নিজে ক অক্ষর গোমাংস, কিন্তু আর্ট-কালচারের প্রতি তাঁর বিরাট টান। সেই টান থেকেই তিনি গ্রেট বেঙ্গল অপেরার মালিক। ফিরিঙ্গিদের সঙ্গে ‘কমিশনের ব্যবসা’ আর পাটের দালালি করে বেশ পয়সা করেছেন বীরকৃষ্ণ দাঁ। থিয়েটারের এই দলটি সধবার একাদশী মঞ্চস্থ করার পর বীরকৃষ্ণের মনে হলো, এই নাটক ‘সায়েবদের গাল দিয়েচে’, অতএব দীনবন্ধু মিত্র নাটক লিখতে জানেন না। তিনি ঠিক করলেন, নিজেই কলম ধরবেন। দলের নাট্য নির্দেশক কাপ্তেন বাবু বীরকৃষ্ণকে ঠেস মেরে বললেন, ‘কাউকে ভাড়া করে রেখে দিন, সে-ই আপনার হয়ে লিখে দেবে।’ এই ঠেস মারায় বীরকৃষ্ণের কিছু আসল-গেল না। তিনি উল্টো খুশি হয়ে বললেন, ‘ভালো আইডিয়া দিয়েছেন তো! পয়সা দিয়ে মাল রাখব; বেছে বেছে ভালো মালই রাখব। তা, কাকে রাখা যায় বলুন তো? খরচ পড়বে কত?’ সেখানে থাকা একজন বললেন, ‘আপনি কাকে রাখবেন তার ওপর খরচাপাতি নির্ভর করছে। এই ধরুন, আপনি যদি কবি লর্ড বায়রনকে রাখতে চান তো তাঁর রেট এক রকম…।’ বীরকৃষ্ণ তাঁকে থামালেন; লর্ড বায়রনকে তাঁর পছন্দ হলো না।
বীরকৃষ্ণ কৃষ্ণকান্তের উইল-এর কাহিনি এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলেন। তিনি জানালেন, এই ‘গপ্পের’ লেখককে তিনি ‘রাখতে’ চান। অর্থাৎ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে তিনি ভাড়াটে লেখক রাখতে চান। কাপ্তেন বাবু বীরকৃষ্ণের আস্পর্ধা দেখে ভিরমি খেলেন। তিনি বীরকৃষ্ণকে বললেন, ‘কথাটা তাঁর (বঙ্কিম) কাছে একবার পেড়ে দেখতে পারেন। তবে দেখবেন, লোকটা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তো, শেষে না আবার গুলি টুলি ঝেড়ে বসে।’ যক্ষ্মাক্লিষ্ট বীরকৃষ্ণ কাশতে কাশতে বললেন, ‘টাকার সামনে অমন অনেক বন্দুকের নল মাটির সঙ্গে মিশে গেছে কাপ্তেন বাবু!’ তারপর তাচ্ছিল্যভরে দুহাতের দশটা আঙুল মেলে ধরলেন: ‘আমার এই দশ আঙুলে দশটা হীরের আংটি। এর যেকোনো একটা দিয়ে আপনাদের ওই সাহিত্য-ফাহিত্য সব কিনে নিতে পারি।’
উৎপল দত্তের টিনের তলোয়ার নাটকের বীরকৃষ্ণ দাঁর ভূত আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘাড়ে চেপেছে। বীরকৃষ্ণের মতোই তারা এখন ‘সম্মানীর’ বিনিময়ে ‘ভালো কলামিস্ট’ খুঁজছে। বিদেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরা উল্টোপাল্টা প্রচার চালাচ্ছেন,তাঁদের মোকাবিলা করা এবং বিশে^ সরকারের ভালো ভালো দিক তুলে ধরার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়েছে। এর জন্য তারা ‘অভিবাসী কূটনীতি’ নামে নতুন একটি অধিশাখা করছে। এই অধিশাখা দেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক প্রবন্ধ,অনুচ্ছেদসহ নানা ধরনের লেখা’ প্রকাশ করবে।
সরকারি কাজে টাকাপয়সার অভাব কোনোকালে হয়নি, এবারও হবে না। তবে সমস্যা হলো, ‘ভালো’ কলামিস্ট পাওয়া যাচ্ছে না। পয়সা দিয়েও বীরকৃষ্ণের মতো ‘বেছে বেছে ভালো মাল’ কেনা যাচ্ছে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগামী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সরকারের পক্ষে প্রচার চালাতে যে টাকাটা খরচ করবে, তা আসবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। অর্থাৎ পাবলিকের টাকায় ক্ষমতাসীন দলের প্রচার। পাবলিকের টাকায় ভাড়া করা কলামিস্ট দিয়ে শিখিয়ে দেয়া কথা লেখালে, যিনি লিখবেন, তিনিও হয়তো লেখার সময় মনে মনে করুণামিশ্রিত কণ্ঠে বলতে থাকবেন,‘নিজেরে করিতে গৌরব দান/ নিজেরে কেবলি করি অপমান’।
সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে,কলাম লিখে নেয়ার বিষয়টি কি একেবারেই নতুন? এই কাজ পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো অহরহই করে থাকে। কখনো গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার নামে, কখনো মানবাধিকার রক্ষার নামে বা কখনো কর্তৃত্ববাদী শাসন অবসানের নামে। এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে গবেষণালব্ধ বোমাটি ফাটিয়েছেন আমেরিকার কার্নেগি মেলন বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক পোস্ট ডক্টরাল গবেষক ও বর্তমানে হংকং বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.ডব লেভিন। তিনি তার ক্যামব্রিজ বিশ^বিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত সাড়াজাগানো বই মেডিং ইন দ্য ব্যালট বাক্সে দেখিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ উত্তরকাল (১৯৪৬) থেকে নিকট অতীত পর্যন্ত (২০০০), ৬০টি দেশের ১১৭টি জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল। তবে তিনি ২০১৬ সালের আমেরিকার জাতীয় নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টিও দেখিয়েছেন। লেভিনের তথ্যমতে, যেসব দেশের নির্বাচনে জোরালো হস্তক্ষেপ ছিল, তার মধ্যে চিলি, গুয়াতেমালা, হায়তি, জুগোসøাভিয়া, সার্বিয়া, কেনিয়া, ইতালি, ইরাক অন্যতম। এমনকি ইসরায়েলের মতো দেশেও নির্বাচনী হস্তক্ষেপ হয়েছিল। বিদেশি হস্তক্ষেপকারীদের তালিকায় যেসব পরাশক্তির নাম দেখা যায় তাদের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া), ব্রিটেন এবং ফ্রান্স। যুক্তরাষ্ট্র একাই ১১৭টি হস্তক্ষেপের নির্বাচনের মধ্যে ৮১টি জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপের কৃতিত্বের দাবিদার! যেটি মোট হস্তক্ষেপকৃত নির্বাচনের প্রায় ৭০ ভাগ। এক্ষেত্রে তারা যে পদ্ধতি বেছে নেয় তা হলো- ক্ষমতাসীন সরকার বা দল পছন্দের হলে তাদের বিজয় নিশ্চিত করা। আর ক্ষমতাসীন দল বা প্রার্থী অপছন্দের হলে বিরোধী দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করে নিয়ে আসা। ক্ষমতাসীন অপছন্দের দল বা শাসককে সরাতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা দুটি কৌশল গ্রহণ করে। একটি কোভার্ট স্ট্রাটেজি অপরটি ওভার্ট স্ট্রাটেজি। কোভার্ট স্ট্রাটেজির আওতায় সবচেয়ে ভয়ংকর কাজটি হচ্ছে- হত্যা, ক্যু, হেলিকপ্টার বা বিমান দুর্ঘটনা ইত্যাদির মাধ্যমে হত্যা করা বা ক্ষমতাচ্যুত করা। সবচেয়ে সহজ কোভার্ট স্ট্রাটেজি হচ্ছে, অপছন্দের দল বা শাসকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রবাসী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও ব্যবহার করা। এটি করা হয় দুটি উদ্দেশ্যে প্রথমত, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। দ্বিতীয়ত, দেশে সরকারবিরোধী জনমতকে উসকে দেয়া। