22 Jan 2025, 01:53 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ফুটবল খেলার উন্নয়নে বর্তমান বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সহযোগিতা চেয়েছেন। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে আর্জেন্টিনা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে অভিমত ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “মেসির নাম এবং আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে খুবই জনপ্রিয়।” আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো আজ সকালে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ক্রীড়া,  সংস্কৃতি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
আর্জেন্টিনার সঙ্গে যোগাযোগ জোরদারে তাঁর সরকারের আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বুয়েন্স আয়ার্সের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে খুবই আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্ধিত সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে তাদের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আর্জেন্টিনা বাংলাদেশ থেকে তৈরী পোশাকের পাশাপাশি উচ্চমানের ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য পণ্য কিনতে পারে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন, এনিমেল ভেজিটেবল ফ্যাটস এন্ড ওয়েল, তৈলবীজ, ফলমূল, দুগ্ধজাত পণ্য এবং প্রাকৃতিক মধু আমদানি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্পায়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বিপণন কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার শুধু দেশের মধ্যেই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও শক্তিশালী যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলছে।
সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো আশা প্রকাশ করেছেন যে ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস পুনরায় খোলার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ঢাকায় তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু হওয়ায় আর্জেন্টিনা খুবই খুশি এবং এ লক্ষ্যে সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আর্জেন্টিনা প্রথম ১৯৭৪ সালে ঢাকায় তার দূতাবাস খোলে। কিন্তু ১৯৭৮ সালে সামরিক জান্তার শাসনামলে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। সোমবার ঢাকার বনানীতে আর্জেন্টিনা দূতাবাস পুণরায় খোলা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে সারা বিশ্ব দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বে খাদ্য দ্রব্যের দাম এবং মূদ্রাস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক উন্নত দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সফররত মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ ও কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে আর্জেন্টিনার জনগণও উচ্চ মূদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে।
তিনি  জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিত ভাবে গ্লোবাল সাউথ ফোরামের সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার ও প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখে তিনি মুগ্ধ বলেও জানান।
এটি প্রথম সফর উল্লেখ করে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এত সুন্দর হবে তা কখনোই ভাবিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হুগো গোবি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের ফুটবল খেলার উন্নয়নে আর্জেন্টিনার সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গত বছরের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পুরস্কার হিসেবে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দেবার পর কাতারে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন মেসি। আর তাই এবারের ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কারটা তার হাতে উঠবে, এমনটা অনুমেয় ছিল। প্যারিসে গতকাল রাতে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০২২ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বর্ষ  সেরাদের পুরস্কৃত করা হয়।
এদিকে নারী বিভাগে বর্ষসেরার পুরস্কার ধরে রেখেছেন স্পেনের এ্যালেক্সিয়া পুটেলাস।
সেরা হবার লড়াইয়ে মেসি পিছনে ফেলেছেন পিএসজি সতীর্থ বিশ^কাপ ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ব্যালন ডি’অর বিজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ তারকা করিম বেনজেমাকে। এনিয়ে দ্বিতীয় বারের মত ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কার হাতে নিলেন মেসি। এর আগে ২০১৬ সালে তিনি বিশ^ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার বর্ষসেরার পুরস্কার জয় করেছিলেন।
প্রতি বছর ফিফা সদস্যভূক্ত দেশগুলোর জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক ও সমর্থকদের ভোটে বর্ষসেরা হিসেবে একজন খেলোয়াড়কে বেছে নেয়া হয়। গত বছরটা বার্সেলোনার সাবেক তারকা মেসির জন্য ছিল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফল সময়। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত তিনি আর্জেন্টিনার হাতে তুলে দিয়েছেন  বিশ^কাপের শিরোপা। দোহায় অনুষ্ঠিত স্মরণীয় ফাইনালে মেসি দুই গোল করেছিলেন। এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক সত্বেও পেনাল্টিতে ফ্রান্সকে পরাজিত করে শিরোপা জয় করে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্ট সেরা হয়ে গোল্ডেন বল ট্রফি জয় করেন মেসি। সর্বোচ্চ আট গোল করে এমবাপ্পে পেয়েছিলেন গোল্ডেন বুট ট্রফি।
বর্ষসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘এই বছরটা আমাকে পাগল বানিয়ে দিয়েছে। আমি আমার স্বপ্নকে স্পর্শ করতে পেয়েছি যার জন্য ক্যারিয়ার জুড়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। দিনের শেষে এই ট্রফিটি হাতে পেয়েছি। আমার ক্যারিয়ারে এর থেকে সুন্দর সময় কখনো আসেনি। এটা সব ফুটবলারেরই স্বপ্ন থাকে। কিন্তু খুব কম খেলোয়াড়ই সেই স্বপ্ন সত্যি করতে পারে।’
গত দুই বছর বর্ষসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লিওয়ানদোস্কি। দুইবারই ৩৫ বছর বয়সী সাতবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসি সেরা তিনে ছিলেন।
এদিকে নারী বিভাগে সেরার পুরস্কার ধরে রেখেছেন পুটেলাস। গত বছরের প্রায় অর্ধেকটা সময় ইনজুরির কারনে মাঠের বাইরে থাকার পরেও সেরার তালিকায় কেউ তাকে পিছনে ফেরতে পারেনি। ব্যালন ডি’অর বিজয়ী ২৯ বছর বয়সী পুটেলাস এই তালিকায় পিছনে ফেলেছেন ইংল্যান্ডের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ বিজয়ী স্ট্রাইকার বিথ মিড ও যুক্তরাষ্ট্রের তারকা এ্যালেক্স মরগানকে।
গত বছর জুলাইয়ে গুরুতর হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া পুটেলাস বর্তমানে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় আছেন। ইনজুরির কারনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে স্পেনের হয়ে তার মাঠে নামা হয়নি। এর আগে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১১ গোল করেছিলেন। ফাইনালে অবশ্য তার দল লিঁওর কাছে পরাজিত হয়। কিছুদিন আগে পুটেলাস বলেছিলেন ইনজুরি কাটিয়ে এবারের মৌসুমে আবারো মাঠে ফিরতে তিনি আশাবাদী। কিন্তু জুলাই-আগস্টে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে অনুষ্ঠিতব্য ফিফা নারী বিশ^কাপে স্পেনের হয়ে তার খেলা নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে।
ফিফা বর্ষসেরার তালিকায় আর্জেন্টিনার বিশ^কাপ জয়ী দলটির আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে। বর্ষসেরা কোচ হিসেবে আর্জেন্টিনার লিওনেল স্কালোনি ও সেরা গোলরক্ষক হিসেবে পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বিশ^কাপে আর্জেন্টিনার হয়ে গোলবার সামলানো মার্টিনেজ পিছনে ফেলেছেন থিবো  কোর্তোয়া  ও বুনোকে। কোচের ক্যাটাগরিতে রিয়াল মাদ্রিদের কার্লো আনচেলত্তি ও ম্যানচেস্টার সিটির পেপ গার্দিওলাকে  পিছনে ফেলে সেরা হয়েছে স্কালোনি।
নারী ক্যাটাগরিতে সেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছে ইংল্যান্ডের ইউরো জয়ী ডাচ কোচ সারিনা উইগম্যান। আর সেরা নারী গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন ইংলিশ গোলরক্ষক ম্যারি এরাপস।
বর্ষসেরা গোলের জন্য পুসকাস অ্যাওয়ার্ড জেতেন মার্সিন ওলেক্সি। এই প্রথমবার পেশাদার ফুটবলারের বাইরে শারীরিক প্রতিবন্ধী কোনো ফুটবলারের হাতে উঠলো এই পুরস্কার। স্ক্র্যাচে ভর করে বাইসাইকেল কিকে অসাধারণ এক গোল করেছিলেন ওলেক্সি।

 

দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পুরস্কার হিসেবে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার মেসি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আর্জেন্টিনার ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী বনানীর ৫০-কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে আর্জেন্টিনার দূতাবাস উদ্বোধনীর অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো বলেন, আজ এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমি বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানাই। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আর্জেন্টিনার ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ঢাকায় দূতাবাস চালু করায় আর্জেন্টিনা সরকারকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে ঢাকায় আবার দূতাবাস চালুর ঘোষণা দিয়েছিল আর্জেন্টিনা। সে কথা রাখতেই দুদিনের সফরে সোমবার সকাল ৮টায় ঢাকায় পৌঁছেছেন সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো। এসময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাকে স্বাগত জানান।

বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার কোনো দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিস ছিল না। দিল্লির আর্জেন্টিনার দূতাবাস থেকেই ঢাকার সঙ্গে দেশটি সম্পর্ক বজায় রাখতো। একইভাবে আর্জেন্টিনায়ও বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিস নেই।

এক সময়ে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার একটি কূটনৈতিক মিশন ছিল। ১৯৭৪ সালে ঢাকায় আর্জেন্টিনার মিশন খোলা হয়। তবে, ১৯৭৮ সালে সে মিশনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে দিল্লির আর্জেন্টিনার দূতাবাস থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে দেশটি। আর ১৯৯২ সালে সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে আর্জেন্টিনায় বাংলাদেশের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং দূতবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আর্জেন্টিনা ফুটবলে বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন অব্যাহত থাকবে : আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আশাবাদ