বশির আল-মামুন, চট্টগ্রাম : অবশেষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ছাড়তে হচ্ছে সচিব পদে থাকা খালেদ মাহমুদকে। তিন দফা বদলির পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনও শেষমেষ তাকে অবমুক্ত করে অফিস আদেশ জারি করেছেন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিব খালেদ মাহমুদকে অবমুক্ত করবে সংস্থাটি। এরপর নতুন কর্মকর্তা যোগদান করবেন চসিকের সচিব পদে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১২ ফেব্রুয়ারির প্রজ্ঞাপন মোতাবেক খালেদ মাহমুদকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করায় বদলি করা কর্মস্থলে যোগদানের নিমিত্ত আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব পদ থেকে নির্দেশক্রমে অবমুক্ত করা হলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সচিব খালেদ মাহমুদকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোতে পদায়ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ( ২০ ফেব্রুয়ারি) সিটি করপোরেশন থেকেও তাকে অবমুক্ত করা হবে. ইতিমধ্যে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। চসিকের নতুন সচিব কে হচ্ছেন এ বিষয়ে এখনও অফিস আদেশ হয়নি।’
২০২১ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সচিব পদ থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব পদে পদায়ন করা হয় খালেদ মাহমুদকে। এরপর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) হিসেবে প্রথমবার বদলি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বদলি ঠেকিয়ে বহাল থাকেন তিনি।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই খালেদ মাহমুদকে আবারও বদলি করা হয়। এবার বদলি করা হয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান হিসেবে। একইদিন সরকারি আবাসন পরিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী শহিদুল ইসলামকে সিটি করপোরেশনের সচিব পদে পদায়ন করা হয়। তিনি যোগদান করলেও খালেদ মাহমুদ দায়িত্ব না ছাড়ার কারণে চেয়ারে বসতে পারেননি কাজী শহিদুল ইসলাম। ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট খালেদ মাহমুদের বদলির আদেশ বাতিল করা হয়। পরে কাজী শহিদুল ইসলামকে চট্টগ্রাম ওয়াসায় বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক হিসেবে পদায়ন করা হয়।
সর্বশেষ চসিক সচিব খালেদ মাহমুদকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক পদে বদলি করা হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
গত আড়াই বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কর্মরত অবস্থায় সচিব খালেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগ ওঠে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল বিজ্ঞপ্তি ছাড়া শ্রমিক নিয়োগ এবং বিধি ভঙ্গ করে এক প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনা।
এ প্রসঙ্গে চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমি আড়াই বছর ধরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আছি। আগেও দুই বার আমার বদলি হয় কিন্তু সিটি করপোরেশন আমাকে অবমুক্ত না করায় আমি বদলি করা স্থানে যোগদান করতে পারিনি। এবার আমাকে অবমুক্ত করেছে। মঙ্গলবার ( ২০ ফেব্রুয়ারি) আমাকে অবমুক্ত করে ইতিমধ্যে অফিস আদেশ জারি করেছে সিটি করপোরেশন। এরপর আমি বদলির স্থানে যোগদান করবো।’
বিজ্ঞপ্তি ছাড়া শ্রমিক নিয়োগ এবং বিধি ভঙ্গ করে এক প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘চসিকে গ্রুপিং আছে- এ কারণে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়ানো হয়েছে। বিধি ভঙ্গ করে আমি কোনও কাজ করিনি। চসিকে সব অর্ডার কিংবা সিদ্ধান্ত মেয়র দিয়ে থাকেন। এসব বিষয়ে মেয়র যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা পালন করেছি।’