অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন করলো ভারতীয় সেনাবাহিনী। শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদরদপ্তর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে দিনটি উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে ছিল নানা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা মিলিয়ে ৬০ জনের একটি প্রতিনিধি দল। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশের বীর প্রতীক ও ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির।
এছাড়া বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পূর্বাঞ্চল শাখার শীর্ষ কর্মকর্তারা।
শুরুতেই ফোর্ট উইলিয়ামের মূল ফটকের কাছে অবস্থিত বিজয় স্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয় ভারতের তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে।
এছাড়া কোলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মো. মাহবুবর রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (আইপিএস), ভারতের সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) অরূপ রাহা। সবশেষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর. পি কলিতা।
এরপর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে সেনাবাহিনীর মাঠে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সম্বলিত একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর পি কলিতা বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতই প্রথম বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ-ভারত এই দুই রাষ্ট্র কেবল এক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ভাগাভাগি করে না, উভয় রাষ্ট্রই এক চমকপ্রদ ত্রিপাক্ষিক সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে।
অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে একাত্তরে যুদ্ধ করেছি। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসার সময় বেশ কিছু তথ্য নিয়ে এসেছিলাম। এ ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছি। যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের আত্মত্যাগ দেখেছি, রক্তের স্রোত দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘদিন ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তাই ধীরে ধীরে দেখছি যে ভারতীয় সেনাবাহিনী খুবই দক্ষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। সময়ের প্রয়োজনে তারা নিজেদের আরও বলিয়ান করেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর আথিয়তায় মুগ্ধ এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে শ্রদ্ধা সেটা আমরা সঠিকভাবে উপভোগ করি।
এদিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন হচ্ছে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে। এই উপলক্ষে সেখানে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। এছাড়া হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ‘মুজিব চিরঞ্জীবী’ মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
Leave a Reply