ফারুক আহমেদ, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের সীমাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২২ দফা দূর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে।
শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, দুর্নীতি, অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতা আগ্রাসন থেকে মুক্তি চেয়ে সীমাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা, কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী, অভিবাবক ও এলাকাবাসী বৃন্দ ২২ দফা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
তারা প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে মুক্তির জন্য নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বিদ্যালয়কে শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করেন শালিখা উপজেলা ইউএনও এর কাছে।
২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মাগুরা জেলা প্রশাসক মুহ: মাহবুবর রহমান সীমাখালী স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন করেন। ঐ সালের ৬ অক্টোবর তারিখে স্মারক নং- ০৫.৪৪.৫৫০০.০০১.০০.০১০.১৫.২১১(৮) স্কুল সম্পর্কে পরিদর্শন প্রতিবেদন মতামত লিখিত ভাবে জানান। সীমাখালী স্কুল এন্ড কলেজের ভৌত ও একাডেমিক পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। একটি বৃষ্টিমুখর দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি পর্যাপ্ত হলেও তাদের শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষকদের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা কোন অবস্থায় মানসম্মত বলে প্রতীয়মান হয়নি। এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা বা উদ্যোগ কোনটিই পরিলক্ষিত হয়নি। তার মেধা ও যোগ্যতা এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য উপযোগী নয়। ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল (পাশের হার ৪৮%) তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্কুলের খেলার মাঠ হতে গরুর হাট অতিসত্ত্বর অপসারণ পূর্বক ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হলো। জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমাখালী স্কুল পুনঃপুন পরিদর্শন পূর্বক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সীমাখালী মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক একে এম রশীদুল হাসান (সিরাজ), সহকারী শিক্ষক খন্দকার মিজানুর রহমান, রমেন কুমার পাল, কামরুজ্জামান, জয়ন্ত কুমার বিশ্বাস, আব্দুল হাই আল হাদী, রকিবুল ইসলাম, আরাফাত, লাইব্রেরিয়া গ্রন্থাগার সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান, অফিস সহায়ক গোলাম আজম, সহকারী শিক্ষিকা মিনতি বিশ্বাস, শামীমা নাসরিন ও নাসরিনা পারভীনা বলেন, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে আমাদের কাছে থেকে অনেক নগদ টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে এবং আমরা চাকরি হারানোর ভয়ে মুখ বুজে সহ্য করেছি। প্রধান শিক্ষক সকালে স্কুলে এসে বেশির ভাগ সময় হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে চলে যায় অজুহাত মামলার কথা, স্কুলের টয়লেট নোংরা ও পানির সুব্যবস্থা নেই, শ্রেনী কক্ষ ময়লা, দেয়ালে ঝুল কালি, স্কুলের মাঠে গরু ছাগলের হাটের জন্য কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ব্যাহত, বিদ্যালয়ের আলমারি ও জানালা ভেঙ্গে অকেজো সহ নানারকমের সমস্যার জন্য আমরা সবাই শালিখা উপজেলা ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
বিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রী বৃন্দগণ জানায়, স্কুলের টয়লেট অত্যন্ত নোংরা ও পানির সুব্যবস্থা নেই, ক্লাস রুমে ধুলাবালি, দেওয়ালে রং করা নেই, শহীদ মিনারের পাশে লোকজন প্রস্রাব করে, স্কুলের খেলার মাঠে প্রতি রবিবার ও বুধবার গরু-ছাগলের হাট বসে বিধায় আমরা খেলাধুলা করতে পারিনা, স্কুলের পরিবেশ নোংরা বলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী চলে গেছে অন্য স্কুলে।
এবিষয়ে সীমাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমার মান সম্মান ক্ষুন্ন করা ও হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এসব মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলে বেড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সিলেকশন গ্রেড, বিএড স্কেল, টাইম স্কেল, জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য গর্ভনিং বডির, ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক গৃহীত রেজুলেশন ঠিক হয়ে গেলে সব শিক্ষক ও কর্মচারী এমনই ঠিক হয়ে যাবে।
Leave a Reply