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বছর কয়েক আগে এমন পরিস্থিতিরই মুখোমুখি হয়েছিলেন। পাকিস্তানের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অভিজ্ঞতাও একই রকম। প্রবাসীদের ব্যবহার করে সরকারবিরোধী কর্মকান্ড চালানোতেও রয়েছে চমক। বিশেষ বিশেষ সময়ে পশ্চিমা দেশের থিংক ট্যাংক/চিন্তন প্রতিষ্ঠান, বিশ^বিদ্যালয় বা উন্নয়ন সহযোগীদের দ্বারা সেমিনারের আয়োজন করা হয়। আগে থেকে নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের দ্বারা গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অপছন্দের সরকার বা দলকে চাপে ফেলার মতো তথ্য উপস্থাপন করানো হয়। আবার নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সংশ্লিষ্ট অপছন্দের সরকারের বিরুদ্ধে টানা কয়েক কিস্তি লেখাও প্রকাশ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
লেখার বিনিময়ে তারা কীভাবে লাভবান হচ্ছেন,অনেকের লেখাতেই সে বিয়য়টি এসেছে। যে তালিকায় রয়েছেন ড.ডেভিড রবারেজ বা ড.ডেভিড সিমারের মতো বিখ্যাত লেখক থেকে শুরু করে, স্টিভেন হাল বা জনসনের মতো ব্যক্তি। এদের কারো কারো রয়েছে তিন দশকজুড়ে সিআইয়ের মতো সংস্থায় কাজ করার অভিজ্ঞতা। সরাসরি অর্থের বিনিময়ে কেউ লেখেন এমনটি নয়। তবে কারো কারো বিশ^বিদ্যালয়ের টেনিউর প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোর ভূমিকা থাকে। কেউ কেউ বিভিন্ন রক্ষণশীল থিংক ট্যাংকের ফেলো হওয়ার সুযোগ পান। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন রক্ষণশীল ফান্ডিং বডির বিশেষ গবেষণা বা বিশেষ তহবিল পেয়ে থাকেন তৃতীয় বিশে^র গবেষণা করার জন্য।
নাগরিক সমাজকে সংঘটিত করার জন্যও কেউ কেউ তহবিল পেয়ে থাকেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট কলামিস্ট গবেষক তৃতীয় বিশে^র কোনো মানবাধিকার, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে প্রধান গবেষক হিসেবে দেখিয়ে প্রকল্পের অর্থ সহায়তা পেয়ে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি রিপোর্টার স্কট সেন তার ১৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৮ তারিখের প্রতিবেদনে দেখিয়েছেন কীভাবে বিভিন্ন রক্ষণশীল থিংক ট্যাংক/ফাউন্ডেশন বিশ^ব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষাকারীদের পেছনে অঢেল টাকা খরচ করে। পশ্চিমা বিশেষ বিশেষ এজেন্সির অর্থই বিভিন্ন হাত ঘুরে ওই সব রক্ষণশীল ফান্ডিং বডির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কলামিস্ট গবেষকদের হাতে আসে। এদেরই অনেকে নির্দেশনা মোতাবেক অপছন্দের সরকারকে বা দলকে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত করে তুলোধুনো করে কাগজে প্রতিবেদন লিখে থাকে। অতিপারঙ্গম কেউ কেউ আবার টাউস সাইজের বই বা মনোগ্রাফ প্রকাশ করে থাকে অতিরিক্ত কিছু পাওয়ার ধান্দায়। যেমন ১৯৯০ সালের নিকারাগুয়া নির্বাচনে আমেরিকা হস্তক্ষেপ করেছিল, ভাড়াটিয়া কলামিস্ট লেখকদের ব্যবহার করে। জার্মানির একাধিক দৈনিকে, দানিয়েল ওর্তিগার সান্দানিস্তা সরকারের কথিত দুর্নীতির খবর প্রচার করা হয়। যা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত প্রার্থী ভায়োলেটা চামোরো তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে জনমত তার দিকে ঘুরিয়ে নেন। পরাজয় হয় আমেরিকার অপছন্দের দানিয়েল ওর্তিগার মধ্য বামপন্থি সরকারের। চেগোসেøাভাকিয়ার নির্বাচনেও মিডিয়া ও কলাম লেখকদের ব্যবহার করে জনমতকে প্রভাবিত করে ফলাফল নিজেদের পছন্দের প্রার্থী ভ্যাকল্যাভ হ্যাভেলের অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আছে আমেরিকার বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে সিআইএর সাবেক পরিচালক লিওন পেনেট্টা একটু ঘুরিয়ে বলেছেন। তার ভাষায় ‘সিআইএ উড অকেশনালি একোয়ার মিডিয়া উইদিন এ কান্ট্রি দ্যাট কুড ভেরি ওয়েল বি ইউজড টু ডেলিভার মেসেজেজ।’ সবকিছুর উদ্দেশ্য একটাই, অপছন্দের সরকারের পুনর্র্নিবাচিত হওয়া যে কোনো মূল্যে ঠেকিয়ে দেয়া। এর বিপরীত চিত্রও আছে। সেটি আবার দুই রকম। যদি ক্ষমতাসীনরা পছন্দের হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে পরবর্তী নির্বাচনের আগের বছরগুলোতে দৃশ্যমানভাবে সহযোগিতা দিয়ে থাকে পশ্চিমা শক্তি। এ সহযোগিতা হতে পারে সরাসরি সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা, যা সংশ্লিষ্ট জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়ে তাদের পছন্দের সরকারের প্রতি জনসমর্থন বাড়ায় নতুন নির্বাচনের আগে আগে। কখনো বড় অঙ্কের খাদ্য সহায়তা ঘোষণা দিয়ে থাকে নতুন নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে। কখনো বিভিন্ন দাতা সংস্থাকে প্রভাবিত করে উন্নয়ন তহবিলে বড় অঙ্কের অর্থের জোগান দিয়ে থাকে। যেমন ক্লিনটন প্রশাসন আইএমএফ থেকে ১০.২ বিলিয়ন ডলারের তহবিলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন ইসরায়েলের সিমন প্যারেসকে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হতে। একইভাবে জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০৫ সালে সাদ্দাম-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনে, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছিলেন প্রায় একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তবে পরাশক্তিগুলোকে বেশি তৎপর দেখা যায় অপছন্দের সরকারের পুনর্র্নিবাচিত হওয়া ঠেকানোর কাজে। এক্ষেত্রে প্রায়ই ওভার্ট এবং কোভার্ট দুটি স্ট্রাটেজিই গ্রহণ করে থাকে একই সঙ্গে।
সমাজতাত্ত্বিক হার্বার্ট মার্কিউজ বলেছেন,বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের রুচি পুঁজিবাদী সমাজে একই রকম করে ফেলা হয়েছে। ভোগবাদী সমাজ নিজের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে মানুষকে যে অভ্যাসে বুঁদ করে রাখতে চায়; শুধু অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত মানুষই নয়; সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই তৈরি করা হয় সে অভ্যাস।
কাজের ফাঁকে কম বয়সী শ্রমিক মগ্ন হয়ে তাকিয়ে থাকে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের দিকে। ছায়ায় রিকশা রেখে কিছুক্ষণ জিড়িয়ে নেয়ার সময় রিকশাচালকের দৃষ্টিও থাকে মোবাইল ফোনের দিকে। বিশ^বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্মের সঙ্গে পরিচিত নয়। বই পড়ার প্রতি গভীর অনুরাগ তাদের তৈরি হয়নি। তাদের নেই ইতিহাস সম্পর্কে যথাযথ ধারণা। হাইস্পিড ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল চলচ্চিত্র নিয়ে উচ্ছ্বাস আছে সমাজে। অথচ মানুষের পাঠাভ্যাস, ইতিহাসবোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা যে দিন দিন কমছে,তা নিয়ে নেই উদ্বেগ আর আলোচনা ।
লেখক : এম এ কবীর, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি।
Leave a Reply