27 Feb 2025, 09:17 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কেউ তৈরি করছেন বসতঘরের দরজা জানালা, কেউ ফ্রেম আবার কেউ তৈরি করছেন দেওয়াল। সবশেষে দক্ষ শ্রমিকদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় রং পালিশের শেষ হচ্ছে নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব কাঠের বসতবাড়ি। ঘরের ভেতর-বাইরে এমন  সুন্দর কারুকাজ, যা প্রথম দৃষ্টিতেই  আকর্ষণ করে। এমন দৃশ্য দেখা যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার প্রত্যন্ত কররী গ্রামের একটি ফার্নিচারের কারখানায়।

বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের সি এন্ডবি  বাজার সংলগ্ন এ গ্রামের ন্যাচারাল ফাইবার নামের কারখানায় তৈরি ঘরগুলো রপ্তানি করা হবে ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামের পাইরি ডাইজা ইকো পার্কে। আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কাঠ দিয়ে বসতবাড়ি তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিতে।

কাঠের তৈরি এ বাড়ির কাঠামো, দেওয়াল, দরজা-জানালা এমনকি ছাদও কাঠের তৈরি। প্রথমে কাঠ কেটে ও সাইজ করে পুরো বাড়িটি তৈরি করে শ্রমিকরা। বাড়িটি ১১ মিটার লম্বা এবং চওড়া সোয়া ৪ মিটার। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। এর পর বিভিন্ন অংশকে ছোট আকারে খন্ড খন্ড করা হয়। ফলে পুরো বাড়িটিকে স্বল্প স্থানে সহজে পরিবহন করা যায়। পরবর্তীতে এ খন্ডাংশ গুলো জুড়ে যেকোন জায়গায় স্থাপন করা সম্ভব। ন্যাচারাল ফাইবার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ আহমেদ বলেন, পরিবেশের ক্ষতি করে না এমন পণ্য ব্যবহার করে ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে   কাঠের ঘর যাচ্ছে ইউরোপে । ১২০টি বসতবাড়ি তৈরির অর্ডার পান বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ। এরপর থেকে পরিবেশবান্ধব বসতবাড়ির তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।

ব্যবসায়ী মোস্তাফিজ আহমেদ বলেন, বেলজিয়ামের একটি ইকো পার্কের জন্য বায়াররা অর্ডার দিয়েছে। পরিবেশবান্ধব কাঠের তৈরি এ রকম ১২০টি বসতঘর তাদের প্রয়োজন, যা আগামী দুই বছরের মধ্যে বেলজিয়ামে পাঠানো হবে।তাঁর ভাষায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে, দেশি মেহগনি কাঠ দিয়ে এই ঘরগুলো তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া, এসব বাড়ির কাঁচামাল পরিবেশে মিশে যায় এমন হতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কোনো পণ্য ব্যবহার করা যাবে না। পরিবেশবান্ধব এই বাড়ি রপ্তানির মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টি, কর্মসংস্থান তৈরি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন পথ উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে এই উদ্যোগ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

প্রথমবারের মত নিজ দেশের এই পণ্য ইউরোপের বাজারে রপ্তানিতে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে শ্রমিকরাও খুশি। কাঠমিস্ত্রি মোজাহিদ বলেন, ‘আমাদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারপরে ডিজাইন দেখে সম্পূর্ণ একটি বসতঘর তৈরি করেছি। এরপর কোম্পানি ও বিদেশী লোকজন দেখে পছন্দ করছে। এখন আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে  থাকলে প্রতিটি বসতঘর তৈরি করতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। প্রায়  ২শ’ জন শ্রমিক এই বাড়ি তৈরির কাজ করছেন। কারখানার শ্রমিক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগে কখনো এই ঘর তৈরি করিনি। এখন দেখছি খুবই সুন্দর হয়েছে ঘরগুলো। সম্পূর্ণ কাঠ দিয়ে এভাবে ঘর তৈরি করা যায় কখনো ভাবতেও পারিনি। দুটি বেডরুমে মোট পাঁচজন থাকার উপযোগী এ ঘর সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ঘরের একপাশে একটি বারান্দা, বেডরুমের সঙ্গে বাথরুম ও বসার ঘর রয়েছে। বসার ঘরে টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থা এবং ঘরের ভেতরেই রান্না করারও ব্যবস্থা রাখা কাঠের ঘর তৈরি হয়েছে। ঘরের প্রতিটা অংশ খুলে প্যাকিং করে পাঠানো হবে বেলজিয়ামে।

সাইফুল নামের অপর এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের হাতে তৈরি কাঠের ঘর বিদেশে যাচ্ছে, এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা এই ঘর তৈরি করতে পেরে খুবই আনন্দিত। কথায় কথায় জানা গেল, চলতি বছরের শুরুর দিকে গ্রিসের কোকোম্যাট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেলজিয়াম থেকে কাঠের ঘর তৈরির অর্ডার পায় বাগেরহাটের ন্যাচারাল ফাইবার নামক প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে কাঠের ঘরের স্যাম্পল তৈরি শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। কাঠের তৈরি স্যাম্পল ঘরটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পছন্দ হওয়ায় চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে ১২০টি ঘর তৈরি করে রপ্তানির জন্য কাজ শুরু করে ।

পাইরি ডাইজা ইকো পার্কের প্রধান স্থপতি পেসেল ডি বেক বলেন, আমরা এখানে এসেছি কারণ আমরা খুঁজে পেয়েছি এখানের মানুষ কারুশিল্পে দক্ষ। এছাড়া এই এলাকার কাঠও খুবই উন্নত। আমরা এই কাঠের বাড়িগুলোয় থেকেছি, তবে সেখানে অবশ্যই মশার ভয় ছিলো। আমাদের দেশে এত মশা নেই। তবে আমরা বাড়িগুলোতে থেকে খুবই শান্তি পেয়েছি।

বাগেরহাটে তৈরি কাঠের ঘর যাচ্ছে ইউরোপে

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সোমবার দামেস্কে সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সিরিয়ায় স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশটির নতুন সরকারের সঙ্গে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বৈঠক।

আম্মান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিযেছে, জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ছবিগুলোতে সাফাদি ও শারাকে হাত মেলাতে দেখা গেছে।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সাফাদি সিরিয়ার নতুন নেতার পাশাপাশি ‘বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার’ সঙ্গেও দেখা করবেন। আসাদের পতনের পর এটি ছিল জর্ডানের কোনো সিনিয়র কর্মকর্তার প্রথম সফর।

সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডান চলতি মাসের শুরুতে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে আরব, তুর্কি, ইইউ ও মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকরা বছরের পর বছর গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দেশটিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতা শারা ৮ ডিসেম্বর আসাদকে পতনের হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরের অনেক দেশের সিনিয়র কর্মকর্তাকে তিনি স্বাগত জানান।

জর্ডান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ মোমানি রোববার সাংবাদিকদের বলেন, আম্মান ‘ভ্রাতৃপ্রতিম সিরীয় জনগণের ইচ্ছার পক্ষে’ দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। মোমানি বলেন, আম্মান সিরিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে চায় এবং ‘তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা’ সমর্থন করে। তিনি বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার স্থিতিশীলতায় জর্ডানের স্বার্থে রয়েছে এবং ‘এটি তার সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে’।

জর্ডান কর্তৃপক্ষের মতে, যুদ্ধ শুরুর পর ২০১১ সাল থেকে পালিয়ে জর্ডানে আশ্রয় নেয়া কিছু সিরিয়ান দেশে ফিরতে শুরু করেছে।

 

 

 

 

 

সিরিয়ার নতুন নেতার সাথে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন প্রচন্ড জ্বর নিয়ে সোমবার ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন শারিরীক জটিলতায় ভূগছেন। তার কার্যালয় এই খবর জানিয়েছে।

৭৮ বছর বয়সী ডেপুটি চীফস অব স্টাফ অ্যাঞ্জেল ইউরিনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এক পোস্ট বার্তায় বলেছেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের জ্বর বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং পর্যবেক্ষনে রাখার জন্য আজ বিকেলে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হয়েছেন।’ ‘তবে তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।’

এরআগে রক্তের সংক্রমনের কারনে ২০২১ সালের অক্টোবরে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

