22 Jan 2025, 10:58 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯৯ জন। এ নিয়ে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ৮৩০ ছাড়ালো।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনটি স্থানে হামলায় চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক আটকে রয়েছেন।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা এ হামলায় গাজায় মোট ৪৪ হাজার ৮৩৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ লাখ ছয় হাজার ৩৫৬ জন। এছাড়া অনেকে পাথরের নিচে আটকে রয়েছেন, ফলে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব নয়।

এদিকে, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস হয়েছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর এই প্রস্তাব পাসের পর এক বক্তব্যে বলেন, গাজা এখন মানবতার জন্য এক যন্ত্রণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে লাখ লাখ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে ও সেখানে এখন মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

স্লোভেনিয়ার জাতিসংঘে নিযুক্ত প্রতিনিধি বলেন, গাজা আর নেই, ধ্বংস হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি মানবতার জন্য একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া আলজেরিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর বলেন, ফিলিস্তিনের দুর্দশা নিয়ে চুপ করে থাকার জন্য বিশ্বকে বড় মূল্য দিতে হবে। সূত্র: আল জাজিরা

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৩০ ফিলিস্তিনি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি বলেছে, বিদেশি-মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে সিরিয়ার পতন হওয়ার পর সৃষ্ট অস্থিতিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশটির অবকাঠামো ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল।

এই বাহিনী এক বিবৃতিতে সিরিয়ার অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী সিরিয়ার আবাসিক ও সামরিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করছে এবং সিরিয়ার ভূমি জবরদখল করেছে।

এ ধরনের নগ্ন আগ্রাসন ও হামলার ব্যাপারে ‘বিস্ময়কর নীরবতা’ দেখানোর জন্য বিবৃতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করা হয়।

আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তাকে ইরান নিজের মৌলিক নীতি বলে মনে করে। সিরিয়ার ভবিষ্যত নির্ধারণ করার একমাত্র অধিকার দেশটির জনগণের রয়েছে এবং এই ন্যায়সঙ্গত ও বৈধ অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমাজকে সম্মান জানাতে হবে।

ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ইসলামি প্রতিরোধ ফ্রন্ট নিষ্ক্রিয় থাকবে না বরং আঞ্চলিক দেশগুলোর ভৌগোলিক অখণ্ডতা লক্ষ্য করে যেকোনো হামলা এবং এসব দেশকে খণ্ডবিখণ্ড করার যেকোনো প্রচেষ্টা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে রুখে দেবে।

তাহরির আশ-শামের নেতৃত্বাধীন বিদেশি মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বড় ধরনের সাফল্য অর্জনের পর গত রোববার সকাল নাগাদ রাজধানী দামেস্ক দখল করে নেয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে।

বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ইহুদিবাদী ইসরাইল, তুরস্ক ও কিছু পশ্চিমা দেশের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তাহরির আশ-শাম বিদ্যুৎ গতিতে সিরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বুধবার এক ভাষণে বলেছেন, সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে প্রতিবেশী একটি দেশের [তুরস্কের] সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু এর পেছনে মূল ষড়যন্ত্র ও চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল।

সিরিয়ার অবকাঠামো ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে আমেরিকা-ইসরাইল ; আইআরজিসি’র বিবৃতি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে সোমবার ইসরাইলি হামলায় নয় জন নিহত হয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে  এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলাকালে হিজবুল্লাহর কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রতিশোধ নিতে তারা এসব হামলা চালিয়েছে।

জেরুজালেম থেকেব এএফপি জানায়, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ উভয়ই সোমবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখোমুখি হয়। লেবাননে হাজার হাজার মানুষ হত্যা ও সীমান্তের উভয় দিকে ব্যাপক বাস্তুচ্যুত হওয়ায় যুদ্ধটির অবসান ঘটাতে বুধবার যুদ্ধ বিরতিটি কার্যকর হয়।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা লেবাননে হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে, কয়েক ডজন লঞ্চার আঘাত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরাইল দাবি করেছে, লেবানন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং হিজবুল্লাহর শত্রুতামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করবে।’

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে হামলায় হারিস গ্রামে প্রাথমিকভাবে পাঁচজন নিহত ও দু’জন আহত হয়েছে। তালুস গ্রাামে, আরও চারজন নিহত ও একজন আহত হয়েছে।
এর আগে, হিজবুল্লাহ জানায়, এটি ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যকার সীমান্ত এলাকার একটি বিতর্কিত দখলকৃত অংশ ‘কফার শোবার পাহাড়ে’ একটি ইসরাইলি অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে।

ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, হিজবুল্লাহ বিতর্কিত হার ডভ এলাকায় তাদের এক পোস্টের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

ওই হামলার পর, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহকে ‘গুরুতর লঙ্ঘনের’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং কঠোর জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে এবং হিজবুল্লাহর যেকোনো লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া জানাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তা যত ছোট বা গুরুতর হোক না  কেন।’

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

এর কিছুক্ষণ পরে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায় তারা লেবাননে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।

লেবাননের সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি দক্ষিণ লেবানন এলাকায় হামলার খবর দিয়েছে। ইসরাইলের সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকাটিতে হিজবুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করেছে ।

 

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি হামলায় ৯ জন নিহত

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি বলেছে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আদালত হুমকি এবং ভয়ভীতির মুখোমুখি হয়েছে।

হেগে আইসিসিভুক্ত সদস্যদের উদ্দেশে সংস্থার প্রেসিডেন্ট তোমোকো আকান বলেন, আদালত “জবরদস্তিমূলক ব্যবস্থা, হুমকি, চাপ এবং নাশকতার ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা ইতিহাসের একটি টার্নিং পয়েন্টে রয়েছি। আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক বিচার এখন হুমকির মুখে। মানবতার ভবিষ্যতও তাই। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তার আইনগত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাবে। এক্ষেত্রে কাউকে হস্তক্ষেপের সুযোগ দেয়া হবে না।”

গত ২১ নভেম্বর আইসিসি ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সেই সময় আদালত বলেছিল, ইসরাইল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে অবরোধ করে সেখানে হামলা চালিয়েছে এবং সেখানকার বেসামরিক লোকজনের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর ইসরাইলের অন্ধ সমর্থক আমেরিকা এই পরোয়ানা প্রত্যাখ্যান করেছে। এমনকি মার্কিন রিপাবলিকান দলের কোনো কোনো সিনেটর আইসিসি’র ওপর পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কে আইসিসি’র সভাপতি বলেন, কিছু কিছু নির্বাচিত কর্মকর্তা মারাত্মকভাবে হুমকি দিচ্ছেন এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি স্থায়ী সদস্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করছে। তিনি বলেন, “যদি আদালত ভেঙে পড়ে, তবে সমূহ বিপদ রয়েছে।”

 

নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর হুমকি আসছে ; আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি’র জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন আদালতের চিফ প্রসিকিউটর করিম খান।

গতকাল (শুক্রবার) আদালতের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নেতানিয়াহু ও ইয়োগ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করার জন্য ইসরাইলের পক্ষ থেকে যে আবেদন জানানো হয়েছে তাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। হেগভিত্তিক আদালতের আপিল চেম্বারের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান। করিম খান বলেন, আইসিসির আইনের আওতায় এই আবেদন আইনগত শর্ত পূরণ করে না।

তিনি উল্লেখ করেছেন, ইসরাইল যে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করছে তাতে এই পদ্ধতিগত তদন্তের বিষয়ে অভিযোগ ছাড়া আপিলের জন্য কোনো ‘গ্রহণযোগ্যতা’ নেই। করিম খান বলেন, রোম সংবিধির ৫৮ অনুচ্ছেদের আওতায় সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে ইসরাইল আদালতের এখতিয়ার নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। তিনি বলেন, আইসিসি যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা শুধু কোনো সিদ্ধান্ত নয় এবং এর বিরুদ্ধে রোম সংবিধির ৮২’র ১ অনেুচ্ছেদ অনুসারে সরাসরি আপিল গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো কারণেই প্রি-টায়াল চেম্বার থেকে ঘোষণা করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করার সুযোগ নেই।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরাইল আপিল চেম্বারে একটি আপিল দায়ের করে অভিযোগ করেছে, আইসিসির তদন্ত এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রক্রিয়াগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। একইসাথে আপিল নিষ্পত্তির সময় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করারও দাবি করেছে তেল আবিব।

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গত সপ্তাহে আইসিসি নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

আইসিসির আইন অনুযায়ী, হেগ-ভিত্তিক আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচার পরিচালনা করে না এবং মামলা শুরু করার জন্য আসামীদের অবশ্যই শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে হবে। সে কারণে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্টকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলে ইসরাইলের আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে হবে ; হেগের আদালতকে করিম খানের বার্তা

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার মধ্যরাতের পরপরই লেবাননের সাথে সীমান্ত ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি হামলায় ছয় জন নিহত হয়েছে।
হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এ হামলা চালানো হয়েছে।মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইসরায়েলি শত্রুরা লেবাননের দিক থেকে সিরিয়া ও লেবাননের মধ্যকার সীমান্ত ক্রসিং লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।’

