বশির আল মামুন চট্টগ্রাম : জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি ও কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি বলেন, ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে এবারের বাজেট। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে ব্যবসা সহজীকরণের লক্ষ্যে আগামী ২০২৪-২৭ পর্যন্ত সময়ে ১১০টি সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের অন্যতম প্রধান লজিস্টিক্স খাতকে আরও গতিশীল করতে অনুমোদিত জাতীয় লজিস্টিক্স নীতিতে সুপারিশকৃত সব সংস্কারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি জ্বালানি সেক্টরে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দৈনিক এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম-ঢাকা অর্থনৈতিক করিডোরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বে-টার্মিনাল, মেঘনা নদী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পানি সরবরাহ এবং চট্টগ্রাম নগরীকে ব্যবসাবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে বাজেটে বিশেষ উন্নয়ন বরাদ্দ রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬.৫%-এর মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশেরও বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসি-তে ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্তনকৃত কর ২% থেকে কমিয়ে ১% নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক।
‘বাজেটে মধ্যম আয়ের করদাতাদের ওপর করের চাপ কিছুটা কমে আসবে। যা মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় এবং অভ্যন্তরীণ বাজার চাহিদা সচল রাখতে সহায়ক হবে। কিন্তু অধিক আয়ের করদাতার করের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক বিনিয়োগের ওপর কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ১৫% কর পরিশোধের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বা সম্পদকে প্রদর্শন করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তা অর্থ পাচার রোধে ভূমিকা রাখতে পারে।’
এদিকে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ আনার যে প্রত্যাশা রাখা হয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে টেক্সটাইল সেক্টরে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান আবশ্যক। পাশাপাশি রফতানি শিল্পে এবং দেশের যাবতীয় মেশিনারিজ আমদানিতে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটে ঘাটতি মোকাবিলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতার প্রয়োজন বলে মনে করি। বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক তদারকি এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনলে ব্যয় বৃদ্ধি ও সময়ক্ষেপণ হ্রাস পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। যথাযথ তদারকি এবং সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা না গেলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং ভর্তূকি ও প্রণোদনা বরাদ্দ কমানোর ফলে জনগণের জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে।’
Leave a Reply