ক্লিনটন ২০০৪ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে চিকিসকের পরামর্শে তার বাইপাস সার্জারি হয়। এর ৬ বছর পর তার হার্টে রিং পরানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন হাসপাতালে ভর্তি 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি বলেছেন, চলতি মাসের গোড়ার দিকে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর ইরান সিরিয়ার নয়া ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেনি।

তিনি গতকাল (সোমবার) তার সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরো বলেছেন, আসাদ সরকারের পতনের বহু আগে থেকে সিরিয়ার বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে তেহরানের যোগাযোগ ছিল। সে সময় তেহরান ওইসব দলকে একথা বোঝাতে পেরেছিল যে, উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে দমন করার লক্ষ্যে সেদেশে সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছে তেহরান।

সিরিয়ার ক্ষমতাসীন সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আশ-শাম বা এইচটিএস তুরস্কের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা দিয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে ইরানের এই মুখপাত্র বলেন, তুরস্কের সঙ্গে ইরানের বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় এবং এসব আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু সিরিয়া।

বাকায়ি বলেন, সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় থাকুক এবং দেশটির জনগণ বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়া নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করুক ইরান তাই চায়। এছাড়া, সিরিয়া যেন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতে না পারে সেটিও জরুরি। তবে সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি দেশটির সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে বিপদাপন্ন করতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সিরিয়ার বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে প্রচুর অস্ত্র থাকায় দেশটিতে ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করেন বাকায়ি। তবে সঠিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এবং সবগুলো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করা সম্ভম হলে সিরিয়ায় দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সিরিয়ার নয়া ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেনি ইরান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে ইসরাইল। ইহুদিবাদী যুদ্ধমন্ত্রী ইসরাইল কাতজ গতকাল (সোমবার) তার মন্ত্রণালয়ে দেয়া এক বক্তৃতায় এ স্বীকারোক্তি দেন।

তিনি বলেন, “আমরা হুথিদের বিরুদ্ধে সজোরে আঘাত হানব এবং তাদেরকে নেতৃত্বশূন্য করে ফেলব; ঠিক যেভাবে আমরা হানিয়া, (ইয়াহিয়া) সিনওয়ার ও (হাসান) নাসরুল্লাহকে তেহরান, গাজা ও লেবাননে হত্যা করেছি।  আমরা একই কাজ হুদায়দা এবং সানায়ও করব।”

কাতজ ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যে কেউ ইসরাইলের বিরুদ্ধে হাত তুলবে আমরা তার হাত কেটে ফেলব এবং ইসরাইলি বাহিনীর লম্বা হাত তাকে আঘাত করবে ও তাকে শাস্তি দেবে।”

গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানের একটি গেস্টহাউজে শক্তিশালী বিস্ফোরণে ইসমাইল হানিয়া ও তার দেহরক্ষী শাহাদাতবরণ করেন। ইহুদিবাদী ইসরাইলের একজন গুপ্তচর ওই বিস্ফোরক পেতে রেখেছিল বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। হানিয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরান সফরে এসেছিলেন।

ইরান ও হামাস শুরু থেকেই হানিয়াকে হত্যা করার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে আসলেও এতদিন তেল আবিব বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার করেনি।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে এক ভয়াবহ বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ শহীদ হন এবং ১৬ অক্টোবর গাজায় ইহুদিবাদী বাহিনীর সঙ্গে এক সংঘর্ষে ইসমাইল হানিয়ার উত্তরসূরি ইয়াহিয়া সিনওয়ার শাহাদাতবরণ করেন।

 

তেহরানে হামাস নেতা হানিয়াকে হত্যার কথা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্য স্বীকার করল ইসরাইল

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে প্রতিদিন পালিয়ে আসা হাজার হাজার আশ্রয়-প্রার্থী মানুষের চাপ সামলাতে গিয়ে দক্ষিণ সুদান সীমান্তে অত্যন্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সোমবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এ কথা বলেছে।

