অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ককে (এমএসএসএস) বিধি বহির্ভূতভাবে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বাবলু সরকারের বিরুদ্ধে। রবিবার (১ অক্টোবর) সকালে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত মহসিন আলীকে জোর করে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী মহসিন আলী ও স্কুলের একাধিক সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বাবলু সরকার তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মহসিন আলী জানান, রবিবার সকালে তিনি স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করেন। এরপর নিয়মিত দায়িত্বের কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে হঠাৎ প্রধান শিক্ষক গিয়ে তাকে স্কুল থেকে চলে যেতে বলেন। তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করে প্রধান শিক্ষককে লিখিত আদেশ দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাকে সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে বলেন। মহসিন তখন স্কুলে থাকা সভাপতির সঙ্গে দেখা করলে সভাপতি তাকে স্কুল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। অন্যথায় তিনি শক্তি প্রয়োগ করে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। তখন মহসিন স্কুল থেকে চলে যান।
মহসিন আলী বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে আমি স্কুলে এমএলএসএস পদে কর্মরত। আমার নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্র রয়েছে। কিন্তু সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে গোপনে আমার পদসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন। বিষয়টি জানার পর আমি আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালত সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আমার মেয়ে মামলা করেছেন। আদালত দুদককে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ক্ষোভ থেকে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিয়ম বহির্ভূতভাবে আমাকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।’
নিজের নিয়োগ প্রসঙ্গে মহসিন বলেন, ‘আমাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও আমার বিলের ব্যবস্থা করা হয়নি। গত দুই বছর ধরে আমাকে মাসিক পারিশ্রমিকও দেওয়া হয় না। এখন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে গোপনে আমার পদে লোক নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন। এজন্য আমি আদালতের কাছে গিয়েছি। এটিই আমার অপরাধ!’
এ ব্যাপারে জানতে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে আবারও চেষ্টা করলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বাবলু সরকার বলেন, ‘মহসিনকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সত্যি নয়। সে ও তার মেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এজন্য তাকে নিয়োগের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে স্কুলে আসতে বলেছি।’
একজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার পরও বিধি অনুসরণ না করে একই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা আইনসিদ্ধ কিনা, ‘এমন প্রশ্নে সভাপতি বলেন, তার নিয়োগ কীভাবে হয়েছে, তা বৈধ কিনা তা তিনি দেখাতে পারেননি। তাকে পদে নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
নিয়োগ বৈধ না হলে তিনি এতদিন ধরে কীভাবে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এবং হাজিরা খাতায় সই করছেন, এমন প্রশ্নে বাবলু সরকার বলেন, ‘তা আমি জানি না।’
Leave a Reply