17 Nov 2024, 06:50 pm

ঝিনাইদহের তেঁতুলতলা-নলডাঙ্গা সড়কে নারিকেল গাছের সৌন্দর্য্য সৃষ্টিতে যার অবদান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

জাফিরুল ইসলাম : অপরূপ সৌন্দর্য্য কে না উপভোগ করতে চান ? মানুষ, পশু-পাখিসহ সৃষ্টিকুলের সবাই  বসবাস ও ঘোরাঘুরির উপযুক্ত পরিবেশ খোঁজে। নয়নাভিরাম দৃশ্য হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ করে  মুগ্ধতা ছড়ায়। বিচ্ছন্ন হৃদয় জোড়া লাগে। পাথর হৃদয়েও ঘর বাঁধে ভালোবাসা।

ঝিনাইদহে এমন মুগ্ধতা ছড়ানো সড়ক হচ্ছে তেঁতুলতলা থেকে নলডাঙ্গা রাস্তা।  বর্তমান সড়কটি আলোচনায় এসেছে প্রশস্ত পিচের রাস্তা ও সারি সারি নারিকেল  গাছের কারণে। কিন্তু ঝিনাইদহে তো সড়ক কতোই আছে, সেখানে তো কেউ পরিবার  পরিজন বা প্রেমিক প্রেমিকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে যান না। নলডাঙ্গা সড়কের সবুজ  নারিকেল গাছ প্রশস্ত রাস্তাটিতে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। তাইতো বিকাল হলেও শহরের  মানুষ সজিব নিঃশ্বাস আর গ্রামীণ পরিবেশকে উপভোগ্য করে তুলতে ছুটে যান  ঝিনাইদহ শহর থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দুরে নলডাঙ্গা সড়কে। ছায়াবিথী  সবুজ মাঠ আর নির্জন প্রকৃতি প্রেমিক হৃদয়কে যুগলবন্দি করতে মোটেও সময়  নেয় না। কিন্তু এই অপরূপ সৌন্দর্য্য বিলানো চমৎকার পরিবেশ যিনি গড়ে তুলে  স্মরণীয় হয়ে আছেন সেই মানুষটির পরিচয় কেউ জানেন না। প্রত্যেকটি সত্য  উদঘাটনে যেমন উপলক্ষ দরকার হয়, তেমনটি এই সড়কের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির মহানায়ক  হলেন নলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত ছবেদ  আলী বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আলাউদ্দীন। তার হাতের ছোঁয়ায় তেঁতুলতলা থেকে  নলডাঙ্গা সড়কটি আজ মানুষের কাছে এতো জনপ্রিয় ও সৌন্দর্য্যমন্ডিত।

চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন ১৯৫১ সালে জন্ম গ্রহন করেন এক সম্ভান্ত পরিবারে। তার পিতাও  ছিলেন চেয়ারম্যান। পরিবারটি এলাকায় জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী জনহিতকর কাজের জন্য।

১৯৯২ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আলাউদ্দীন পরের বছর ১৯৯৩ সালে নলডাঙ্গা  সড়কে ২৫০০ নারিকেল গাছ রোপন করেন। পরিচর্চা ও যেত্নেন পর মাত্র ৭০০ নারিকেলগাছ  বেঁচে ছিল। গাছ লাগোনর পর দৃশ্যমান হতে থাকে। পত্রপল্লবে বিকশিত হতে তাকে শত  শত নারিকেরগাছ। এক সময় মাঠের কৃষক আর রাখালের ছায়া হয়ে দাড়ায় গাছগুলো।  প্রায় ২৯ বছর পর সৌন্দর্য্য প্রেমিকদের নজরকাড়ে নারিকেলের সারি সমৃদ্ধ ছায়াঘেরা  সড়কটি। স্থানীয় মসজিদ কমিটি নারিকেল গাছগুলো দেখভাল করছেন। আলাউদ্দীন  জানান, ১৯৯২ ও ২০১২ পর্যন্ত তিনি ১৪ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  চেয়ারম্যান না হলেও ২০২২ সালে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে চার কিলোমিটার জুড়ে  তালের বীজ বপন করেন। এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও স্কুল উন্নয়নে তার অবদান  রয়েছে। এলাকায় করেছেন ব্রীজ, কালভার্ট ও গ্রামীন সড়ক। এখনো তিনি ছুটে  চলেন এলাকার মানুষের কল্যানে। তার হাতে লাগানো নারিকেল গাছগুলো প্রকৃত  প্রেমিকদের নজর কাড়ায় তিনি উচ্ছাসিত ও গর্বিত। তিনি বলেন প্রতিটি  গ্রামীণ সড়কে এ ভাবে গাছ রোপন করলে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা জাগ্রত হয়। মলি  খাতুন (ছদ্ম নাম) নামে এক প্রেমিকা ঘুরতে আসেন এই সড়কে। তার মতো অনেকেই নারিকেল গাছের নিচে কেউ বা বিশাল প্রশস্ত মাঠের ধানের আইলে বসে গল্প  করে সময় কাটাচ্ছেন। তারা এমন পরিবেশ দেখে খুবই মুগ্ধ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য  নিয়ে সজিব হোসেন নামে এক যুবক কবির ভাষায় বলে ওঠেন, “প্রকৃতির উদার দান  মানুষের তরে, হাজারো ডালিতে তার রূপের সৌন্দর্য ঝরে, চর্মচক্ষুর স্বার্থকতা প্রান  ভরে, প্রাকৃতির সান্নিধ্য যেনো তারই তরে”।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2638
  • Total Visits: 1251032
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৫ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৬:৫০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018