জাফিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সুদে টাকার জন্য স্বামীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও পরিবারের অন্যদের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে নাসিমা বেগম নামের এক বিধবা নারী।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ভুক্তভোগি ওই নারী। নাসিমা উপজেলা কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের নিত্যানন্দি গ্রামের মৃত আতিকুর রহমানের স্ত্রী। এসময় তার সাথে মেয়ে ও ৭ বছরের ছেলে উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে নাসিমা বেগম জানান, আমার স্বামী মৃত আতিকুর রহমান জীবিত অবস্থায় সংসারিক প্রয়োজনে একই গ্রামের মৃত অন্তেষ আলীর স্ত্রী রাবেয়া বেগমের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করেন। জীবিত অবস্থায় আমার স্বামী ও আমি বিভিন্ন সময়ে পরিশোধ করিতে থাকি। ৩০ হাজার টাকা নিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। তারপরও নগদ গ্রহন করা ৩০ হাজার টাকা আর পরিশোধ হয় না। ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বুধবার বেলা ১১ টার দিকে রাবেয়া বেগম আমার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এবং কথাবার্তার এক পর্যায়ে রাবেয়া বেগমের ছেলে আব্বাসসহ আরও দুই তিনজন আমার স্বামীকে মারধর ও গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়। এর পরদিন বৃহস্পতিবার আমি অসুস্থ্য বড় ভাবিকে নিয়ে বারোবাজার আছিয়া ক্লিনিকে যায়। আমার স্বামী আতিকুর রহমান বাড়িতে ছিলেন। আসামীগন পরিকল্পনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার বাড়িতে গিয়ে আমার স্বামী মৃত আতিকুর রহমানের সাথে সুদের টাকার বিষয়ে গালিগালাজ করে।
এসময় আসামী আব্বাস আলী, পারভিনা বেগম ও মোছা রেক্সোনা আমার স্বামীকে বলে “তুই ঘর জামায় হিসেবে শশুর বাড়িতে পড়ে আছিস, সুদে টাকা দিতে পারিস না, লজ্জা করেনা। তুই এবং তোর বউ বিষ খেয়ে মর”। এসময় আসামী আব্বাস বিষের বোতল আমার স্বামীর হাতে দিয়ে বলে এই বোতলে বিষ আছে খেয়ে মর। বিষ খেয়ে মর আমরা দেখি। এ সময় আমার স্বামী আতিকুর রহমান লজ্জা ও ঘৃনায় অপমান সহ্য করতে না পেরে আসামী আব্বাসের দেওয়া বিষ পান করে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনার পর কালীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নিতে অপারগতা জানায়। পরে ঝিনাইদহ আদালতে মামলা করি। সংবাদ সম্মেলনে নাছিমা বেগম আরো বলেন, বর্তমানে মামলা চলমান আছে। বর্তমানে আমি আমাার তিন সন্তানকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমি খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। আসামীরা আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে ভয় ভিতি দেখাচ্ছে। রাতে আমি ঘরে ঘুমিয়ে থাকলে আসামীরা আমার টিনের ঘরের উপর ইটপাটকেল মারে। আমার ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করে। আমি আমার মাছুম বাচ্ছাকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে রাত পার করি। এমনকি আসামী আব্বাস বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে তারা আমাকেও শেষ করে দিবে।
Leave a Reply