অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : একজন বিশ্লেষকের মতে,ইসরাইলি সেনাবাহিনী এবং অবৈধ এ দেশটির প্রতি যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন না থাকত, তাহলে নেতানিয়াহুর একার পক্ষে গাজাসহ এ অঞ্চলের কোথাও এভাবে অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না।
পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর সম্পর্ক ও সহযোগিতারর বিষয়টি বিশ্লেষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে,সাবের গুল আম্বারি দৈনিক ‘ইরানি আরমান’ পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে এ প্রসঙ্গে লিখেছেন:
১. দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলার মাধ্যমে নেতানিয়াহু আমেরিকাকে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে টেনে আনতে চায়…
২. বৈরুত এবং তেহরানে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে,নেতানিয়াহু আমেরিকাকে ইরানের সাথে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে টেনে আনতে চায়…
৩. যুদ্ধ ও গণহত্যা অব্যাহত থাকা এবং আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার একমাত্র কারণ নেতানিয়াহু …
মোটকথা, নেতানিয়াহু আমেরিকাকে যুদ্ধে টেনে আনার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি আমেরিকার সমর্থন ছাড়া নেতানিয়াহু ধ্বংস হয়ে যাবে।
আমেরিকার জন্য রেডলাইন হচ্ছে ইসরাইল। অর্থাৎ আমেরিকা যেকোনো মূল্যে ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখতে চায় এবং এ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদ কিংবা কারো ব্যক্তিগত অভিলাষ আমেরিকার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, গাজা যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় এবং এখনো যুদ্ধবিরতি না হওয়ার পেছনে নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত ইচ্ছা অর্থাৎ তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা। নেতানিয়াহু আসন্ন নির্বাচনে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকা কিংবা যুদ্ধবিরতি না হওয়ার পেছনে এটাই একমাত্র কারণ নয়। অন্য কারণও রয়েছে।
গাজাসহ পশ্চিম এশিয়ার ব্যাপারে নেতানিয়াহুর নীতিগুলোকে ইসরাইলি সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে এবং এ বিষয়টি তার জনপ্রিয়তাকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিক থেকে তিনি প্রথমবারের মতো তার প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্তেজকে ছাড়িয়ে গেছেন। গাজায় সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের পর আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরাইলের জনমত গড়ে ওঠার বা বিরোধিতার প্রধান কারণ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা নয় বরং এর প্রধান কারণ অভ্যন্তরীণ সমস্যা, সাত অক্টোবরের হামলা এবং কখনও কখনও যুদ্ধ অব্যাহত রাখা নিয়ে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ। উদাহরণস্বরূপ, নেতানিয়াহুর বিরোধীরা মনে করে যে জিম্মিদের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া উচিত এবং তারপরে ইসরাইল সরকার ভবিষ্যতে যখনই চায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে পারে। তবে নেতানিয়াহু এর বিরোধিতা করেছে।
তবে নেতানিয়াহুর রাজৈতিক ভবিষ্যত যাই হোক না কেন তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমেরিকা যে কোনো মূল্যে ইসরাইলের ব্যক্তি রাজনীতিবিদ নয় বরং ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ কারণে বাইডেন প্রশাসনের সাথে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কিছু বিষয়ে মতবিরোধের কথা শোনা গেলেও আমেরিকা ইসরাইলের জন্য অস্ত্রের চালান পাঠিয়ে চলেছে। কেননা ইসরাইল টিকে থাকলে আমেরিকাও এ অঞ্চলে টিকে থাকবে বলে তারা মনে করছে। সৌজন্যে : পার্সটুডে
Leave a Reply