অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইল সম্প্রতি এ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এসব ঘটনার অন্যতম হচ্ছে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি। ইসরাইল সম্প্রতি আল আকসা মসজিদে হামলা চালানোর পর এ ঐক্য জোরদার হয়েছে এবং একাধিক ফ্রন্টে ইসরাইল বিরোধী সংঘাত ও যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সম্প্রতি স্বীকার করেছেন যে, প্রতিরোধ শক্তির পক্ষ থেকে তারা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং সেনা বাহিনীকে একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধ করাসহ আরো ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা সীমিত এলাকার মধ্যে লড়াইয়ের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি এবং আগামীতে যুদ্ধ হবে আরো ব্যাপকভিত্তিক। সম্প্রতি সিরিয়ার আকাশে ইসরাইলের একটি উন্নত মানের ড্রোন বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। ইসরাইলি দৈনিক ইয়াদিউত অহারনুত লিখেছে, সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আলিশা বিন কেইনুন জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি ড্রোন সিরিয়ার আকাশে ওড়ার সময় সেটি ভূপাতিত হয়। তিনি এও বলেন তবে ভূপাতিত ড্রোন থেকে তথ্য ফাঁসের কোনো আশঙ্কা নেই। এছাড়াও, ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর আরেকটি ড্রোন নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
যাইহোক, ধারণা করা হচ্ছে সিরিয়া অতীতের যে কোনো সময়ের চাইতে ইসরাইলি আগ্রাসন মোকাবেলায় অনেকটাই প্রস্তুত। প্রথমত, সিরিয়া ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও যুদ্ধের পরও এবং বহু ক্ষয়ক্ষতি ও হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির পরও ওই বিপদকালীন সময় কাটিয়ে উঠে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। এরই মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশটি ইরান ও রাশিয়ার সাহায্যে নিজের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করেছে। দ্বিতীয়ত, একসময় যেসব দেশ সিরিয়ার আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীকে সমর্থন দিত তারা এখন একে একে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করা শুরু করেছে এবং সিরিয়া সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে এগিয়ে আসছে।
ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ শক্তিগুলোর মধ্যে একমাত্র সিরিয়াই এতো দিন ধরে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সতর্ক অবস্থান ধরে রেখেছিল এবং সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়ায়নি। কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এখন সিরিয়া শক্ত অবস্থানে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে এতদিন যেসব আরব দেশ আমেরিকা ও ইসরাইলের সাথে হাত মিলিয়ে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ শক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে অবস্থান নিত তাদের সাথে প্রতিরোধ শক্তিগুলোর সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে যা ইসরাইলকে চিন্তিত করে তুলেছে।
এ ছাড়া, চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে। সিরিয়ার সাথে তিউনিসিয়া ও সৌদি আরবের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইয়েমেনেও যুদ্ধ বন্ধ হতে চলেছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এ ছাড়া ইসরাইল আরব দেশগুলোকে নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে যে জোট গঠনের স্বপ্ন দেখেছিল তাও ভেস্তে যাচ্ছে। এসব বিষয় ইসরাইলকে খুবই চিন্তিত করে তুলেছে কেননা এতে করে ইসরাইলের পতন আরো তরান্বিত হবে।