অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আশঙ্কা করছে, গাজা উপত্যকায় হামাসের সুড়ঙ্গগুলোতে নার্ভ গ্যাস ও রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ডেল্টা ফোর্স কমান্ডোদের নজরদারিতে পরিচালনা করা হতে পারে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পরিচিত একটি সিনিয়র আরব সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফাঁস হওয়া এক নথির তথ্য অনুসারে, হামাসের সুড়ঙ্গে প্রবেশ, প্রায় ২২০জন জিম্মিকে উদ্ধার ও হাজারো হামাস যোদ্ধাদের হত্যার জন্য নার্ভ গ্যাস ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে আকস্মিক হামলার সুবিধা নেওয়ার আশা করছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। মিডল ইস্ট আই-এর পক্ষ থেকে স্বতন্ত্রভাবে ফাঁস হওয়া তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র বলেছে, পরিকল্পনা হলো আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ নার্ভ গ্যাস ও রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে হতচকিত করে দেওয়া। সুড়ঙ্গগুলোতে বিপুল পরিমাণ নার্ভ গ্যাস পাম্প করা হবে। মার্কিন ডেল্টা ফোর্স এই কাজে নজরদারি করবে। এই গ্যাস মানুষের দেহকে ৬ থেকে ১২ ঘণ্টার জন্য নিশ্চল করে দেয়।
সূত্র আরও বলেছে, এই সময়ের মধ্যে সেনারা সুড়ঙ্গে প্রবেশ, জিম্মিদের উদ্ধার ও হাজারো হামাস যোদ্ধাদের হত্যা করবে।
সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউজ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
গাজায় ইসরায়েলের সম্ভাব্য স্থল অভিযানে বিভিন্নভাবে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন প্রায় প্রতিদিন ফোনে কথা বলছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের সঙ্গে। শহুরে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ইসরায়েল পৌঁছেছেন। দুটি বিমানবাহী রণতরি ইসরায়েলের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
ডেল্টা ফোর্স হলো যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর স্পেশাল অপারেশনস ফোর্স। জিম্মি উদ্ধার, সন্ত্রাসদমন, হত্যা বা আটক মিশনের জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের কাছ থেকে জিম্মি উদ্ধারের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই বাহিনীর।
ফাঁস হওয়া নথির তথ্য অনুসারে, ইসরায়েল তাদের স্থল অভিযান পিছিয়ে দিয়েছে বলে যে তথ্য সামনে আসছে তা ভুয়া। বহুমুখী আকস্মিক হামলার মাধ্যমে হতচকিত করে দেওয়ার পরিকল্পনা সফল করতে এমন তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। ইসরায়েলি কমান্ডোরা উত্তর গাজা ও উপকূল দিয়ে প্রবেশ করবে।
সূত্র দাবি করেছে, হামলার অভিযানিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা গাজা থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা করে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, হামাসের হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। জবাবে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ ছাড়াও ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ৬ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
Leave a Reply