অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরালো করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটিতে সফরে গিয়ে এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র থেকে অব্যাহত আর্থিক সহায়তা চেয়ে বলেন, “আপনাদের অর্থ কোনো চ্যারিটি নয়। এটা হচ্ছে বৈশ্বিক গণতন্ত্র ও নিরাপত্তায় বিনিয়োগ।”
জেলোনস্কি দেশটির কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। যেখানে তিনি যুদ্ধের নানা দিক তুলে ধরেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরালো করতে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।”
জেলেনস্কি বলেন, “ইউক্রেনের শহরগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়া সব কিছু ব্যবহার করছে। কিন্তু ইউক্রেন তার অবস্থান ধরে রাখবে ও আত্মসমর্পণ করবে না।”
তিনি আরও বলেন, “নৃশংস যুদ্ধ চলা স্বত্ত্বেও ইউক্রেনবাসী এই বছর বড় দিন উদযাপন করবে। বিদ্যুৎ না থাকলেও নিজেদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের আলো নিভে যাবে না। ইউক্রেন নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে এই বলে জেলেনস্কি তার বক্তব্য শেষ করেন।”
এদিকে, জেলেনস্কি যেসময় যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন ঠিক তখন রাশিয়ার সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়া দায়ী নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, এই সংঘাত তৃতীয় পক্ষ দেশগুলোর নীতির ফল এবং রাশিয়ার নীতির কারণে এমনটি ঘটেনি।
ভাষণে পুতিন বলেন, তিনি এখনও ইউক্রেনকে একটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করেন।
পুতিন যে নীতির কথা বলছেন সেটি হলো রাশিয়াকে ঘিরে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর সম্প্রসারণ। তবে রাশিয়ার এই বিষয়ে উদ্বেগ পশ্চিমারা উড়িয়ে দিয়েছে একাধিকবার।
পুতিন দাবি করেছেন, পশ্চিমারা ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর ব্রেনওয়াশ করছে। তিনি বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে ভালো প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। তাদেরকে ঋণ ও সস্তায় জ্বালানি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু তা কাজে আসেনি।”
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমাদের অভিযুক্ত করার মতো কিছু নেই। আমরা সব সময় ইউক্রেনীয়দের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে দেখেছি এবং আমি এখনও তা ভাবি। এখন যা ঘটছে তা একটি ট্র্যাজেডি। কিন্তু আমরা এজন্য দায়ী না।”
সামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি দেওয়া ভাষণে পুতিন অঙ্গীকার করেছেন রাশিয়ার তথাকথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ২০২৩ সালেও অব্যাহত রাখার।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মানবিক, আর্থিক ও নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছে। বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের তুলনায় যা অনেক বেশি।
সূত্র: সিএনএন
Leave a Reply