দাতব্য চিকিৎসা সংস্থাটির বরাত দিয়ে নাইরোবি থেকে এএফপি জানায়, প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করছে। তবে জাতিসংঘ সম্প্রতি দৈনিক ৭ থেকে ১০ সহস্রাধিক সীমান্ত অতিক্রমের কথা জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত হওয়ায় দেশটিতে বিশ্বের এক করুণতম মানবিক জরুরি পরিস্থিতি চলছে।

জাতিসংঘ জানায়, প্রায় ১৭,০০০ লোক ধারণ করা রেংক শহরের একটি ট্রানজিট কেন্দ্রের কাছে একজন এমএসএফ জরুরি সমন্বয়কারী ইমানুয়েল মন্টোবিও বলেন, তারা সেবা প্রদানের জন্য রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সাথে কাজ করছেন, তবে পরিস্থিতি একেবারেই শোচনীয়। যথেষ্ট সেবা দিতে পারছেন না তারা।

তিনি বলেন, যুদ্ধে আহতদের আগমনের জন্য নির্মিত চিকিৎসা স্থাপনাগুলো সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে, তাদের পক্ষে প্রত্যেকের সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

মন্টোবিও বলেন, ‘শতাধিক আহতের মধ্যে অনেকে মারাত্মক জখম নিয়ে অস্ত্রোপচারের অপেক্ষা রয়েছেন।’

ব্লু নাইল রাজ্যের মসমনের বাসিন্দা বশির ইসমাইল বিমান হামলার পর রেংকের  হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। কিছু একটা আমার বুকে আঘাত করে। আমি এতটাই দিশেহারা হয়ে পড়ি যে মনে হচ্ছিল আমি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছি।’

দক্ষিণ সুদানের এমএসএফ-এর ডেপুটি মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর রোজেলিন মোরালেস বলেন, হাজার হাজার মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, খাবার পানি, স্বাস্থ্যসেবার সংকটের মুখোমুখি রয়েছেন। সহিংসতা, দারিদ্র্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াইরত হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পর্যাপ্ত সামর্থ্য দক্ষিণ সুদানের নেই।

গ্রামে হামলার শিকার হয়ে দক্ষিণ সুদানের রেংক শহরে পালিয়ে আসা আলহিদা হামেদ সুদানের ব্লু নাইল রাজ্যে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বলেন, ‘ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ছিল,  লোকজন এদিক  ওদিক ছুটে যাচ্ছিল।’

তিনি জানান, তিনি এখন নিরাশ্রয়। একটি গাছের নিচেই কোনোমতে ঠাঁই করে নিয়েছেন তিনি। বাড়ি আর বাড়ি নেই। সেটি এখন দুঃস্বপ্নে আধার।’ তাই তিনি আর সেখানে ফিরে যেতে চান না।

 

 

শরণার্থীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ সুদান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী বাহিনীর ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধযজ্ঞের প্রতিবাদে ইসরাইলের একাধিক সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন।

ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়ে বলেছেন, সোমবার তেল আবিব থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত আশকেলন শহরের একটি সামরিক ঘাঁটিতে দূরপাল্লার ইয়াফা কামিকাজে ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়।

এছাড়া, খোদ রাজধানী তেল আবিবের একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করে আরেকটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানান সারি।

তিনি বলেন, এখন ইসরাইলবিরোধী যুদ্ধের পঞ্চম পর্যায় চলছে এবং এ পর্যায়ে সোমবারের দুই হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

ইয়েমেনের এই সেনা মুখপাত্র বলেন, তার বাহিনী এ ধরনের অভিযান চালিয়ে যাবে এবং ইসরাইলের সকল সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানবে। গাজায় ইহুদিবাদী আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ এবং উপত্যকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ তুলে না নেয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান চলতে থাকবে বলেও তিনি জানান।

ইয়েমেন থেকে নিক্ষিপ্ত একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের নিকটবর্তী জাফা এলাকায় আঘাত করার দু’দিন পর নতুন করে হামলা চালানোর খবর দিলেন ইয়াহিয়া সারি। ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২০ ইসরাইলি আহত হয়েছিল।

ড্রোন দিয়ে ইসরাইলের ২ সেনা ঘাঁটিতে আঘাত হানল ইয়েমেন ; আরও হামলা চালানোর ঘোষণা