অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পেন্টাগনের হিসাবে ত্রুটি হওয়ায় ইউক্রেনে পাঠানো গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামের দাম প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বেশি দেখানো হয়েছে। মার্কিন সিনেটের এক কর্মকর্তা ও দুই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ভুল অনুমান ইউক্রেনের জন্য রাশিয়ান বাহিনীকে মোকাবিলায় আরও অস্ত্র প্রেরণের পথও উন্মুক্ত করতে পারে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (১৮ মে) জানিয়েছেন, ইউক্রেনে মার্কিন মজুদ থেকে পাঠানো অস্ত্রের দাম বাড়ার কারণে এই ভুল অনুমান করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনেটের কর্মকর্তা ও কর্মকর্তারা রয়টার্সের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তাদের একজন বলেছেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে সরবরাহ করা সরঞ্জামের দামে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছি। পেন্টাগনের ভুল হিসাবের বিষয়টি বৃহস্পতিবার কংগ্রেসকেও জানানো হয়েছে।’
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে সরবরাহ করা অস্ত্রের অতিরিক্ত ব্যয় ৩০০ কোটি ডলার অতিক্রম করতে পারে। পেন্টাগন এখন বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে। পেন্টাগন ইউক্রেনকে সরবরাহ করা অস্ত্রের প্রকৃত মূল্যের পরিবর্তে বর্তমান দাম ব্যবহার করার সময় ভুলটি করা হয়েছিল।
২০২১ সালের আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে তার মজুদ থেকে প্রায় দুই হাজার ১১০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করেছে। সরকারি ব্যয় ও ঋণ নিয়ে বাইডেন প্রশাসন ও কংগ্রেসের মধ্যে লড়াইও তীব্র হচ্ছে। এদিকে, অস্ত্রের দামের এই মাত্রা বৃদ্ধি ইউক্রেনের জন্য আরও অর্থ বরাদ্দে কংগ্রেসের অনুমোদনের জন্য বাইডেন প্রশাসনের অনুরোধকে বিলম্বিত করতে পারে।
সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য রজার উইকার বলেন, ‘ইউক্রেনে পাঠানো অস্ত্রের দাম নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগ যা করেছে তা একটি বড় ভুল। পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয় আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা উচিত। একতরফাভাবে সামরিক সহায়তার হিসাব পরিবর্তন করা মূলত প্রতারণার একটি প্রচেষ্টা এবং সেই লক্ষ্যের প্রতি অবজ্ঞা।’
২০২১ সালের আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে তার মজুদ থেকে প্রায় দুই হাজার ১১০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
৩৭ প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটি প্যাকেজের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে হামারস রকেট লঞ্চার, ট্যাংক বিধ্বংসী জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র ও প্যাট্রিয়ট ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দিয়েছে।
ঊর্ধ্বতন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, মেরিন এই বাহিনীগুলো অস্ত্রের বর্তমান দামের উপর ভিত্তি করে গণনা করে।’ ৩১ মে ফোর্সের চিফ অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছে একটি মেমো প্রেরণ করা হয়েছিল, যাতে বিদ্যমান প্রবিধান অনুসারে মূল্য নির্ধারণের জন্য কী পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এখন জানিয়েছেন, ইউক্রেনে পাঠানো শত শত বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্রের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করতে সময় লাগবে। উদাহরণস্বরূপ, হভিৎজার কামানের ১৫৫ মিমি শেল; গত কয়েক দশক ধরে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রতি বছর এই শেল পেয়ে আসছে।
এর মধ্যে দেড় লাখেরও বেশি শেল ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি বুলেটের বর্তমান বাজার মূল্য ৮০০ ডলার। তবে এসব শেলের প্রকৃত মূল্য গড়ের চেয়ে অনেক কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
Leave a Reply