দামেস্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি একথা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এ আগ্রাসনে দুই সৈন্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। হামলায় নিহত বাকিরা বেসামরিক নাগরিক। এ হামলায় শিশু, নারী ও সিরিয়ার আরব রেড ক্রিসেন্ট কর্মীসহ ১২ জন আহত হয়েছে।’

লেবাননের সীমান্ত ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি হামলায় ৬ নিহত

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লেবাননে যুদ্ধবিরতি আসন্ন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ব্যাপকভাবে যে খবর প্রচার করছে এবং হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কীভাবে রাজনৈতিক ও সামরিক ভারসাম্য ওলট-পালট করে দিয়েছে তার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন একজন আরব রাজনৈতিক ভাষ্যকার।

পার্সটুডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আব্দুলহামিদ আতওয়ান নামক প্রখ্যাত এই কলাম লেখক আরবি দৈনিক রাই আল-ইয়াওম পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন: মার্কিন ও ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো পড়লে আপনার কাছে মনে হবে, লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়েছেন। এখন এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করতে যেকোনো সময় লেবাননে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি আমোস হকস্টাইন বৈরুতের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ত্যাগ করতে পারেন।

এই আরব রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরো বলেন: হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা রোববার (২৪ নভেম্বর) ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব, হাইফা ও সাফেদ শহরের সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে অন্তত ২৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী ড্রোন নিক্ষেপ করে।  ভয়াবহ ওই হামলা থেকে বাঁচতে প্রায় ৪০ লাখ ইহুদিবাদী ভূগর্ভস্থ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ছুটে যায়। তেল আবিবের বেন গুরিয়েন বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হয় এবং ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরে যায়।

আতওয়ান আরো বলেন, হিজবুল্লাহর হামলায় যখন ইসরাইলি নাগরিকরা দিশেহারা এবং তাদেরকে প্রবোধ দেয়ার মতো কোনো বাণী-বক্তব্য নেতানিয়াহুর ঝুলিতে নেই তখন এসব মানুষকে শান্ত রাখার কৌশল হিসেবে ব্যাপকভাবে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির খবর প্রচার করা হচ্ছে।

এই আরব বিশ্লেষক আরো বলেন, যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে এ ধরনের ইতিবাচক খবর প্রচারের আরেকটি কারণ উত্তর ইসরাইলে বসবাসরত ইহুদিবাদীদের এই বলে আশ্বস্ত করা যে, তাদেরকে এখন যেমন প্রতিদিন বারবার হিজবুল্লাহর হামলার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যেতে হচ্ছে, যুদ্ধবিরতি হয়ে গেলে সে পরিস্থিতি আর থাকবে না বরং তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। তার মতে, লেবাননে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে একইসঙ্গে গাজায়ও যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে; তা না হলে ইসরাইলের অর্থনীতি অপমৃত্যু ঘটবে।

রোববারের হামলায় ইসরাইলের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর অ্যাশদোদে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এছাড়া, ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হিজবুল্লাহর হামলায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইহুদিবাদীরা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য আরো যেসব কারণে তাড়াহুড়ো করছে তা হলো, হিজবুল্লাহ যে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত অ্যাশদোদ শহরে হামলা চালিয়েছে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনা দিমুনায় হামলা চালানো সম্ভব।

এই আরব বিশ্লেষক বলেন: লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ এমন সময় ইসরাইল জুড়ে এমন ভয়াবহ হামলা চালায় যখন নেতানিয়াহু মিথ্যা দাবি করে বলেছিল, ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর ৮০% সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এই সংগঠন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।

আতওয়ানের মতে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে নেতানিয়াহুর সম্মতি এবং এ সংক্রান্ত খবর ফলাও করে প্রচারের ফলে বোঝা যায়, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে তেল আবিব। বিশেষ করে, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান চালিয়ে ইসরাইল তার কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।  হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করা, অথবা অন্তত দক্ষিণ লেবানন থেকে এই সংগঠনকে উত্তর দিকে হটিয়ে দেয়া ছিল ইসরাইলের স্থল অভিযানের ঘোষিত লক্ষ্য। কিন্তু এগুলোর কোনোটিই অর্জিত হয়নি।

লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরাইলের ২৪ নম্বর টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক জাভি ইয়াজাকেলি বলেছেন: যুদ্ধবিরতি মানে আমরা নতি স্বীকার করেছি।

ইসরাইলের কান নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার রাতে যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন তা বুধবার সকাল থেকে কার্যকর হবে।

ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনী গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে যা এখনও চলছে। এর জবাবে ইসরাইলের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে সমান তালে পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ।

 

যুদ্ধ-বিরতির অর্থ হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে ইসরাইলের পরাজয়ের স্বীকারোক্তি