অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মিত্র লেবাননের ইসলামি গোষ্ঠী জামা ইসলামিয়ার এক নেতাকে হত্যার প্রতিশোধে ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। রোববার সশস্ত্র ড্রোন দিয়ে উত্তর ইসরায়েলে সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবাননের এই গোষ্ঠী।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রত্যেক দিন ইসরায়েলি সামরিক চৌকি ও ভূখণ্ডে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্ররা। ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত এলাকায় এবারের এই সংঘাত ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
এর আগে, শনিবার লেবাননের পশ্চিম বেকা অঞ্চলের খিয়ারা এলাকায় ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জামা ইসলামিয়ার আল-ফজর ফোর্সের নেতা আয়মান ঘোতমেহ নিহত হন। সিরিয়া সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে লেবাননের ভূখণ্ডে আয়মানের গাড়ি লক্ষ্য করে ওই হামলা হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, লেবাননের বেকা এলাকায় নির্ভুল নিশানায় হামলা চালিয়ে আয়মান ঘোতমেহকে হত্যা করা হয়েছে। লেবাননে জামা ইসলামিয়া ও হামাসের যোদ্ধাদের অস্ত্র আয়মান সরবরাহ করেছিলেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
অক্টোবরে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লেবাননে জামা ইসলামিয়ার অন্তত সাত যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সহিংসতায় লেবাননে কমপক্ষে ৪৮০ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ ও হামাসের যোদ্ধা। তবে তাদের মধ্যে ৯৩ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। আর লেবানন ভূখণ্ড থেকে হামাস ও হিজবুল্লাহর চালানো হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১৫ সৈন্য ও ১১ বেসামরিক নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ঢুকে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাসের শত শত যোদ্ধা। একই সঙ্গে আরও ২০০ জনের বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে ফিলিস্তিনি এই স্বাধীনতাকামী সংগঠনের সদস্যরা। পরে ওই দিনই গাজায় পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৮ মাসের যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৭ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলায় উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
রোববার হিজবুল্লাহ বলেছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলের বেইত হিলেল ব্যারাকে সামরিক নেতাদের অবস্থানে সশস্ত্র ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জামা ইসলামিয়ার আল-ফজর ফোর্সের নেতা আয়মান ঘোতমেহকে হত্যার প্রতিবাদে এই হামলা চালানোর দাবি করেছে হিজবুল্লাহ।
Leave a Reply