অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিকে ইনসাফ তথা ন্যায়বিচার আন্দোলনের প্রধান ইমরান খানকে আদালতের ভেতর থেকে গ্রেফতারের ঘটনায় এই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধান কয়েকটি শহরে ইমরানের সমর্থনে ব্যাপক গণ-বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে রাজধানী ইসলামাবাদে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
ইমরানের বিরুদ্ধে বার বার দুর্নীতি ও আইন-বিরোধী কাজে জড়িত হওয়ার বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছিল। এসব অভিযোগের মোকাবেলায় জামিনের কাজে বা আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিনি আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে একটি বিশেষ বাহিনী দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই অনেকেই মনে করছেন গ্রেফতারের জন্যই তাকে আদালতে উপস্থিত হতে বাধ্য করা হয়েছিল। ইমরানের দল পিটিআই তথা তেহরিকে ইনসাফ মনে করে তাদের প্রধান নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। ইমরান খান ও তার দল দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ও দল হয়ে ওঠায় আগামী নির্বাচনে ইমরানকে ও তার দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিতে চাচ্ছে না ক্ষমতাসীন জোট এবং পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষ।
স্বাধীনচেতা ও দেশপ্রেমিক ইমরান খান পাকিস্তানের শক্তিশালী বিভিন্ন মহলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন পাশ্চাত্যের আধিপত্যকামিতা ও শোষণের নাগপাশ থেকে মুক্ত হওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী। আর এ কারণেই পাশ্চাত্য ও পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক মহল তাকে চিরতরে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। এর আগে এক বা একাধিকবার তিনি হত্যা প্রচেষ্টার শিকার হয়েছে।
পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ধারা ও রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের মোকাবেলায় ইমরান খান বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠায় তার এবং তার দলের জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বাড়ছিল। জনমত জরিপেও দেখা গেছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ইমরানই বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তাই ভবিষ্যৎ নির্বাচনে অন্য দলগুলো তাদের ভরাডুবি ঠেকানোর জন্য ইমরান ও তার দলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগে সহায়তা দিচ্ছে পাকিস্তানের বিচার বিভাগ। ইমরান ও তার পক্ষে গণ-আন্দোলন বা গণ-বিক্ষোভ কতটা সক্রিয় হয়ে ওঠে তার ওপরই নির্ভর করছে পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সংকটের পরিণতি।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট ও নিরাপত্তার সংকটও জোরদার হওয়া ও না হওয়া নির্ভর করছে এই রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি হওয়া বা না হওয়ার ওপর।