অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গ্যাবনের অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী জেনারেল ব্রাইস এনগুয়েমা। এই জান্তা নেতা দেশটিতে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। খবর বিবিসির।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বক্তৃতায় তিনি সামরিক শাসন কবে শেষ হবে এ বিষয়ে কোনো তারিখ ঘোষণা করেননি।
সোমবার রিপাবলিকান গার্ডের লাল আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিহিত নতুন রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এই দেশপ্রেমিক পদক্ষেপটি আমাদের স্কুলের বইয়ে শেখানো একটি শিক্ষা হবে। কয়েক দিনের মধ্যে একটি নতুন সরকার গঠন করা হবে এবং নতুন নির্বাচনী আইন, নতুন দণ্ডবিধি এবং নতুন সংবিধানের ওপর গণভোট হবে।’
এনগুয়েমা আরও বলেছেন, তিনি নতুন সরকারকে সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে ‘বিলম্ব না করে ভাবতে’ নির্দেশ দিয়েছেন।
জেনারেল ব্রাইস এনগুয়েমা গত বুধবার আলী বঙ্গোর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন। তিনি দেশটিতে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরপরই রাষ্ট্রপতির পতন ঘটিয়ে তাকে গৃহবন্দি করেন।
অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে উল্লাসে মাতেন বেসামরিকরা। দেশের ক্ষমতা পরিবর্তনে আগ্রহী অনেকেই এই অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে কেউ কেউ বলছেন এনগুয়েমাও হয়তো বঙ্গো পরিবারের মতোই দীর্ঘ সময় দেশটি শাসন করবেন।
দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে গ্যাবন শাসন করছিল বঙ্গো পরিবার। আলী বঙ্গোর পিতা ওমর ২০০৯ সালে মারা যাওয়ার আগে ৪১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর ক্ষমতায় আসেন ছেলে আলী বঙ্গো।
জেনারেল তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় বঙ্গোর অভ্যন্তরীণ বৃত্তে কাটিয়েছেন এবং এমনকি তাকে আলী বঙ্গোর চাচাতো ভাই বলেও মনে করা হয়।
অভ্যুত্থানের পর গ্যাবনকে আফ্রিকান ইউনিয়ন থেকে স্থগিত করা হয়েছে। জাতিসংঘ এবং ফ্রান্স দেশটির অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছে।
উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কিম জং উন এবং পুতিনের মধ্যে বৈঠকটি রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে ভ্লাদিভোস্টক শহরে হতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমসের কূটনৈতিক সংবাদদাতা এডওয়ার্ড ওং বিবিসি নিউজ চ্যানেলকে জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল গত মাসের শেষের দিকে ভ্লাদিভোস্টক এবং মস্কোতে ভ্রমণ করেছে।
ওই প্রতিনিধি দলের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ছিলেন যারা উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার ভ্রমণ ও অন্যান্য প্রটোকলের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। এই বিষয়টি কিম জং উনের ভ্লাদিভোস্টক শহরে সফরের বিষয়ে শক্তিশালী ইঙ্গিত দেয়।
তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া তাদের কৃত্রিম উপগ্রহ এবং পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন কর্মসূচির জন্য মস্কোর কাছ থেকে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা চাইছে। এছাড়াও উত্তর কোরিয়া বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটি প্রায়ই ব্যাপক খাদ্যাভাবের মধ্য দিয়ে যায় এবং তারা রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্য সহায়তাও চাইছে।
উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এর আগেও রাশিয়াকে ইউক্রেনের যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছিল। তবে সেটি অস্বীকার করেছে পিয়ংইয়ং এবং মস্কো।
২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে উত্তর কোরিয়ায় যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জন এভারার্ড। তিনি বিবিসিকে বলেন, সম্ভাব্য সফরের বিষয়ে এতো প্রচার প্রচারণা হওয়া একটি বিষয় ইঙ্গিত করে যে, এখন এই সফর হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
কিম জং উন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে খুব উদ্বিগ্ন। তিনি তার গতিবিধি গোপন রাখার বিষয়ে বেশ সচেষ্ট। যদি এটা জানাজানি হয়ে যায় যে, তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে ভ্লাদিভোস্টকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাহলে তিনি সম্ভবত পুরো পরিকল্পনাই বাতিল করে দেবেন।
জন এভারার্ড বলেন, পিয়ংইয়ং জানে যে মস্কো যুদ্ধাস্ত্রের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছে যে দাম চাইবে তা পাবে। এই দাম চোখে ধাঁ ধাঁ লাগিয়ে দিতে পারে। উত্তর কোরিয়ার কাছে অস্ত্রের মজুদ থাকলেও তারা খুবই দারিদ্র্যপীড়িত অবস্থায় আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৯ সালে দুই নেতার শেষবার বৈঠক হয়েছিল যখন কিম ট্রেনে করে ভ্লাদিভোস্টকে এসেছিলেন। কর্মকর্তারা তাকে তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী রুটি ও লবণ দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। বৈঠকের পর পুতিন বলেন, কিম তার পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসতে চাইলে তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এই বৈঠকের অন্তত কয়েক মাস আগে ভিয়েতনামে কিম এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে একটি শীর্ষ বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু সে বৈঠকে তখন তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি।