অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মামলা পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন বাদী-বিবাদীসহ বিচার সংশ্লিষ্টরা।
থানায় কোনো মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে চার্জশিট, ঘটনার বর্ণনা, আসামি গ্রেপ্তার, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি, জব্দ তালিকাসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেই নথিকে বলা হয় কেস ডকেট বা সিডি। সেটি সংরক্ষিত থাকে সরকার নিয়োজিত পাবলিক প্রসিউকিউটার বা পিপিদের কাছে। প্রয়োজনের সময় এ ডকেট স্বাক্ষী দিতে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা দেখে নেন যাতে জেরার সময় হুবহু জবাব দিতে পারেন।
কিন্তু গত সোমবার চট্টগ্রাম আদালত ভবনের নথি খুঁজে না পেয়ে বিচারকের নির্দেশে ১০ বছর আগের একটি মামলার সাক্ষ্য দেয়ার সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে।
খুলশি থানার ওসি সন্তোষ শর্মা বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে মামলার কেস ডকেটটি পাইনি। যার কারণে বিচারক মহোদয় সন্তুষ্ট হয়েছেন।”
নিরুপায় হয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুর্নিদিষ্ট কয়েকটি মামলার তথ্য দিয়ে ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে ডিসেম্বর মাসে।
সিএমপি এডিসি (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান বলেন, “এটি নিয়ে কোনো সদুত্তর আমরা পাইনি যে, কোথায় ডকেটগুলো যাচ্ছে বা কি অবস্থায় আছে।”
চিঠিতে জানানো হয়, ঢাকা, মাগুরা, ফেনী, গাজীপুর থেকে এসআই ও পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে এসে কেস নথি ছাড়াই সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন, ডাকাতি প্রচেষ্টার মতো গুরুতর এসব মামলা এখন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, মহানগর দায়রা জজ ও সিএমএম আদালতে বিচারাধীন।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, “আমাদের সহকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, সাক্ষ্য দিতে এসে মামলার সিডি যথাসময়ে তাদের কাছে উপস্থাপিত হয়নি বা খুঁজে পাননি। সেক্ষেত্রে সাক্ষ্যটা অনেক সময় অসম্পূর্ণ থেকে যায়।”
এসব নথি গায়েবের পেছনে কোন একটি চক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, “মূল ফাইল থেকে অনেকে সেট নিয়ে গেছে, এটা নিয়ে মামলা হয়েছে। আমাদের বাঙালিদের মধ্যে এভাবে হচ্ছে। কিন্তু আপনারা যেভাবে চিন্তা করছেন সেভাবে নয়।”
সাধারণ ও অসহায় বিচারপ্রার্থীদের সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য মামলার নথি যথাযথভাবে সংরক্ষণের উপর জোর দিয়েছেন আদালত অঙ্গণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply