অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে ধারণা নিয়েছে কমনওয়েলথ সদর দফতরের নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি মূল্যায়ন প্রতিনিধি দল। অন্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে লন্ডনে ফিরে প্রতিবেদন দেওয়ার পরই পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসবে সংস্থাটি।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে কমনওয়েলথের চার সদস্যের প্রতিনিধিদল সভা করে। তফসিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত এ বৈঠক হয়। এতে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
এ সভায় লন্ডনের কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের হেড অব ইলেক্টরাল সাপোর্ট সেকশন লিনফোর্ড এন্ড্রো, পলিটিক্যাল এডভাইজার লিনডে মাললেকা, এক্সিকিউটিভ অফিসার জিপি ওজাগো ও অ্যাসিসট্যান্ট রিসার্চ অফিসার সার্থক রায় অংশ নেন।
বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, এটা একটা কমনওয়েলথের অগ্রবর্তী দল। (পরিস্থিতি জেনে) তারা কমনওয়েলথ সচিবালয়ে গিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন। এরপর প্রতিবেদন পেয়ে কমনওয়েলথের পূর্ণাঙ্গ টিম নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসার বিষয়ে সম্মতি জানাবেন কি, জানবেন না—সেটা পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদল কোনও মন্তব্য করেনি বলে জানান ইসি সচিব।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা কোনও আলোচনা হয়নি। শুধু নির্বাচন পদ্ধতি, নির্বাচনি কর্মপদ্ধতি ও নির্বাচনি আইন, বিধিবিধান, ভোট ব্যবস্থাপনা, প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য কী ব্যবস্থা, নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ও প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালট ও ভোটের দিন যানবাহন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অবহিত হতে চেয়েছেন। সিইসি নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তুলে ধরেছেন। এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সফরকারী প্রতিনিধিদল।
তিনি বলেন, ‘এটা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা। তারা কিছু জানতে চেয়েছেন, তুলে ধরেছি। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়ে জানা। অন্য কোনও প্রশ্ন তারা করেনি। জানতে চেয়েছেন দেশের নির্বাচন পদ্ধতিতে ভোটাররা কীভাবে ভোট দিতে যাবেন, ভোট নেওয়া হবে, ভোট স্বচ্ছ করতে গেলে ভোট পদ্ধতিসহ রিটার্নিং অফিসারসহ সবার কাজগুলোর বিষয়ে জেনেছেন। সামনের (কত সদস্যের টিম পরে আসবে) বিষয়ে কিছু বলেননি। আজ এখানে এসেছে চার সদস্যের অগ্রবর্তী দল। তারা পরিস্থিতি দেখে (সদর দফতরে) গিয়ে রিপোর্ট করবেন, তারপর চূড়ান্ত করে আমাদের জানাবেন’, বলেন ইসি সচিব।
নির্বাচন ভবনে সিইসির সভাকক্ষে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে প্রতিনিধিদলের প্রধান লিনফোর্ড এন্ড্রো জানান, প্রি-ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট মিশনের সহকর্মীদের নিয়ে শনিবার বাংলাদেশে এসেছি। নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি মূল্যায়নে কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রের যেকোনও দেশে অবজারভার পাঠানো এক ধরনের প্রথা।
তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েকটি উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করি। এরই অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনসহ নানা ধরনের অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক প্রস্তুতি অবহিত হওয়ার পাশাপাশি বিরাজমান পরিবেশসহ সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।’
কমিশনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বেশ ভালো আলোচনা হয়েছে। (নির্বাচনের জন্য) কতটা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, তা জানতে পেরেছি। সামনের দিকে তাকিয়ে আছি, আমাদের আরও কিছু অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হবে। ২২ নভেম্বর আমাদের লন্ডন ফিরে যাওয়ার কথা। তারপর কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেবো।’ বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনও আগাম মন্তব্য করতে চাননি তিনি।