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
মনজুর হোসেন বলেন, ‘টানেলের মধ্যে জনসাধারণের জন্য নির্দেশনা ব্যবস্থা থাকবে এবং সেখানে আটটি রেডিও চ্যানেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশনাগুলো চলতে থাকবে। টানেলের ভেতর যেই ফ্রিকোয়েন্সি থাকুক না কেন, গাড়ি যতক্ষণ টানেলে থাকবে ততক্ষণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই দিকনির্দেশনা চলবে।’
তিনি বলেন, ‘টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক চলাচল করতে পারবে না। কোন গাড়ি চলাচল করবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোন গাড়ি থেকে কত টাকা টোল নেওয়া হবে তাও নির্ধারণ করা হয়েছে। টানেলে প্রতি ঘণ্টায় যানবাহন চলাচল করবে ৮০ কিলোমিটার বেগে। নিরাপত্তায় দুই পাশে থাকবে পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।’
সচিব বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আনোয়ারা উপজেলা ওয়ান সিটি টু টাউন হচ্ছে। প্রসারিত হচ্ছে পর্যটন, শিল্প-কারখানা, উন্নত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।’
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘টানেল প্রকল্প বাংলাদেশে প্রথম। এটা নিয়ে মিথ্যা বা নেতিবাচক প্রচারণা হতে পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মিথ্যা ও নেতিবাচক প্রচারণা চালালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।’
প্রকল্পের পরিচালক হারুন উর রশিদ বলেন, ‘যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত টানেল। নিরাপত্তা নিয়ে খুঁটিনাটি বিষয় দেখা হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি। এরমধ্যে উদ্বোধন হলেও কাজ এগিয়ে নিতে কোনও সমস্যা হবে না।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘টানেল প্রকল্প বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। উদ্বোধনের দিন আনোয়ারা প্রান্তে একটি সুধী সমাবেশে হওয়ার কথা রয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।’
সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম ডিআইজি নূরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply