অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পঞ্চগড়ের বোদায় সুপারির খোল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্লেট, বাটি, চামুুুচ, ট্রে-সহ নানান ধরনের বাহারি তৈজসপত্র। স্বাস্থ্যকর হওয়ায় বাজারে অন্যান্য প্লেটের তুলনায় এগুলোর চাহিদাও বেশি। সুপারি গাছের খোল গ্রামে খুবই সহজলভ্য। সাধারণত জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এ খোল দিয়েই প্লাস্টিকের বিকল্প নান্দনিক তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে পৌর শহরের শিমুলতলী এলাকার একটি কারখানায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রথমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দুই টাকা পিস করে সুপারি গাছের খোল সংগ্রহ করা হয়। খোলগুলোকে নিমপাতা ও লেবুর রস যুক্ত পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পাতার খোল ছাঁচের মেশিনে বসিয়ে তাপ এবং চাপ প্রয়োগ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোলাকার বাটি, গোলাকার প্লেট, চৌকোণা প্লেট, লাভ প্লেট, চামুুুচ, ট্রে-সহ নানান ধরনের তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে।
বর্তমানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, রেস্টুরেন্টগুলোতে প্লাস্টিকের পরিবর্তে সুপারি গাছের খোল দিয়ে তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এর প্রস্তুতকারকরা। এ কারখানায় দৈনিক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ পিস প্লেট, বাটিসহ নানা ধরনের তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি পিস প্লেট, বাটি ৫-১০ টাকায় বিক্রি করা হয়। বর্তমানে এ কারখানায় মোট ১৫ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন।
ইকো বিডি গ্রীণের পরিচালক ফরিদুল আলম হিরু বলেন, আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্ল্যাস্টিকের প্লেট ব্যবহার করে থাকি। যেগুলো ঠিকমতো ধরাও যায় না, আবার খাবার পড়ে যায়। কিন্তু তার তুলনায় আমাদের বানানো প্লেটগুলো শক্ত, সুন্দর ও সহজে পরিবহনযোগ্য। একবার ব্যবহার করে ধুইয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে তা আবার ব্যবহার যায়। সবচেয়ে ভালো দিক হলো এটি ব্যবহারের পর ফেলে দিলে এটি পচে জৈবসার হয়। প্লাস্টিকের থেকে দাম একটু বেশি। এটা পরিবেশবান্ধব একটি উদ্যোগ। এর পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্যসম্মত। পরিবেশ সুরক্ষায় এর বিকল্প নেই বলে মনে করেন।
স্থানীয় কয়েকজন সুপারিবাগানের মালিকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, আগে সুপারিরবাগানের পাতা পড়ে নষ্ট হতো। এখন কারখানা হওয়ায় ঝরে পড়া সুপারির খোলের মূল্য হয়েছে। কারখানার শ্রমিক কাবলু জানান, কারখানাটি হওয়ায় তার মতো অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এমন কারখানা জেলায় আরো হলে অনেক বেকার লোকের কাজের সুযোগ হবে। এ ব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. শাহরিয়ার নজির জানান, এটা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। সুপারির খোল দিয়ে তৈরি তৈজসপত্রের দেশ ছাড়া বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
Leave a Reply